খুলনার রূপসা উপজেলায় ও নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকায় পৃথক সন্ত্রাসী হামলায় দুই যুবক নিহত হয়েছেন। রবিবার গভীর রাতে এ দুটি ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন রনি হাওলাদার ওরফে কালা রনি (রূপসা) এবং গোলাম (সোনাডাঙ্গা)।

রূপসা থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোছাব্বরপুর গ্রামে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রনি হাওলাদার নিহত হন। তিনি ওই গ্রামের আনোয়ার হাওলাদারের ছেলে এবং পূর্বে চরমপন্থি দলের সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ১০ থেকে ১২টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটন ও অপরাধীদের গ্রেপ্তাতারের চেষ্টা চলছে, তবে এখনো মামলা হয়নি।

অন্যদিকে, একই সময়ে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ডেল্টা ভবনের পেছনের গলিতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন গোলাম (২৬)। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সোনাডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) মো.

মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত গোলাম হরিণটানা থানার ময়ূরি ব্রিজ এলাকার মো. আলী হোসেনের ছেলে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

আলোচনায় সুব্রত বাইনের স্যাটেলাইট ফোন

তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী ও মোল্লা মাসুদকে গ্রেপ্তারের সময় আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি একটি স্যাটেলাইট ফোনও জব্দ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধারণা করা হচ্ছে, সহযোগীদের সঙ্গে স্পর্শকাতর তথ্য আদান-প্রদানে এই ফোন ব্যবহার করতেন সুব্রত। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তি কীভাবে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর হাতে গেছে এবং কতদিন ধরে তা ব্যবহার করছেন, জানতে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
 
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর অন্তত তিনটি হত্যাকাণ্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীর যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ মধ্য বাড্ডায় বিএনপি নেতা সাধন হত্যায় যে অস্ত্র ব্যবহার হয়, তা সুব্রতর ছিল বলে তথ্য মিলছে। এ ছাড়া সুব্রত বাইনের কাছে যে স্যাটেলাইট ফোন পাওয়া গেছে, তার মাধ্যমে কীভাবে ও কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। 
 
পুলিশ জানিয়েছে, আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তারা অবৈধ অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জাম অপরাধ ঘটানোর জন্য নিজেদের কাছে রেখেছিলেন। সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় এই সদস্যরা ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় অপরাধ করে আসছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের মামলায় জড়িত থাকার সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আরও অনেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার এবং আরও বিপুল অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। 

এদিকে রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনকে আট দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গ্রেপ্তার মোল্লা মাসুদ, সহযোগী শুটার এমএএস শরীফ ও আরাফাত ইবনে মাসুদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন এ আদেশ দেন। 

এর আগে আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক রিয়াদ আহমেদ। সেখানে বলা হয়, ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় থাকা সুব্রত বাইন ও তাঁর সহযোগী মোল্লা মাসুদ সন্ত্রাসী বাহিনী সেভেন স্টার গ্রুপ পরিচালনা করতেন। সুব্রত বাইন ওই সময়ে খুন-ডাকাতি সংঘটনের মধ্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করেন। আসামিরা বিভিন্ন মামলায় সাজা ভোগ করছিলেন। এর মধ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আবারও সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেন।

নিজের কাছে অস্ত্র রাখার কারণ জানালেন সুব্রত বাইন
এ দিন আদালতে সুব্রত বাইন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা ছবি নেন, ভিডিও নেন; কিন্তু হলুদ সাংবাদিক হইয়েন না। যেটা সত্যি, তদন্ত করে আপনারা সেটা লেখেন। ১৯৮৯ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে লিখতেছেন। আমারও তো পরিবার আছে। আমার নাম বিক্রি করে যারা চাঁদাবাজি করে, তাদের আপনারা ধরতে পারেন না। আমি কখনও প্রতিবাদ করি নাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে বাঁচার জন্য অস্ত্র রাখি। কেউ যদি বলে রাখি না, তাহলে সেটা মিথ্যা হবে। আমি নিজেকে জানি। নিজেকে চিনি। ৬১ বছর হয়ে গেছে।’

আসামি সুব্রত বাইনের আইনজীবী দাবি করেন, গণমাধ্যম সৃব্রত বাইনকে সৃষ্টি করেছে। প্রভাবিত হয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীর ওই তালিকা করা হয়। তিনি তিনবার গ্রেপ্তার হন মিডিয়ার কারণে। আয়নাঘরে থাকার পর ৬ আগস্ট ভোরে নরসিংদীর এক রাস্তায় সুব্রতকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়। 

এর আগে মঙ্গলবার ভোরে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে সুব্রত বাইন, মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে ঢাকা ও কুষ্টিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে গ্রেপ্তার সুব্রত ও মাসুদ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, এম এ এস শরীফের হাতিরঝিলের একটি বাড়িতে তারা নিয়মিত বৈঠক করেন। সেখানে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্র, গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম রাখা আছে। পরে হাতিরঝিল থানার নতুন রাস্তা এলাকা থেকে একই দিন বিকেল ৩টার দিকে আসামি এম এ এস শরীফ ও আরাফাত ইবনে নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ