সিলেট সীমান্তে আবারও ৬৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Published: 28th, May 2025 GMT
সিলেট সীমান্ত দিয়ে ২ দিনের ব্যবধানে আবার ৬৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ বুধবার সকালে জেলার তিনটি স্থান থেকে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এ নিয়ে গত ১৪ দিনে সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে অন্তত ১৩৫ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, জৈন্তাপুরের মোকামপুঞ্জি সীমান্ত এলাকায় আজ ভোরে অভিযান চালান ৪৮ বিজিবির শ্রীপুর বিওপি সদস্যরা। এ সময় ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো ৩২ জনকে আটক করা হয়। তাঁদের মধ্যে ১৩ শিশু, ৭ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী ছিলেন। এ ছাড়া একই উপজেলার মিনাটিলা এলাকায় অভিযান চালান বিজিবির মিনাটিলা বিওপির সদস্যরা। এ সময় ভারত থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করা ২০ জনকে আটক করা হয়, তাঁদের মধ্যে ৭ শিশু, ৬ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী আছেন।
এদিকে বিজিবির জকিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন ১৯ বিজিবি আজ সকালে জৈন্তাপুরের কদমখাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঠেলে পাঠানো ১৪ জনকে আটক করে। তাঁদের মধ্যে ৪ শিশু, ৫ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী রয়েছেন।
আরও পড়ুনসিলেট ও মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে ১৫৩ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ২৫ মে ২০২৫আটক ব্যক্তিদের অস্থায়ীভাবে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এ সম্পর্কে সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে ভারতে কাজের সন্ধানে গিয়েছিলেন। এসব ব্যক্তিদের মধ্যে কুড়িগ্রাম, বাগেরহাট ও যশোরের বাসিন্দা আছেন। তাঁরা মূলত ভারতের রাজস্থানে কাজ করতেন। ৩ মে থেকে সেখানকার পুলিশ তাঁদের আটক করতে শুরু করে। তখন জানানো হয়েছিল ৩০ মের মধ্যে ভারত ত্যাগ না করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ কারণে অনেকে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে যান। পরে তাঁদের বিভিন্নভাবে সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা যাচাই–বাছাই করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ২৫ মে কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ৩২ জন, একই সীমান্ত দিয়ে ২৪ মে ২১ জন ও ১৪ মে সিলেটের জকিগঞ্জের ভারত সীমান্তবর্তী আটগ্রাম থেকে ১৬ জনকে আটক করেছিল বিজিবি। আটক ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক বলে জানিয়েছে বিজিবি।
আরও পড়ুনসিলেট সীমান্তে আরও ২১ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ২৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।