বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রদলের হামলা
Published: 27th, May 2025 GMT
সরকারি তিতুমীর কলেজে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনরত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর প্রকাশ্যে হামলা করেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে হল খোলার দাবিতে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হঠাৎ করে ছাত্রদল হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের হল খোলার বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা কলেজের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলে নেতাকর্মীরা সেখানে ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ছিঁড়ে ফেলে এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করে। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে নায়েক নূর মোহাম্মদ নামে এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি তিতুমীর কলেজের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন নাইমকে ব্যাপক মারধর করে ছাত্রদল। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত বলেন, ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম এমন সময় দেখি, হল নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনে জড়ো হয়েছেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর ওপর আকস্মিক হামলা চালায়। এতে অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আলি আহমেদ বলেন, প্রিন্সিপাল স্যার আমাদের বিশৃঙ্খলাকারী বলে ছাত্রদলের হাতে উঠিয়ে দিয়েছেন, আজকে তিনি আমাদের ওপর হামলা করিয়েছেন। আগে হল ছাত্রলীগের অধীনে থাকতো, এখন ছাত্রদলের অধীনে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন নাইম আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে যান, সেখানে মারামারির ঘটনার ভিডিও করতে গেলে তার ওপর হামলা করা হয়।
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। হামলাকারীদের মধ্যে কয়েকজনের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠিয়ে তাদের বাহিস্কার করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত ত ম র কল জ ছ ত রদল ত ত ম র কল জ ছ ত রদল র ন ত কর ম দ র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা
বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।
এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।
যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।