ধানক্ষেতে দাঁড়িয়ে ক্রিকেটের ভঙ্গিতে হাতে ‘রিভিউ’ ইঙ্গিত দিয়ে অভিনব প্রতিবাদে আলোচনায় এসেছেন ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও ফেনী-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আলাল উদ্দিন আলাল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এই ছবি ঘিরে জেলাজুড়ে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে ধানক্ষেতে গিয়ে ‘রিভিউ’র ভঙ্গিতে ছবি তুলে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেন আলাল। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘নো ক্যাপশন।’ এরপর থেকেই স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকে তার সঙ্গে সংহতি জানালেও কেউ কেউ দলীয় সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আলাল উদ্দিন আলাল আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু গত ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় তার নাম ছিল না। এরপরই তিনি মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে প্রতীকী এই ‘রিভিউ আবেদন’ জানান।

এ বিষয়ে আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, “অহিংসভাবে দলের কাছে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর উদ্দেশ্যেই এটি করেছি। প্রার্থী তালিকা এখনও চূড়ান্ত নয়, তাই আমরা রিভিউ চেয়েছি। এ প্রজন্মের প্রতিবাদের ভাষার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই এটি করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “একসময় ফেনীকে ‘লেবানন’ বা ‘মৃত্যুপুরী’ বলা হতো। এখন এখানকার প্রতিবাদের ধরনও বদলে গেছে সেই পরিবর্তনটাও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।”

এদিকে বিএনপির মনোনয়নকে ঘিরে ফেনী জেলা ইউনিটে দেখা দিয়েছে তীব্র বিরোধ। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের র‍্যালি ও আলোচনা সভায় এই বিভাজন প্রকাশ্যে আসে। 

প্রার্থী অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন র‍্যালিতে অংশ নিলে আলাল উদ্দিনসহ জেলা বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা সরে যান। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে এবং নির্বাচনী মাঠে অনিশ্চয়তার ছায়া ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

ঐক্যের বার্তা নিয়ে শুক্রবার রাতে শহরের রামপুরে আলালের বাসায় যান অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন। তবে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পরও আলালের সাক্ষাৎ না পেয়ে ফিরে যান তিনি।

দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, ফেনী-২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব, অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক ও আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারীসহ কয়েকজন নেতা। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেন।

এর আগে গত ৩ নভেম্বর বিকেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফেনীর তিনটি আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। এতে ফেনী-১ (ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া) বেগম খালেদা জিয়া, ফেনী-২ (সদর) অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, ফেনী-৩ (দাগনভূঁঞা-সোনাগাজী) আবদুল আউয়াল মিন্টু মনোনয়ন পান।

ঢাকা/সাহব উদ্দিন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ন আল ল

এছাড়াও পড়ুন:

নাটোর–১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে রেললাইনে শুয়ে পড়লেন বঞ্চিত নেতার সমর্থকেরা

নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে রেললাইনে শুয়ে বিক্ষোভ করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত এক নেতার কর্মী–সমর্থকেরা। বুধবার সন্ধ্যায় নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

বিএনপি কর্মীরা জানান, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নাটোর-১ আসনে প্রয়াত বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান পটলের মেয়ে ফারজানা শারমিন পুতুলকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এতে তাঁর সহোদর ও মনোনয়নপ্রত্যাশী চিকিৎসক ইয়াসির আরাফাতের (রাজন) সমর্থকেরা সোমবার তাৎক্ষণিক ব্যাপক বিক্ষোভ করেন।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলামের (টিপু) কয়েক শ সমর্থক আজিমনগর রেলস্টেশনে জড়ো হন। তাঁরা রেললাইনে শুয়ে পড়ে প্রায় এক ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

বিকেল চারটার দিকে তাইফুল ইসলামের কর্মী–সমর্থকেরা গোপালপুরে লালপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি গোপালপুর বাজার হয়ে আজিমনগর রেলস্টেশন–সংলগ্ন গোপালপুর রেলগেটে এলাকায় যায়।

রেলপথ অবরোধের সময় বক্তব্য দেন তাইফুল ইসলামের সমর্থক গোপালপুর পৌর বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম (রানা), উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুজ্জামান সরকার, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমানসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অন্য নেতারা। বক্তারা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের নেতারা তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে ফারজানা শারমিনকে মনোনয়ন দিয়ে ভুল করেছেন। তাই তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে তাইফুল ইসলামকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।

বিক্ষোভ–মিছিল প্রসঙ্গে তাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি ছিলাম। দীর্ঘদিন জেল–জুলুম সহ্য করে বিএনপি করে আসছি। দলের কেন্দ্রীয় দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছি। স্বাভাবিক কারণেই নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা আমাকে নাটোর-১–এর প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। হয়তো এ কারণে তাঁরা মনোনয়ন বদল চাচ্ছেন।’

মনোনয়ন পাওয়ার পর ফারজানা শারমিন বলেন, তিনি ছাড়াও অন্য যাঁরা মনোনয়ন চাচ্ছেন, তাঁরা সবাই যোগ্য ব্যক্তি। কিন্তু এক আসন থেকে তো একজনকেই দল মনোনয়ন দেবে। অন্যদের উচিত দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তাঁকে (ফারজানা শারমিন) সহযোগিতা করা। তিনি আশা করেন, বিক্ষোভকারীরাও একসময় তাঁর পাশে থাকবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হেলিকপ্টারে গণসংযোগে এলেন ‘মনোনয়নবঞ্চিত’ বিএনপি নেতা
  • নাটোর–১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তন চেয়ে রেললাইনে শুয়ে পড়লেন বঞ্চিত নেতার সমর্থকেরা
  • মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান
  • চাঁদপুর-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে তিন দিন ধরে বিক্ষোভ