জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ প্রস্তুত সম্ভব: আলী রীয়াজ
Published: 26th, May 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনার মধ্য দিয়ে আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব।
সোমবার রাজধানীর সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্য অগ্রগতি বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মত বিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মত বিনিময় সভায় অধ্যাপক আলী রীয়াজ কমিশনের কার্যক্রম সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এতে বলা হয়, সংস্কার প্রস্তাব বিষয়ক ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদনসমূহ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। পরবর্তী সময়ে গত ৫ মার্চ কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন থেকে নির্বাচিত ১৬৬টি সুপারিশ দলগুলোর মতামতের জন্য প্রেরণ করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত সুপারিশগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার সংক্রান্ত ৭০টি, নির্বাচন ব্যবস্থা ২৭টি, বিচার বিভাগ ২৩টি, জনপ্রশাসন ২৬টি এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত ২০টি সুপারিশ রয়েছে। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়নযোগ্য বিবেচনায় স্প্রেডশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
কমিশন জানায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের পাশাপাশি কমিশন গত ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রথম দফায় ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে মোট ৪৫টি বৈঠক করেছে। এসব আলোচনায় একাধিক বিষয়ে যেমন ঐকমত্য গঠিত হয়েছে, তেমনি কিছু বিষয়ে মতবিরোধ থেকে গেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণ, এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন পুনর্গঠনসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, কমিশন দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করতে চায়। এই আলোচনা হবে বিষয়ভিত্তিক। তিনি বলেন, ‘‘সব বিষয়ে একমত হওয়া সম্ভব না হলেও, যেসব মৌলিক বিষয়ে এখনো মতভিন্নতা রয়েছে সেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা হবে।’’
উল্লেখ্য, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ আগস্ট।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো.
ঢাকা/এএএম//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দলগ ল র ঐকমত য
এছাড়াও পড়ুন:
বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকছে ইয়ামালের
দিন যতই গড়াচ্ছে, লামিনে ইয়ামাল নিজেকে আরও ভালো ফুটবলারে পরিণত করছেন। তাই তাঁর দিকে আরও বেশি ক্লাবের নজর পড়ছে।
তবে ইয়ামাল গত ডিসেম্বর থেকে বলে আসছেন, তিনি বার্সেলোনাতেই থাকতে চান। বার্সাও নানা সময়ে ইঙ্গিত দিয়েছে, ইয়ামালকে তারা ছাড়তে চায় না। এমনিতেই ইয়ামালের সঙ্গে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি আছে বার্সার। দুই পক্ষের বন্ধনটা অটুট রাখতে এবার চুক্তির মেয়াদ আরও বাড়ানো হচ্ছে।
স্পেনের দুই ক্রীড়া দৈনিক মুন্দো দেপোর্তিভো ও দিয়ারিও স্পোর্ত বলছে, বার্সার সঙ্গে ২০৩১ সাল পর্যন্ত চুক্তি করতে যাচ্ছেন ইয়ামাল। সব ঠিক থাকলে আজই চুক্তিপত্রে সই করতে পারেন এই বিস্ময় বালক।
সংবাদমাধ্যম দুটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বার্সেলোনার তোরে মেলিনা হোটেলে ইয়ামালের এজেন্ট জর্জ মেন্দেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ক্লাব সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা এবং ক্রীড়া পরিচালক ডেকো। আলোচনা বেশ ফলপ্রসূ হয়েছে এবং বেশির ভাগ বিষয়ে দুই পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছেছে। চুক্তি হলে ইয়ামালই হবেন ক্লাবটির সর্বোচ্চ বেতনের ফুটবলার।
বার্সার খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি বেতন পান রবার্ট লেভানডফস্কি। পোলিশ এই স্ট্রাইকার ক্লাব থেকে সপ্তাহে ৬ লাখ ৪০ হাজার ৯৬২ ইউরো (৮ কোটি ৯০ লাখ ২৩ হাজার টাকা) পান। বর্তমানে ইয়ামালের সাপ্তাহিক বেতন ৬৪ হাজার ৩৮ ইউরো (৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা)।
আগামী ১৩ জুলাই ১৮ বছর পূর্ণ হবে ইয়ামালের। এরপর এমনিতেই বেতন বাড়ত তাঁর। তবে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করেই বেতন দেওয়া হবে।
বার্সার হয়ে ২০২৪–২৫ মৌসুম দুর্দান্ত কেটেছে ইয়ামালের। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেছেন ১৮ গোল, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ২৫টি। এর চেয়েও বড় ব্যাপার মাঠে তাঁর প্রভাব। এই মৌসুমে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছেন। বেশ কয়েকটি চোখধাঁধানো গোল করেছেন, যার কয়েকটি ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।
ইয়ামালের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে মুন্দো দেপোর্তিভো ও দিয়ারিও স্পোর্ত জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তি করার কথা ছিল ইয়ামালের। তবে তা আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি ব্যালন ডি’অর জিততে পারলে মোটা অঙ্কের বোনাস পাবেন।
তবে ইয়ামালের রিলিজ ক্লজ কত হবে, তা নিয়ে দুই পক্ষ এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। মূল চুক্তিতে এটি ১০০ কোটি ইউরো (১৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা) নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন তা আবার পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
উয়েফা নেশনস লিগের ম্যাচ সামনে রেখে ইয়ামাল কয়েক দিনের মধ্যেই জাতীয় দল স্পেনে যোগ দেবেন। এরপর লম্বা ছুটিতে যাবেন। তাই বার্সার চাওয়া যত দ্রুত সম্ভব, ইয়ামালের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শেষ করা।
তা ছাড়া বার্সা কর্তৃপক্ষের ধারণা, ইয়ামালের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে চুক্তি করতে গিয়ে নানা রকম জটিলতায় পড়তে হতে পারে। ক্লাবটি তাই সব ধরনের ঝুটঝামেলা এড়িয়ে যেতে চায়।
বার্সেলোনার কোচ হিসেবে নিজের প্রথম মৌসুমেই ক্লাবকে তিনটি ট্রফি (লা লিগা, কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ) এনে দিয়েছেন হান্সি ফ্লিক। তাঁর সার্বিক কাজ নিয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ বেশ সন্তুষ্ট।
কোচ হওয়ার সময় ক্লাব সভাপতি লাপোর্তাকে ফ্লিক যে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের পরিকল্পনা জমা দিয়েছিলেন, তাতে সম্মুখ সারিতেই ছিলেন ইয়ামাল। এখন তো ইয়ামালকে ছাড়া একাদশ কল্পনাই করা যায় না। তরুণ উইঙ্গারকে তাই যেকোনো মূল্যে ধরে রাখতে চাইছে বার্সা।