ট্রাম্পের এক ঘোষণার মাধ্যমে সিরিয়ার ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও সব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাশার আল-আসাদের শাসনের অবসানের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনে সহায়তা করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

ইইউর ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরা ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার ব্রাসেলসে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত, মানবিক সংকট এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি সিরিয়া এখন আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পুনর্গঠনের জন্য পশ্চিমা বিশ্বের দিকে চেয়ে আছে। আলজাজিরা।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পবিত্র কোরআনের পাঁচটি আশার আলো ছড়ানো আয়াত

জীবন একটি চক্রের মতো, যেখানে ভালো ও খারাপ সময় আসে পালা করে। দিন ও রাতের মতো, আলো ও অন্ধকারের মতো আমাদের জীবনেও সুখ ও দুঃখের মুহূর্তগুলো পরিবর্তিত হয়। পরিবার বা বন্ধুরা হয়তো আপনাকে বুঝতে ব্যর্থ হয় বা দূরে সরে যায়। এমনকি সব সময় প্রত্যাশিত ভালোবাসা বা সমর্থন না–ও পেতে পারেন। এসব মুহূর্তে জীবন একাকী ও অন্ধকার মনে হয়।

তবুও যখন আপনি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’র ওপর বিশ্বাস রেখেছেন, তখন আপনি সঠিক পথে আছেন। এই বিশ্বাসের মূলে রয়েছে আল্লাহর প্রতি ভরসা—তিনি আপনাকে পথ দেখাবেন, সাহায্য করবেন। এই পথনির্দেশনার একটি অমূল্য উৎস হলো পবিত্র কোরআন, যাকে আল্লাহ হৃদয়ের নিরাময় বলে অভিহিত করেছেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও প্রাথমিক যুগের মুসলিমরা সুখে–দুঃখে সব সময় পবিত্র কোরআনের দিকে ফিরে গেছেন।

এখানে পবিত্র কোরআনের পাঁচটি আয়াত উল্লেখ করা হলো, যেগুলো আপনার অন্ধকারতম দিনগুলোয় আশার আলো দেখাবে।

১. তিনি আপনার কথা শোনেন

‘আর (হে নবী) যখন আমার বান্দারা তোমার কাছে আমার বিষয়ে জানতে আসে, তদ্রূপ আমি কাছে আছি। আমি যে কারও ডাক শুনি, যখন সে আমাকে ডাকতে আসে। তাহলে তারা যেন আমার প্রতি আনুগত্য করে এবং আমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, যাতে তারা সঠিকভাবে পথপ্রদর্শিত হতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)

আল্লাহর সঙ্গে সংযোগ কখনো বিচ্ছিন্ন হয় না। মানুষের কাছে পৌঁছানোর পথ বন্ধ হলেও আল্লাহর দরজা ২৪/৭ খোলা। তিনি আপনার প্রশ্ন জানেন, আপনার ফিসফিস শোনেন, এমনকি আপনার নীরব অশ্রুও দেখেন। তিনি সাত আসমানের ওপরে থাকলেও আপনার হৃদয় থেকে দূরে নয়। যখন শয়তান আপনাকে ভাবায় যে আল্লাহ দূরে, তখন এই আয়াতের কথা স্মরণ করুন। প্রার্থনা করুন, কারণ তিনি আপনার ডাকের অপেক্ষায় আছেন।

আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২. তিনি আপনাকে পথ দেখান

‘আর তিনি তোমাকে পথ না–জানা অবস্থায় পেয়েছিলেন এবং তোমাকে পথ দেখিয়েছেন।’ (সুরা দুহা, আয়াত: ৭)

একবার ভেবে দেখুন, কতবার আপনি পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না? আল্লাহই আপনাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। তিনি আপনাকে ইসলামের পথে রেখেছেন। যিনি এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়েও আপনাকে এত দূর অবধি এনেছেন, তিনি কি আজ আপনাকে ছেড়ে দেবেন? এই আয়াত সুরা আদ–দুহার অংশ, যা মহানবী (সা.)–কে কঠিন সময়ে অপূর্ব সান্ত্বনা দিয়েছে। আল্লাহ আপনার স্রষ্টা, তিনি আপনাকে গড়েছেন এবং পথ দেখিয়েছেন। ভরসা রাখুন, তিনি আজও আপনার পাশে আছেন।

৩. তিনি জানেন আপনার কী প্রয়োজন

‘এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি জানবেন না? তিনি তো সূক্ষ্ম, সূক্ষ্মভাবে জানেন।’ (সুরা মুলক, আয়াত: ১৪)

আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা। তিনি আমাদের শরীরের প্রতিটি শিরা, প্রতিটি চুল, প্রতিটি কোষ গড়েছেন। তিনি জানেন আমাদের কী প্রয়োজন এবং কখন প্রয়োজন। তিনি আল–খাবির (সর্বজ্ঞ) ও আল–লতিফ (সূক্ষ্মদর্শী)। যখন আমরা দুঃখে ডুবে থাকি, তখন তিনি আমাদের জন্য সমাধান প্রস্তুত করছেন। তাঁর পরিকল্পনা সূক্ষ্ম, তিনি আমাদের সবচেয়ে সুন্দর উপায়ে পথ দেখাবেন। ধৈর্য ধরুন, তাঁর সাহায্য আসছে।

আরও পড়ুনঅর্থ বুঝে নামাজ পড়ার ফজিলত১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

৪. তিনি আপনার সঙ্গে আছেন

‘তিনি আপনার সঙ্গে আছেন, যেখানে আপনি আছেন।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত: ৪)

যত কঠিন পরিস্থিতিই হোক, আল্লাহ আপনার সঙ্গে আছেন। তিনি আপনার কথা শোনেন, আপনার কাজ দেখেন, আপনার হৃদয় জানেন। তিনি কখনো আপনাকে একা ছাড়েননি, ছাড়বেনও না। যখন পৃথিবী আপনার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন জানুন, আল–ওয়ালী (রক্ষক বন্ধু) আপনার পাশে। এই আয়াত মনে করিয়ে দেয় যে আপনি কখনো একা নন।

৫. তিনি আপনাকে সুস্থ করেন

‘আর রাসুলদের এসব সংবাদ আমি তোমার কাছে বর্ণনা করছি, যার দ্বারা আমি তোমার মনকে স্থির করি আর এতে তোমার কাছে এসেছে সত্য এবং মুমিনদের জন্য উপদেশ ও স্মরণ।’ (সুরা হুদ, আয়াত: ১২০)

পবিত্র কোরআনের প্রায় এক–তৃতীয়াংশ ঘটনা দিয়ে গঠিত। এতে ২৫ নবী ও সৎ ব্যক্তিদের কাহিনি রয়েছে, যেগুলো আমাদের জন্য নির্দেশনা। আপনার সমস্যা যা–ই হোক, পবিত্র কোরআনের গল্পে তার সমাধান পাবেন। যদি আপনার পরিবার ইসলামের বিরোধিতা করে, তবে হজরত ইব্রাহিম (আ.)–এর ঘটনা পড়ুন। যদি দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভোগেন, তাহলে আইয়ুব (আ.)–এর কাহিনিতে সান্ত্বনা পাবেন। প্রিয়জন হারালে ইয়াকুব (আ.)–এর কথা ভাবুন, অবিচারের শিকার হলে ইউসুফ (আ.)–এর জীবন আপনাকে শান্তি দেবে।

সুতরাং পবিত্র কোরআন পড়ুন এবং পবিত্র কোরআনের আয়াতে শান্তি খুঁজুন। এই পাঁচ আয়াত আপনাকে মনে করিয়ে দেবে যে আল্লাহ আপনার সঙ্গে আছেন, আপনার কথা শোনেন, আপনার প্রয়োজন জানেন এবং আপনাকে পথ দেখান। আমরা প্রার্থনা করি, আল্লাহ আমাদের বিপদ থেকে মুক্তি দিন এবং এখানে ও পরকালে শান্তিপূর্ণ জীবন দান করুন।

 ‘ডিসকভারিং ইসলাম’ আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুননামাজের ভেতরে দরুদ পড়ার নিয়ম০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ