খুলনায় ট্যাংক-লরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক নেতাসহ গুলিবিদ্ধ ৩
Published: 27th, May 2025 GMT
খুলনা মহানগরীর খালিশপুর ও দৌলতপুর থানার সীমান্তর্বী এলাকা কাশিপুর মোড়ে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে ট্যাংক-লরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরহাদ হোসেনসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষনিকভাবে এ হামলার কারণ জানা যায়নি। ঘটনার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি শুরু করেছে।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে সংঘর্ষে আহত যুবকের মৃত্যু, কয়েকটি বাড়িতে হামলা
তিতুমীর কলেজে বৈষম্যবিরোধীসহ সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রদলের হামলা
আহত ফরহাদ হোসেনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সাবেক সদস্য। তার বাবার নাম মৃত.
আহত অন্যরা হলেন- ফরহাদ হোসেনের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক মো. মনিরুল ইসলাম এবং ম্যানেজার মো. সোহেল।
আহত গাড়িচালক মনিরুল ইসলাম জানান, আজ মঙ্গলবার বিকেলে যমুনা অয়েল কোম্পানির ডিপো থেকে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছিলেন তারা। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যান প্রথমে তাদের গাড়ির গতিরোধ করে। পিকআপ ভ্যানে থাকা এক ব্যক্তি তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
এসময় পিকআপ ভ্যানের পেছনে আসা তিনটি মোটরসাইকেলে থাকা ছয়জন মাস্ক পরিহিত অস্ত্রধারীও গুলি ছুড়তে শুরু করে। তিনি গাড়িটি ব্যাক গিয়ারে চালাতে শুরু করেন। মোটরসাইকেলে থাকা অন্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এক কিলোমিটার ধাওয়া করেন।
তিনি আরো জানান, অস্ত্রধারীরা প্রায় ২০-২৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে তিনি গাড়িটি শেখ ফরহাদের বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করান। এক পর্যায়ে অস্ত্রধারীরা চলে গেলে তারা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
এ ঘটনায় শেখ ফরহাদ হোসেনের বাম কানে গুলি লাগে। তার গাড়ি চালক মো. মনিরুল ইসলাম বাম হাতে এবং ম্যানেজার মো. সোহেল পিঠে গুলিবিদ্ধ হন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আবুল বাশার মোহাম্মাদ আতিকুর রহমান বলেন, “সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে ৫-৬টি গুলি করে। এ ঘটনায় ফরহাদ হোসেন, তার গাড়ি চালক মো. মনিরুল ইসলাম এবং ম্যানেজার মো. সোহেল আহত হন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। তদন্ত করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ফরহ দ হ স ন চ লক ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস