গ্রেপ্তার হওয়ার দুইমাস পর আদালত সাজা দিয়েছিলেন ১৫ দিন। অর্থাৎ রায় ঘোষণার দেড়মাস আগেই সাজা খাটা শেষ হয়েছিল ভারতীয় নাগরিক আর সালাইন হোসেনের। তবে, আইনি জটিলতায় বাড়ি ফেরা হচ্ছিল না তার। কারাগারে ছিলেন আরো প্রায় সাড়ে ৪ মাস। অবশেষে রবিবার (১১ মে) আর সালাইন বাড়ি ফিরলেন বাংলাদেশি সংবাদিকের সহযোগিতায়। 

ফিরে যাওয়া ভারতীয় নাগরিক আর সালাইনের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে। তার বাবার নাম মৃত হামিদ হোসাইন। 

আর সালাইন ছিলেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। আজ রবিবার তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমান উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

অনেক মিডিয়া আওয়ামী লীগের টুলস হিসেবে কাজ করেছে: শফিকুল আলম

ভারতে ‘দ্য ওয়্যার’ নিউজ সাইট বন্ধ

আর সালাইনের বিষয়টি গত ২২ ফেব্রুয়ারি জানতে পারেন ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটকে থাকা বিদেশি নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরাতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। আর সালাইনকে ফেরাতেও ঢাকায় বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করেন তিনি। রবিবার আর সালাইনের প্রত্যার্পণের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে ছুটে আসেন শামসুল হুদা। কারাগারের সামনে থেকে আর সালাইনকে নিয়ে কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যান সোনামসজিদ স্থলবন্দরেও। 

ভারত থেকে সেখানে এসেছিলেন আর সালাইনের ভাই ফয়সাল হোসেন। তিনি ভাইকে বুঝে নিয়ে বাড়ি রওনা দেন। আর সোনামসজিদ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন শামসুল হুদা।

ফেরার পথে মোবাইলে শামসুল হুদা জানান, গত বছরের শেষের দিকে দার্জিলিং থেকে কাজের খোঁজে ব্যাঙ্গালোর যান আর সালাইন। সেখানে কিছুদিন শেফ হিসেবে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। কিছুদিন পর ভালো কাজের আশায় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় যান তিনি। সেখানে কিছু দিন কাজ করে বন্ধুর পরামর্শে বাংলাদেশে রেস্তোরাঁয় কাজ করার জন্য অবৈধভাবেই এই দেশে প্রবেশ করেন তিনি। তারপর প্রায় ছয় মাস ধরে কাজ করছিলেন ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয়। 

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অস্থির সময় তিনি আতঙ্কিত হয়ে দেশে ফেরার জন্য রাজশাহী সীমান্তের দিকে রওনা হন। সে সময় সীমান্তে কড়াকড়ি থাকায় তিনি নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

শামসুল হুদা জানান, মেয়াদি সাজা শেষ হলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় তার (আর সালাইন) ভারতে ফেরাটা আটকে গিয়েছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানতে পারেন, আর সালাইনের ভাই ফয়সাল হোসেন রাজশাহীতে অবস্থান করছেন ভাইয়ের মামলা নিষ্পত্তির জন্য। ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জেনে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাবাসন বিষয়ক চিঠি ও ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে গত ২১ এপ্রিল ছাড়পত্র পাওয়া যায়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে আর সালাইনকে তার ভাইয়ের কাছে তুলে দিয়ে এলেন। তিনি এখন খুশিমনে ঢাকায় ফিরে যাচ্ছেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমান উল্লাহ জানান, গত বছরের ২৯ জুলাই আর সালাইন রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ তার নামে একটি মামলা করে পরদিন কারাগারে পাঠায়। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর আদালত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। 

তিনি আরো জানান, বন্দির হাজতবাস বিবেচনায় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বরেই তার সাজাভোগের মেয়াদ শেষ হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশনের অনুমোদনের পর রবিবার তাকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। কারা কর্মকর্তা, বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে।

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গত বছর র র জন য রব ব র ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসে ৯ মাস কারাগারে কাটিয়ে ভারতীয় এক যুবকের দেশে ফেরা

অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে গ্রেপ্তার হওয়ার দুই মাস পর আদালত ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। অর্থাৎ রায় ঘোষণার দেড় মাস আগেই সাজা খাটা শেষ হয়েছিল ভারতীয় নাগরিক আরসালান হোসেনের। কিন্তু আইনি জটিলতায় বাড়ি ফেরা হচ্ছিল না তাঁর। সব মিলিয়ে প্রায় ৯ মাস কারাগারে কাটিয়ে অবশেষে আজ রোববার আরসালান বাড়ি ফিরলেন।

যুবক আরসালানের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে। তাঁর বাবা মৃত হামিদ হোসাইন। তিনি ছিলেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে। আজ তাঁকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফেরানো হয়। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আমান উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলার আমান উল্লাহ জানান, গত বছরের ২৯ জুলাই আরসালান রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পুলিশ তাঁর নামে একটি মামলা করে পরদিন কারাগারে পাঠায়। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর আদালত অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। বন্দীর হাজতবাস বিবেচনায় গত বছরের ১৪ ডিসেম্বরেই তাঁর সাজা ভোগের মেয়াদ শেষ হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ভারতীয় হাইকমিশনের অনুমোদনের পর আজ তাঁকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। কারা কর্মকর্তা, বিজি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন পুলিশ ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাঁকে হস্তান্তর করে।

আরসালান হোসেনের বিষয়টি গত ২২ ফেব্রুয়ারি জানতে পারেন ঢাকার সাংবাদিক শামসুল হুদা। তিনি দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটকে থাকা বিদেশি নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরাতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে যাচ্ছেন। আরসালানকে ফেরাতেও ঢাকায় বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করেন তিনি। প্রত্যর্পণের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে ঢাকা থেকে তিনি রাজশাহী ছুটে আসেন। আজ কারাগারের সামনে থেকে আরসালানকে নিয়ে কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যান সোনামসজিদ স্থলবন্দরেও। ভারত থেকে সেখানে এসেছিলেন আরসালানের ভাই ফয়সাল হোসেন। তিনি ভাইকে বুঝে নিয়ে বাড়ি রওনা দেন। আর সোনামসজিদ থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন শামসুল হুদা।

ফেরার পথে মুঠোফোনে শামসুল হুদা বলেন, গত বছরের শেষের দিকে দার্জিলিং থেকে কাজের খোঁজে বেঙ্গালুরু যান আরসালান। সেখানে কিছুদিন শেফ (বাবুর্চি) হিসেবে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। কিছুদিন পর ভালো কাজের আশায় পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় আসেন। সেখানে কিছুদিন কাজ করে বন্ধুর পরামর্শে রেস্তোরাঁয় কাজ করার উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। তারপর প্রায় ছয় মাস ধরে কাজ করছিলেন ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয়। কিন্তু জুলাই–আগস্টের আন্দোলনের অস্থির সময় তিনি আতঙ্কিত হয়ে দেশে ফেরার উদ্দেশ্যে রাজশাহী সীমান্তের দিকে রওনা হন। সে সময় সীমান্তে কড়াকড়ি থাকার কারণে তিনি নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

শামসুল হুদা জানান, সাজা শেষ হলেও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় আরসালানের ভারতে ফেরাটা আটকে গিয়েছিল। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে জানতে পারেন, আরসালানের ভাই ফয়সাল হোসেন রাজশাহীতে অবস্থান করছেন ভাইয়ের মামলা নিষ্পত্তির জন্য। ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি জেনে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাবাসনবিষয়ক চিঠি ও ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন। অবশেষে গত ২১ এপ্রিল ছাড়পত্র পাওয়া যায়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে তাঁকে তাঁর ভাইয়ের কাছে তুলে দিয়ে এলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অবৈধভাবে বাংলাদেশে এসে ৯ মাস কারাগারে কাটিয়ে ভারতীয় এক যুবকের দেশে ফেরা