হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগমকে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেছে পুলিশ।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ মঙ্গলবার এই রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হবে। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা সাগর হত্যা মামলায় মমতাজকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেছে পুলিশ।

এর আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) গতকাল সোমবার রাতে মমতাজকে গ্রেপ্তার করে।

ডিএমপির এক বার্তায় বলা হয়, রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে মমতাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিএমপির ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তাঁকে গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।

লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী মমতাজ বেগম একাধিকবার মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: মমত জ

এছাড়াও পড়ুন:

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো সংস্কার নয়: খসরু

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, “আমরা কাউকে মালিকানা দেইনি, যারা আগামীর বাংলাদেশের সংস্কার করবে।সংস্কার হবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনের মাধ্যমে। এর বাইরে সংস্কারের কোনো সুযোগ নেই।”

মঙ্গলবার (১৩ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী’ উপলক্ষে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদ  আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দাকোপ ও চালনা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত

টাঙ্গাইলে বিএনপির একাংশের বিক্ষোভ, উত্তেজনা

আমীর খসরু বলেন, “ফ্যাসিস্টের পলায়নের পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন আসছে, সেটা কী আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব? ধারণ করতে পারব? এই বিষয়টা আজকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের যদি বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হয়, তার বাহক হচ্ছে-একটি নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনতে হবে। এটার কোনো দ্বিতীয় অল্টারনেটিভ নেই।”

তিনি বলেন, “এখন সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে কাজগুলো শুরু করা দরকার, সে কাজগুলো শুরু হতেই দেখতে পারছি না। আমরা সেই কাজের আশেপাশে নাই কিন্তু। বিগত দিনে আমরা যেগুলো দেখে আসছি, মনে হচ্ছে সেগুলো একটা ভিন্ন রূপে আমাদের কাছে চালু হয়ে গেছে। এখানে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। আমরা ৩১ দফা সংস্কার দিয়েছি। এর আগে, বিএনপি ২৭ দফা সংস্কার দিয়েছে। তার সাত বছর আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ এর মাধ্যমে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এখন যারা সংস্কারের কথা বলছে, এদের কারো চেহারা আমরা দেখি নাই। আর এদের অনেকে রাস্তায়ও ছিল না। এখন যারা বড় বড় কথা বলছে, এর বেশিরভাগ লোকের চেহারা আমরা দেখি নাই আন্দোলনের সময়। এদের মধ্যে কারো কারো চেহারা উঁকিঝুকি মেরেছে। যখন শেখ হাসিনার ক্ষমতার চাপ তাদের ওপর গেছে, তারা গর্তে ঢুকে গেছে আর বের হয় নাই। এখন তারা গর্তে থেকে বের হয়ে আমাদের সংস্কারের তালিম দিচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা পরিস্কারভাবে বলেছি, যে সমস্ত সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য হবে, সেগুলোর জন্য আমরা প্রস্তুত। দেরি কেন? আমরা কেন জানতে পারছি না, কোথায় ঐকমত্য হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল প্রস্তাব দিয়ে বসে আছে। আমরা তো অপেক্ষা করছি, ঐকমত্য কোথায় হবে। তারাও বলছে, ঐকমত্য করতে হবে আমরাও বলছি ঐকমত্যের পরিপ্রেক্ষিতে হবে। তাহলে কোথায় ঐকমত্যটা, কোথায় আমরা জানতে পারছি না কেন?”

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “কেউ যদি মনে করেন, ওই শেখ হাসিনার মালিকানা এখন অন্য কারো হাতে গেছে, তারা দেশের সিদ্ধান্ত নেবে, জনগণ কী চায়, না চায় তার কোনো তোয়াক্কা করবে না; সেই মালিকানা কাউকে দেয়া হয় নাই। বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। তারা সিদ্ধান্ত নিবে, আগামী দিনে কী সংস্কার হবে। সংসদে আলোচনা হবে, বাইরেও আলোচনা হবে।”

মানবিক করিডর নিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন,“এই যে একটা আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি, বাংলাদেশকে নিয়ে একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে-এটা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন না? মাননিক করিডোরের অর্থটা কি? এটা কার সাথে আলাপ হয়েছে? একটা অনির্বাচিত সরকার কথা বলে যাচ্ছে,তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো রাজনীতিবিদ তো জানেন না, সিভিল সোসাইটির কেউ জানে না। এটা কার অ্যাজেন্ডা? এর পেছনে কী? বাংলাদেশকে কি আমরা আবার একটা গাধায় পরিণত করতে চাই? আবার একটি যুদ্ধক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ঠেলে নিয়ে যেতে চাচ্ছি? কী স্বার্থে, কার স্বার্থে এই প্রশ্নগুলো তো সামনে চলে আসবে।”

আমীর খসরু বলেন, “শেখ হাসিনা বলত, আমি তো বাংলাদেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছি, আপাতত নির্বাচন না হলেও চলবে। মানবাধিকার কিছু না। তো এরকম কিছু কিছু কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি ইদানিং। এখানে অনেক কিছু হচ্ছে। আমি বলছি, কারো চেহারা দেখে এখানে কেউ বিনিয়োগ করবে না।বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীরাও করবে না, বিদেশিরাও করবে না। নির্বাচিত সরকার ব্যতীত অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের যে আগামীদিনের অর্থনৈতিক ঘুরে দাঁড়ানোর যে বড় বিষয়টা আছে, সেটা সম্ভব হবে না।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার সংসদ ব্যতিত বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হবে না। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয় নাই। আমরা অপেক্ষা করছি, নির্বাচনের পরে শুরু হবে।”

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ