বন্দরে সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ আহত ৩
Published: 17th, May 2025 GMT
বন্দরে মাদক ব্যবসা বাধা দেওয়ার জের ধরে সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ জন আহত হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিরা বাড়ি ঘর ভাংচুর চালিয়ে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিসাধন করে নগদ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলো মাসুম (৪৫) ও তার স্ত্রী হেনা বেগম (৩২) ও ভাগ্নে রাজু (২৮)। স্থানীয় এলাকাবাসী আহতদের জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে।
এ ব্যাপারে আহত রাজমিস্ত্রী মাসুম বাদী হয়ে গত শনিবার (১৭মে) দুপুরে হামলাকারি মাদক ব্যবসায়ী সাগর, শরিফ, সেলিম ও শফিকুলসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ্য করে বন্দর থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর আগে গত শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল ৫টায় বন্দর উপজেলার কামতাল মালিভিটা এলাকায় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।
অভিযোগের বাদী রাজমিস্ত্রী মাসুম মিয়া জানায়, বন্দর উপজেলার কামতাল মালিভিটা এলাকার শামসুল হক মিয়ার ৩ ছেলে সাগর, শরিফ ও সেলিম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে উক্ত এলাকায় অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। এ ঘটনায় আমি ও আমার পরিবার উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীদের বাড়ি সামনে মাদক ব্যবসা না করার জন্য বাধা নিষেধ করি।
এ ঘটনার জের ধরে গত শুক্রবার বিকেল ৫টা উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ী ৩ ভাইসহ একই এলাকার মৃত সিরাজুল মিয়ার ছেলে শফিকুল, সেলিম মিয়ার স্ত্রী রেখা (৩০) ও শফিকুল মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আমাকে ও আমার পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে।
আমি সকল বিবাদীদের গালাগালি করতে নিষেধ করলে মাদক ব্যবসায়ী সাগর, শরিফ সেলিম ও শফিকুল আমার বসত ঘরে অনাধিকার ভাবে প্রবেশ করে বাড়িঘর ভাংচুর করে নগদ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। ওই সময় হামলা কারিদের বাধা দিতে গিয়ে আমি ও আমার স্ত্রী ও ভাগ্নে রক্তাক্ত জখম হই।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করে যে তরুণ
মানবসেবাই জলীল হাওলাদারের ধ্যান-জ্ঞান। ২০২৪ সালে ৪০০ ব্যাগের ও বেশি রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। নিজে রক্ত দিয়েছেন ১৩ বার। রাত-দিন নেই। যে কারও রক্তের প্রয়োজনে ছুটে যান। রক্তদাতার জন্য হাসপাতালে বসে থাকতে থাকতে কখন যে সন্ধ্যা নেমে এসেছে টের পাননি। কখনও বা বন্ধুর বাড়িতে কাটিয়েছেন রাত। টগবগে এই তরুণ বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার পাশাপাশি রক্ত সংগ্রহে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
১৩ অক্টোবর ২০২১। পরিচিত এক লোক ফোন করে বলেন তাঁর মায়ের জন্য রক্ত প্রয়োজন। রোগীর অবস্থা ভালো ছিল না। রক্তের খুবই প্রয়োজন ছিল। জলীল দ্রুত গিয়ে রক্ত দেন। যদিও রক্তদান বলতে তিনি নারাজ। তাঁর ভাষায়, এটি হলো লাল ভালোবাসা। এভাবে রক্তদানের শুরু। একই বছর বরিশালে এক রোগীর ও নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন। জলীল খবর পেয়ে পটুয়াখালী থেকে রক্তদাতা এনে রক্তের ব্যবস্থা করেন। এটি হলো তাঁর রক্তদাতা সংগ্রহের প্রথম কাজ। তবে বেশ গোছালোভাবে তাঁর রক্তদাতা সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বরিশাল ব্লাড ডোনার্স ক্লাবে যোগ দেওয়ার পরে। এই সংগঠনে যুক্ত হয়ে রক্তদাতা সংগ্রহে ও যোগাযোগ দক্ষতায় অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেন তিনি। ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ বিবিডিসির ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন। ওই দিন জলীলকে সর্বোচ্চ রক্তদাতা সংগ্রহকারীর অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পান সেরা স্বেচ্ছাসেবক অ্যাওয়ার্ডও।
মানুষের উপকার করার চিন্তা জলীলের ছোটবেলা থেকে। ছোটবেলায় কঠিন রোগে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন অন্যের সহযোগিতায় তাঁর চিকিৎসা সম্পন্ন হয়। জলীলের ভাষায়, ‘অন্যের উপকারে যদি আমি বেঁচে যেতে পারি তাহলে আমি আমার সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে অন্য মানুষদের কেন উপকার করব না? আর রক্তদান এবং রক্তদাতা সংগ্রহে তো কোনো ক্ষতি নেই। অন্য দশটা কাজের পাশাপাশি এসব করা যায়।’
জলীলের বাড়ি বরিশাল সদর উপজেলার ৬নম্বর জাগুয়া ইউনিয়নের আস্তাকাঠী গ্রামে। তিনি নিজে এ পর্যন্ত রক্ত দিয়েছেন ১৩ বার। শুরু থেকে এ পর্যন্ত তাঁর রক্ত সংগ্রহ ১০০০ ব্যাগ ছাড়িয়েছে। রক্তদাতা সংগ্রহে ভালো-মন্দ দুই ধরনের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ জলীল। তবে নিজেকে একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সব কিছু মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন তিনি।