শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ২৪ বছর পূর্তি উদযাপন
Published: 13th, May 2025 GMT
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি ২৪ বছর পূর্তি উদযাপন করলো।
দুই যুগ পূর্তি উপলক্ষে সোমবার (১২ মে) করপোরেট প্রধান কার্যালয়সহ ব্যাংকের সব শাখা ও উপ-শাখায় পবিত্র কোরআন খতম এবং দো’আ মাহ্ফিলের আয়োজন করা হয়।
উক্ত দো’আ মাহ্ফিলে দেশ ও জাতির বৃহৎ কল্যাণে বিশেষ দো’আ ও মোনাজাত করা হয়। পরবর্তীতে করপোরেট প্রধান কার্যালয়ের পর্ষদ সভা কক্ষে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কেটে ২৪ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ব্যাংকের পরিচালকবৃন্দ মো.
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ্ উদ্দীন আহমেদ দো’আ মাহ্ফিল অনুষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং ব্যাংকের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে, ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমতিয়াজ ইউ আহমেদ, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকবৃন্দ এম. এম. সাইফুল ইসলাম ও মোস্তফা হোসেন, ব্যাংকের এসইভিপি ও কোম্পানি সচিব মো. আবুল বাশার, ব্যাংকের সিএফও মো. জাফর ছাদেক, স্পেশাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান তরিকুল ইসলাম এবং করপোরেট বিভাগের প্রধান মো আমজাদ হোসেনসহ ব্যাংকের করপোরেট প্রধান কার্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের প্রধান ও কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্যাংকের জেএভিপি ও জনসংযোগ বিভাগের ইনচার্জ কে. এম. হারুনুর রশীদ।
ঢাকা/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম করপ র ট
এছাড়াও পড়ুন:
একদিকে আলোচনা, অন্যদিকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল
ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘাত বন্ধের জন্য একদিকে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা, অন্যদিকে উপত্যকাটিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় নির্বিচার হামলা শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির দিন গতকাল মঙ্গলবার অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
মিসরের পর্যটন শহর শারম আল–শেখে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিদের আলোচনা শুরু হয়। গতকাল মঙ্গলবারও ওই আলোচনা হওয়ার কথা। সোমবার আলোচনার শুরুটা ‘ইতিবাচক’ হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস। যদিও সংগঠনটির এক নেতা বলেছেন, এবারও আলোচনায় ‘বাধা দেওয়ার’ চেষ্টা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৬৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উপত্যকাটিতে ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। এ নৃশংসতার মধ্যে গাজায় সংঘাত বন্ধে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০ দফা ‘শান্তি’ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই পরিকল্পনাকে ইসরায়েলের প্রতি পক্ষপাতমূলক বলছেন অনেক বিশ্লেষক।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের ওই পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে পরিকল্পনার কিছু শর্তের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে হামাসের। এসব নিয়ে আলোচনার জন্য গত সোমবার থেকে শারম আল–শেখে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে। আজ বুধবার এ আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসিম আল থানির। হামলার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জের প্রথম দিনের আলোচনা নিয়ে আল-জাজিরার সঙ্গে কথা বলেছে হামাস-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। তাদের ভাষ্যমতে, সোমবার দুই পক্ষের আলোচনা ‘ইতিবাচক’ হয়েছে। এই আলোচনা কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, তার একটি রূপরেখাও তৈরি করা হয়েছে এদিন। এ ছাড়া ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জ বলে মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে হামাস।
মিসরের আলোচনার বিষয়ে গতকাল হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন— গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর ইসরায়েল আবার হামলা শুরু করবে না, এ নিশ্চয়তা তিনি কীভাবে দেবেন? জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের হাতে অনেক ক্ষমতা রয়েছে। আর সবাই যেন চুক্তি মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভাব্য সবকিছু করব।’
তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী সংঘাত শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় পদক্ষেপ ছাড়া বৃহৎ পরিসরে রাজনৈতিক সমাধান আসবে না বলে মনে করেন ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ–এর কলাম লেখক গিদেয়ন লেভি। তিনি বলেন, সংঘাত বন্ধের আশা রয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যথেষ্ট দৃঢ়তা না দেখালে এর বেশি কিছু পাওয়া যাবে না। আর তিনি আদৌ দৃঢ়তা দেখাবেন কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিষয়ে আগ্রহী ট্রাম্প।’
আলোচনা নস্যাৎ করার চেষ্টা নেতানিয়াহুরট্রাম্পের ২০ দফার মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে বাকি জীবিত ও মৃত জিম্মিদের ইসরায়েলে ফেরত পাঠানো, উপত্যকাটি থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, হামাসকে অস্ত্রমুক্ত করা এবং সংঘাত বন্ধের পর গাজায় একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মতো নানা বিষয়। এর মধ্যে গাজায় সংঘাত বন্ধ এবং জিম্মিদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে রাজি হামাস। তবে অন্তর্বর্তী সরকার প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের আপত্তি রয়েছে।
এরই মধ্যে গতকাল হামাসের মুখপাত্র ফাউজি বারহুম বলেছেন, তাঁরা এমন একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চান, যা ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিলবে। এ লক্ষ্যে ‘সব বাধা’ দূর করার চেষ্টা করছেন আলোচনায় যোগ দেওয়া হামাসের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বারহুম বলেন, আগের মতো এবারও আলোচনায় ‘বাধা দেওয়ার এবং নস্যাৎ করার’ চেষ্টা করছেন নেতানিয়াহু।
একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য নিজেদের মূল দাবিগুলোও তুলে ধরেন হামাস নেতা ফাউজি বারহুম। দাবিগুলো হলো গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সব ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, কোনো বাধা ছাড়া গাজায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়া, বাস্তুচ্যুতদের নিজ নিজ ঘরে ফিরতে দেওয়া, ফিলিস্তিনিদের তত্ত্বাবধায়নে গাজা পুনর্গঠন শুরু করা এবং ন্যায্য বন্দিবিনিময় চুক্তি।
দুই বছর ধরে নির্বিচার হামলা২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল এ নৃশংসতার দুই বছর পূরণ হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯ জন শিশু। একই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি গাজা অবরোধ করে সেখানে খাবার ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো জরুরি পণ্য প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে দুই বছরে অনাহারে উপত্যকাটিতে ৪৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫৪টিই শিশু। খাবার না পেয়ে তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে গাজার পাঁচ বছরের কম বয়সী ৫১ হাজার ১০০ জনের বেশি শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজার ৩৮টি হাসপাতালের ২৫টিই ধ্বংস করেছে ইসরায়েল। ৯২ শতাংশ আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হয়েছে।
ইসরায়েল গাজায় জাতিগত নিধন চালাচ্ছে উল্লেখ করে গত মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন। গত দুই বছরে দুর্বিষহ সময়ের কথা স্মরণ করে গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ দিব রয়টার্সকে বলেন, ‘দুই বছর ধরে আমরা ভয়, আতঙ্ক, ধ্বংসযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার মধ্যে আছি।’