একসময় ঘড়ি আর ক্যালকুলেটর মানেই ছিল ক্যাসিও
Published: 8th, November 2025 GMT
নব্বই বা আশির দশকের তরুণ-কিশোরদের কাছে ‘ক্যাসিও’ শব্দটি বেশ পরিচিত। নব্বইয়ের দশকে ক্যাসিও ছিল হাতের কবজি বা স্কুল ব্যাগের এক অপরিহার্য অংশ। ঘড়ি আর ক্যালকুলেটর মানেই ছিল ক্যাসিওর নাম। স্মার্টওয়াচ ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ভিড়ে ক্যাসিওর সেই জৌলুশ আর নেই। ইতিহাস বলে, জাপানের এই ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠান কেবল ঘড়ি বা ক্যালকুলেটরে সীমাবদ্ধ ছিল না।
ক্যাসিওর বেশ পুরোনো কাজ আছে। ১৯৪৬ সালে কাজুও কাসিওর হাত ধরে জাপানের টোকিওতে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু। প্রথম দিকে এটি ইলেক্ট্রনিকস পণ্যের মাধ্যমে শুরু করলেও ক্যাসিও তাদের দুটি প্রধান পণ্যের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করে। ১৯৫৭ সালে ক্যাসিও বিশ্বের প্রথম কমপ্যাক্ট ইলেকট্রনিক ক্যালকুলেটর ১৪ বাজারে আনে। এর আগের ক্যালকুলেটর ছিল যান্ত্রিক ও বিশাল আকারের। ক্যাসিও গণনার প্রক্রিয়াটিকে কেবল দ্রুতই করেনি, বরং এটিকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তোলে। নব্বইয়ের দশকে ক্যাসিওর সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ছিল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে এক অপরিহার্য সরঞ্জাম। এফএক্স–৮২ বা এফএক্স–৯৯১ সিরিজের মতো মডেল জটিল গাণিতিক সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য জনপ্রিয় ছিল। তখন নির্ভরযোগ্যতা ও সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে প্রভাবশালী ব্র্যান্ডে পরিণত হয় ক্যাসিও।
১৯৭৪ সালে ক্যাসিও তাদের প্রথম ডিজিটাল হাতঘড়ি ক্যাসিওট্রন বাজারে আনে। ঘড়িটি কেবল সময় দেখাত না, বরং ক্যালেন্ডারও প্রদর্শন করত। এটি ছিল জাপানিজ কোয়ার্টজ প্রযুক্তির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। ১৯৭৭ সালে ক্যাসিও এফ–১০০ নামের একটি রেট্রো-ফিউচারিস্টিক হাতঘড়ি বাজারে আনে। এই ঘড়ি ছিল বিশ্বের প্রথম হাতঘড়িগুলোর মধ্যে একটি, যা মূলত রেজিন দিয়ে তৈরি।
১৯৮৯ সালে ক্যাসিও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ হাতঘড়ি বাজারে আনে। এফ–৯১ ডব্লিউ বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রীত হাতঘড়ি ছিল একসময়। বার্ষিক উৎপাদন ৩০ লাখ ইউনিট। ক্যাসিওর এফ–৯১ ডব্লিউ মডেলের ঘড়ি সাশ্রয়ী মূল্যের পাশাপাশি সরলতা, স্থায়িত্ব ও ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতার জন্য বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ক্যাসিওর এফ-৯১ ডব্লিউ ঘড়ি.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানির জয়: নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসতে বলছেন ইসরায়েলি মন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে হামাসের (ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন) সমর্থক আখ্যা দিয়ে সেখানে বসবাসকারী ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির এক মন্ত্রী।
গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে বিপুল ভোটে হারিয়ে নতুন মেয়র হয়েছেন জোহরান মামদানি। পরদিন গতকাল বুধবার ইসরায়েলের কট্টর দক্ষিণপন্থী ওই মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও অভিবাসী পরিবারের সন্তান জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি আন্দোলনের পক্ষে কথা বলে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তিনি যেমন স্পষ্টভাবে ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা জানিয়েছেন, তেমনি নিজে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হওয়া নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।
যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের (জোহরান মামদানি) হাতে।আমিখাই চিকলি, ইসরায়েলের মন্ত্রীইসরায়েলের প্রবাসী ও ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের হাতে।’
এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিউইয়র্ক কখনো আর আগের মতো থাকবে না, বিশেষ করে ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য। আমি নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নিজেদের নতুন বসতি গড়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আমন্ত্রণ জানাই।’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেইসরায়েলকে নিয়ে কথা বলার সময় জোহরান মামদানি দেশটিতে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা’ চলছে বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি ইসরায়েলে গাজা যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছেন। এসব কারণে ইহুদি সম্প্রদায়ের একাংশের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। যদিও নিউইয়র্কে ইহুদিদের একাংশ তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন।
জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিজয় ভাষণের মঞ্চে স্ত্রী রামা দুয়াজিকে নিয়ে জোহরান মামদানি। ৫ নভেম্বর ২০২৫