কুড়িগ্রাম সীমান্তে ১৪ জনকে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা বিএসএফের, বিজিবির বাধা
Published: 27th, May 2025 GMT
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ১৪ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টার ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে বড়াইবাড়ি সীমান্তের ১০৬৭ নম্বর সীমানা পিলারের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, লোকজনকে ঠেলে পাঠানো ঠেকাতে গেলে বিএসএফ গুলি ছোড়ে। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে গুলি ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। এ সম্পর্কে জামালপুরে ৩৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অ্যাডজুট্যান্ট শামসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএসএফ অবৈধভাবে পুশ ইনের চেষ্টা করলে বিজিবি বাধা দেয়। পুশ ইন করা ব্যক্তিরা কোন দেশের নাগরিক, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁরা দুই দেশের শূন্যরেখায় আছেন। ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গেছেন। তবে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোর চারটার দিকে বিএসএফ অবৈধভাবে ১৪ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিজিবি বাধা দেয়। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে বিএসএফ চারটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ওই ১৪ জন নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী।
আজ ভোর চারটার দিকে বিএসএফ অবৈধভাবে ১৪ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে বিজিবি বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। রৌমারী সীমান্তের বড়াইবাড়ি এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ১৭ জনকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। তাদেরকে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ড থেকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে বিএসএফ সদস্যরা ওই ১৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দেয়। তাদের মধ্যে চারজন নারী, চারজন পুরুষ এবং নয়জন শিশু।
এদিন বিকেলেই তাদেরকে গোমস্তাপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
আটককৃতরা হলেন—কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার কাশিপুর গ্রামের মৃত জেয়ার ব্যাপারীর ছেলে মফিজুল হক (২৬), তার স্ত্রী মোছা. মনজু বেগম (২২), তাদের সন্তান মোছা. মিতু আক্তার (১৩), মো. বেলাল (৪) ও মরিয়ম (২); একই উপজেলার দাশিয়ারছড়া-বালাটরি এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে শাহাজুল ইসলাম (৪২), তার ছেলে মামুন মিয়া (১৮), মো. মাসুদ (১৩) ও রিদয় ইসলাম (৪); নাগেশ্বরীর এগার মাথা এলাকার মৃত বক্তার আলীর স্ত্রী রফিয়া বেগম (৬০) ও তার মেয়ে ববিতা বেগম (৩৪); গোসাইবাড়ি এলাকার অতুল চন্দ্র বর্মণের ছেলে বুলু চন্দ্র বর্মণ (৪০) ও তার স্ত্রী সুনোতি রানী (৩৪), তাদের সন্তান সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ (৮), সুমন চন্দ্র বর্মণ (৬), গোপাল চন্দ্র বর্মণ (৪) ও বুলবুলি চন্দ্র বর্মণ (১৬)।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিরা কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন। সেখানে গিয়ে তারা বিভিন্ন স্থানে কাজ করতেন। চলতি বছরের ১৭ মে ভারতের হারিয়ানা প্রদেশ থেকে তাদেরকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ। সেখান থেকে ট্রেনযোগে তাদেরকে হাওড়া জেলায় আনা হয়। পরে ২৪ মে ভারতের ৮৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ইটাভাটা ক্যাম্পের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। ইটাভাটা ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা মঙ্গলবার ভোরে ভারতের ওপারের চিলারদাড়া এলাকা হয়ে বিভিষণ সীমান্তের লালমাটিয়া এলাকা দিয়ে ওই ১৭ জনকে ঠেলে পাঠায়। পরে তাদেরকে আটক করে বিজিবি।
নওগাঁ ১৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুর ইসলাম মাসুম জানিয়েছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার সুবাদে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারা সবাই বাংলাদেশি। দীর্ঘদিন আগে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে অবৈধভাবে গিয়ে ইটের ভাটায় কাজ করতেন তারা। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নারী-পুরুষ ও শিশু আছে।
গোমস্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রইস উদ্দিন জানিয়েছেন, বিএসএফ সদস্যরা ১৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। পরে বিজিবি তাদের আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/শিয়াম/রফিক