প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেবল ক্যামেরার চোখে নয়, এবার নিরাপত্তা দিতে যোগ হবে আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।

প্রথম ধাপে বসানো হবে ৬২৪টি ক্যামেরা।এর মধ্যে আছে ৪৩টি ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা–মুখ শনাক্তে পারদর্শী।২০টি বুলেট ক্যামেরা–দূরপাল্লার নজরদারিতে ব্যবহার।৪টি পিটিজেড (PTZ) ক্যামেরা–ঘুরে ঘুরে পূর্ণাঙ্গ চিত্র ধারণে দক্ষ ৭টি ড্রন ক্যামেরা।

আগুন ও অব্যবস্থাপনার আলোড়ন
২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে লাগা আগুন ছিল গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে চেতনায় নাড়া দেওয়া একটি ঘটনা। তদন্তে উঠে আসে-অধিকাংশ ক্যামেরা কাজ করছিল না, ব্যাগেজ স্ক্যানার ছিল অকেজো।

আরো পড়ুন:

নয়নের পরিবারকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘিরে উদ্বেগ আর ‘সন্দেহ’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য দ্রুত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ভবনের প্রতিটি প্রবেশমুখ, সীমানা ও গুরুত্বপূর্ণ করিডোরে।

প্রযুক্তিবিদদের কথা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড.

সাইয়েদ মাহমুদ উল্লা বলেন, “বর্তমান বিশ্বের সেরা প্রযুক্তি ইনফ্রারেড সেন্সর যুক্ত ক্যামেরা। অন্ধকারে যেমন কাজ করে, তেমনি মানুষের শরীরের তাপমাত্রা শনাক্ত করতে পারে। এমনকি ছোট প্রাণীও ধরা পড়ে এই ক্যামেরায়। এসব প্রযুক্তি ভালোভাবে ইনস্টল ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে অন্তত ৮ থেকে ১০ বছর কার্যকর থাকে।”

পুলিশের অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন
সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, “প্রশাসনিক সচেতনতার অভাব আমাদের নিরাপত্তাকে দুর্বল করে রেখেছে। সচিবালয়ের মতো স্থানে এমন দুর্বলতা অনভিপ্রেত। নিরাপত্তা কেবল যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি একটি কৌশলগত সংস্কৃতিও। পরিকল্পনায় নজরদারির বিষয়টি যতটা গুরুত্ব পায়, বাস্তবায়নে তা পায় না। এটাই বড় দুর্বলতা।”

বাজেট 
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ পেলে ক্যামেরা কেনা শুরু হবে। প্রকল্পটি ‘সচিবালয় নিরাপত্তা আধুনিকীকরণ’ নামে কার্যক্রম শুরু করবে।”

তিনি বলেন, “প্রকল্পে ভবিষ্যতে বায়োমেট্রিক এক্সেস কন্ট্রোল, ভিজিটর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ফায়ার অ্যালার্ম ইন্টিগ্রেশন এবং স্বয়ংক্রিয় প্রবেশগেট সিস্টেম সংযুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।”

প্রযুক্তির ছায়ায় নিরাপত্তার ছাদ
সম্প্রতি সরকার সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা দেশে সরকারি ভবন পর্যায়ে নজরদারির ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্যামেরাগুলোর বিশেষত্ব হলো-এগুলো শুধুমাত্র ভিডিও ধারণ করে না, বরং চেহারা শনাক্ত, গাড়ির নম্বর চিহ্নিত এবং সন্দেহজনক আচরণ বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।

একটি অজানা মুখ যদি সীমান্ত অতিক্রম করে সচিবালয়ে প্রবেশ করে বা অনুমোদনহীন গাড়ি গেট পেরোতে চায়, সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং রুমে অ্যালার্ম বেজে উঠবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সচিবালয়ের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করে প্রযুক্তির প্রয়োগ হবে। গাফিলতির সুযোগ আর থাকবে না।”

সচিবালয়ে দায়িত্বরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, “সচিবালয়ে প্রযুক্তির নতুন যাত্রা কেবল একটি প্রকল্প নয় বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের সূচনা। যেখানে নিরাপত্তা মানে কেবল প্রহরী নয় বরং তথ্য, বিশ্লেষণ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সমন্বয়।একদিকে বিদেশি প্রযুক্তি, অন্যদিকে প্রশাসনিক সদিচ্ছা-দুইয়ের মিলনে যদি বাস্তবায়ন হয় পরিকল্পনা, তবে এ উদ্যোগ হতে পারে গোটা দেশের সরকারি ভবনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি টেমপ্লেট।”

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র ব যবস থ নজরদ র ত করত

এছাড়াও পড়ুন:

১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে শুটিং ও অসুস্থ বাবা, প্রশংসা পাচ্ছে সেই নাটক

নাটকের নাম ‘মাটির মেয়ে’। নামের মাঝোই মাটির ঘ্রাণ রয়েছে যেনো। রয়েছে আবহমান বাংলার চিরায়ত গল্পের প্রতিচ্ছবি। যে নাটকে গ্রামের সহজ সরল একজন মেয়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে। যাকে খাঁচায় বন্দি করা যায়, যাকে অত্যাচার করা যায়। এতোটাই সরল সে। মূলত কঠিন এই পৃথিবীতে একজন নারীর সহজ-সরল নারীর পরিণতির বিষয়টিই তুলে ধরা হয়েছে। 

নাটকটি নির্মাণ করেছেন  নির্মাতা আর্থিক সজীব। এতে মূল ভুমিকায় অভিনয় করেছেন শায়লা সাথী।

অভিনেত্রীর ভাষ্য, চরিত্রটিতে অভিনয়ের দারুণ সুযোগ ছিল। ১০৩ডিগ্রী জ্বর ও বাবার অসুস্থতা মাথায় নিয়ে আমি নাটকটির শুটিং করেছি।  চেষ্টা করেছি বিপদে পড়া মেয়ের বাস্তবতা ফিল করতে।  চোখের ভাষায়, হাঁটাচলায় সেই অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে তুলতে। দর্শক যদি একটু থেমে চরিত্রটার কষ্টটুকু উপলব্ধি করেন-তাহলেই আমার পরিশ্রম সার্থক।’

নাটকে শায়লা সাথীর পথচলা বেশ ক’বছরের। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। অভিনয়ের ছলাকলা শিখেই তাই এ অঙ্গনে পা রাখছেন। যার প্রমাণ নাটকটিতেও পাওয়া গেল। 

প্রচারের পর নাটক গ্রহণ করেছে দর্শক। প্রিয়ন্তি নামের একটি ইউটিউবে নাটকে প্রচারের দুই দিনেরম মাথায় প্রায় তিন মিলিয়ন ভিউ হয়েছে।  ক্লাসিক ফ্রেমিং দিয়ে, আবেগ ও আবহ সংগীতের সংমিশ্রণের এই নাটকের মন্তব্যের ঘরে সব মন্তব্যই পজেটিভ।  

নির্মাতা  বলেন, “এই নাটকটিতে আমি একজন সহজ সরল মাটির মেয়ের জীবনের কষ্ট গুলো তুলে ধরেছি, নাটকটিতে একাধিক মনটাজের ব্যবহার করা হয়েছে , এটি একটি অফ-ট্রাকের সিনেমাটিক গল্প ।এই গল্পে শায়লা সাথী দারুন অভিনয় করেছে। আমার বিশ্বাস দর্শকদের অন্যরকম এক আবেগে ভাসাবে নাটকটি। 

শায়লা সাথী ছাড়াও নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন, ইফতেখার দিনার, তামিম, তুহিন চৌধুরী, সাবেরি আলম, সূচনা শিকদারসহ অনেকেই। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রিকশাচালকদের জন্য প্রশিক্ষক তৈরিতে ব্যয় ৫৪ লাখ টাকা
  • মাদক পাচার ঠেকাতে বন্দরে নেই নজরদারি
  • হামজাকে দেখেই তাঁদের বাংলাদেশি হওয়ার স্বপ্ন জাগে
  • মাগুরায় মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, জেলের মরদেহ উদ্ধার
  • পুরো প্রজন্ম ধ্বংস করতে একজন মাদকাসক্তই যথেষ্ট : মাও. ফেরদাউস 
  • করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু এক, আক্রান্ত ১০
  • ঘরে অসুস্থ বাবা আর ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে শুটিং করা নাটকটি প্রশংসা পাচ্ছে: শায়লা সাথী
  • শৈশবের স্মৃতি হাতড়াতে রাজশাহীতে কবিপুত্রের একদিন
  • গাজীপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে দুজনের মৃত্যু
  • ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে শুটিং ও অসুস্থ বাবা, প্রশংসা পাচ্ছে সেই নাটক