সচিবালয়ের নিরাপত্তায় বসছে এআই নজরদারি
Published: 13th, May 2025 GMT
প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেবল ক্যামেরার চোখে নয়, এবার নিরাপত্তা দিতে যোগ হবে আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)।
প্রথম ধাপে বসানো হবে ৬২৪টি ক্যামেরা।এর মধ্যে আছে ৪৩টি ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা–মুখ শনাক্তে পারদর্শী।২০টি বুলেট ক্যামেরা–দূরপাল্লার নজরদারিতে ব্যবহার।৪টি পিটিজেড (PTZ) ক্যামেরা–ঘুরে ঘুরে পূর্ণাঙ্গ চিত্র ধারণে দক্ষ ৭টি ড্রন ক্যামেরা।
আগুন ও অব্যবস্থাপনার আলোড়ন
২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে লাগা আগুন ছিল গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে চেতনায় নাড়া দেওয়া একটি ঘটনা। তদন্তে উঠে আসে-অধিকাংশ ক্যামেরা কাজ করছিল না, ব্যাগেজ স্ক্যানার ছিল অকেজো।
আরো পড়ুন:
নয়নের পরিবারকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তা
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘিরে উদ্বেগ আর ‘সন্দেহ’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠানো প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়, নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য দ্রুত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে ভবনের প্রতিটি প্রবেশমুখ, সীমানা ও গুরুত্বপূর্ণ করিডোরে।
প্রযুক্তিবিদদের কথা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড.
পুলিশের অভিজ্ঞতা মূল্যায়ন
সাবেক আইজিপি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, “প্রশাসনিক সচেতনতার অভাব আমাদের নিরাপত্তাকে দুর্বল করে রেখেছে। সচিবালয়ের মতো স্থানে এমন দুর্বলতা অনভিপ্রেত। নিরাপত্তা কেবল যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, এটি একটি কৌশলগত সংস্কৃতিও। পরিকল্পনায় নজরদারির বিষয়টি যতটা গুরুত্ব পায়, বাস্তবায়নে তা পায় না। এটাই বড় দুর্বলতা।”
বাজেট
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ পেলে ক্যামেরা কেনা শুরু হবে। প্রকল্পটি ‘সচিবালয় নিরাপত্তা আধুনিকীকরণ’ নামে কার্যক্রম শুরু করবে।”
তিনি বলেন, “প্রকল্পে ভবিষ্যতে বায়োমেট্রিক এক্সেস কন্ট্রোল, ভিজিটর ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, ফায়ার অ্যালার্ম ইন্টিগ্রেশন এবং স্বয়ংক্রিয় প্রবেশগেট সিস্টেম সংযুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।”
প্রযুক্তির ছায়ায় নিরাপত্তার ছাদ
সম্প্রতি সরকার সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে পরিকল্পনা নিয়েছে, তা দেশে সরকারি ভবন পর্যায়ে নজরদারির ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ক্যামেরাগুলোর বিশেষত্ব হলো-এগুলো শুধুমাত্র ভিডিও ধারণ করে না, বরং চেহারা শনাক্ত, গাড়ির নম্বর চিহ্নিত এবং সন্দেহজনক আচরণ বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।
একটি অজানা মুখ যদি সীমান্ত অতিক্রম করে সচিবালয়ে প্রবেশ করে বা অনুমোদনহীন গাড়ি গেট পেরোতে চায়, সঙ্গে সঙ্গে মনিটরিং রুমে অ্যালার্ম বেজে উঠবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সচিবালয়ের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উন্নত দেশগুলোর মডেল অনুসরণ করে প্রযুক্তির প্রয়োগ হবে। গাফিলতির সুযোগ আর থাকবে না।”
সচিবালয়ে দায়িত্বরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, “সচিবালয়ে প্রযুক্তির নতুন যাত্রা কেবল একটি প্রকল্প নয় বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের সূচনা। যেখানে নিরাপত্তা মানে কেবল প্রহরী নয় বরং তথ্য, বিশ্লেষণ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সমন্বয়।একদিকে বিদেশি প্রযুক্তি, অন্যদিকে প্রশাসনিক সদিচ্ছা-দুইয়ের মিলনে যদি বাস্তবায়ন হয় পরিকল্পনা, তবে এ উদ্যোগ হতে পারে গোটা দেশের সরকারি ভবনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি টেমপ্লেট।”
ঢাকা/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র ব যবস থ নজরদ র ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে একজনের মৃত্যু, আহত ২৯
তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বালিকেসির প্রদেশে স্থানীয় সময় রবিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় ৬.১ মাত্রার শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে অন্তত একজন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন এবং এক ডজনেরও বেশি ভবন ধসে পড়েছে।
আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যানুসারে, শক্তিশালী ভূমিকম্পটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭ টা ৫৩ মিনিটের দিকে আঘাত হানে। বহু দূরের ইস্তাম্বুল শহরেও কম্পন অনুভূত হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
চীন-ফিলিপাইন-ইন্দোনেশিয়া-নিউজিল্যান্ড-পেরু-মেক্সিকোতেও সুনামি সতর্কতা
জাপানে ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার আহ্বান
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সিন্দিরগি শহরে ধ্বংসস্তূপ থেকে ৮১ বছর বয়সী এক নারীকে উদ্ধার করার কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান।
আলী ইয়েরলিকায়া আরো জানান, ভূমিকম্পের ফলে ১৬টি ভবন ধসে পড়ে এবং ২৯ জন আহত হয়।
দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান ক্ষতিগ্রস্ত সবার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে একটি বিবৃতি জারি করেছেন। উদ্ধার প্রচেষ্টা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিন্দিরগি থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, ভবনগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
তুরস্ক তিনটি প্রধান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৫০ হাজারেও বেশি মানুষ এবং প্রতিবেশী সিরিয়ায় আরো ৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পের দুই বছরেরও বেশি সময় পরেও, কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ