গাজায় ইসরায়েলের তীব্র হামলা, একদিনে নিহত ১৫১ ফিলিস্তিনি
Published: 19th, May 2025 GMT
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযান তীব্র করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। রবিবার (১৮ মে) দিনভর অভিযান চালিয়ে উপত্যকাটিতে ১৫১ জন জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।  
চিকিৎসা সূত্রের বরাতে সোমবার (১৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, রবিবার গাজাজুড়ে ১৫১ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ জন উপত্যকাটির উত্তরাঞ্চলের এবং গাজা সিটির। দখলদার সেনাদের চালানো এ হামলায় অঞ্চলটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
গাজায় ৪৮ ঘণ্টায় ২০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল: মিডিয়া অফিস
ইউক্রেনের মতো গাজার পাশেও ইউরোপের দাঁড়ানো উচিত: ম্যাক্রোঁ
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন গিডিয়ন চ্যারট’-এর অংশ হিসেবে উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় একযোগে ব্যাপক স্থল অভিযানে নেমেছে। এতে অংশ নিচ্ছে দক্ষিণ কমান্ডের সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনারা।
উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বুরশ আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই’ ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের ভেতরে একজন রোগীকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, সামরিক বাহিনী হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটেও গুলি চালিয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে আরো বলেছে, ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল বন্ধের অর্থ হলো উত্তর গাজায় কোনো সরকারি হাসপাতাল নেই। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী এর আগে কামাল আদওয়ান এবং বেইত হানুন হাসপাতাল ধ্বংস করেছিল।
ইসরায়েলের স্থল অভিযান জোরদারের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ এক পোস্টে জাতিসংঘ প্রধান বলেন, “গাজায় স্থল অভিযান সম্প্রসারণের জন্য ইসরায়েলের পরিকল্পনা দেখে আমি উদ্বিগ্ন।”
গুতেরেস বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলছি, জাতিসংঘ এমন কোনো অভিযান সমর্থন করবে না যা আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবিক নীতি- মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা মেনে চলে না।”
ইসরায়েল গত ২ মার্চ থেকে গাজায় খাদ্য, পানি ও ওষুধসহ সব ধরনের সরবরাহ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ২০ হাজার।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’