প্লট বরাদ্দ নিয়ে দুদকের করা মামলায় অব্যাহতি পেলেন মির্জা আব্বাস
Published: 21st, May 2025 GMT
প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের আপিল মঞ্জুর করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এ রায় দেন। ফলে ওই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস অব্যাহতি পেলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
আদালতে মির্জা আব্বাসের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও মো.
সাংবাদিকদের জন্য প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ এনে দুদক ওই মামলা করে বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই মামলার এজাহারে মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না, অভিযোগপত্রে নাম আসে। এরপর অব্যাহতি চেয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করেন তিনি, যা নামঞ্জুর হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দেন। শুনানি শেষে রুল খারিজ করে রায় দেন। অর্থাৎ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলবে। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল মঞ্জুরের পর তিনি আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। এর অর্থ তাঁর বিরুদ্ধে ওই মামলা আর চলবে না। ওই মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মির্জা আব্বাস।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মির্জা আব্বাসের আপিল মঞ্জুর করেছেন। এই মামলার অভিযোগ থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
আইনজীবীর তথ্য অনুসারে, সাংবাদিকদের জন্য মিরপুরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে মির্জা আব্বাসসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ শাহবাগ থানায় মামলাটি করে দুদক। এতে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর মির্জা আব্বাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে মির্জা আব্বাস হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেওয়ার পাশাপাশি মামলার কার্যক্রম অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য স্থগিত করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ১৩ মে রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
বজ্রপাত বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ মূল্যায়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ
বজ্রপাত বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপের মূল্যায়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে প্রয়োজনীয় কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী ছয় মাসের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন হফলনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। বজ্রপাতে প্রাণহানি এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এর আগে মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ কাওছার ১৩ মে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ কাওছার ও নাঈম সরদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশসচিব, পরিকল্পনাসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকসহ বিবাদীদের ওই কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক মানুষের জীবনের অধিকার মৌলিক অধিকার। মানুষের জীবন রক্ষায় রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সাংবিধানিক ও আইনি দায়িত্ব। স্বাভাবিক অর্থে বজ্রপাত প্রকৃতির একটি অমোঘ নিয়তি হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে আধুনিক গবেষণা ও প্রযুক্তির বিকাশের ফলে বজ্রপাত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও আবিষ্কৃত হয়েছে। ফলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে মানুষের প্রাণহানি ও ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
রিট আবেদনকারী পক্ষের ভাষ্য, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী, বিশেষত কৃষক ও জেলেরা সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতের শিকার হন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বজ্রপাতে নিহত ১৭৭ জনের মধ্যে ১২২ জনই কৃষক। সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও গাইবান্ধা দেশের সবচেয়ে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা। বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা এখন অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যার চেয়ে বেশি। যদিও সরকার বজ্রপাতকে ২০১৬ সাল থেকে একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে ঘোষণা করেছে, তবু বজ্রপাতের ফলে হতাহতের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এখন পর্যন্ত গৃহীত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা এড়াতে পাশের দেশ নেপাল ইতিমধ্যে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশেও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বজ্রপাতের ফলে হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।