আজ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী
Published: 29th, May 2025 GMT
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক দল বিপথগামী সৈনিকের হাতে তিনি প্রাণ হারান। এ উপলক্ষে সারাদেশে ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মনসুর রহমান কলকাতায় কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে জিয়া তাঁর পিতার সঙ্গে কলকাতায় ছিলেন। দেশ ভাগের পর করাচিতে চলে যান। ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন লাভ করেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে গৌরবময় দায়িত্ব পালন করেন। এর স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বীরউত্তম খেতাব পেয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে জিয়াউর রহমানের অম্লান স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তিনি বলেন, ‘শহীদ জিয়ার মহান আদর্শ, দর্শন ও কর্মসূচি আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুসংহতকরণ, বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং দেশীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির রক্ষাকবচ। জাতীয় জীবনের সব সংকট, সংগ্রাম ও বিনির্মাণে শহীদ জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করেই আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং জাতীয় স্বার্থ, বহুমাত্রিক গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকার সুরক্ষায় ইস্পাতকঠিন গণঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’
কর্মসূচি:
ঈদুল আজহার কারণে এবার জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি কিছুটা সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া মসজিদে মসজিদে গণদোয়া অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডে দুস্থদের মধ্যে চাল-ডাল ও বস্ত্র বিতরণ করা হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছাড়াও সারাদেশে জেলা, উপজেলা, থানা ও পৌর ইউনিটগুলো জিয়াউর রহমান স্মরণে আলোচনা সভা, দুস্থদের মধ্যে খাবার, বস্ত্র বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
দুই দিন নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। বিএনপিসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো জিয়াউর রহমানকে নিয়ে পোস্টার প্রকাশ করেছে এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে দলটি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ য় উর রহম ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত গণভোটে শিক্ষার্থীরা সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন। চার দিনব্যাপী এ গণভোটে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৮৬ শতাংশ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ গণভোটের আয়োজন করে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এ ফলাফল ঘোষণা করে। গণভোটে অংশ নিয়েছেন ১ হাজার ১৪৫ শিক্ষার্থী, যার মধ্যে ২৬টি ভোট (২ দশমিক ৫ শতাংশ) বাতিল হয়।
ফলাফল ঘোষণার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ভূমিকা সরকার ও সঞ্চালনায় ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় রায়। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছায়েদুল হক (নিশান)। আরও বক্তব্য দেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক আবদুর রহমান, সুদীপ্ত হালদার, শওকাত ওসমান স্বাক্ষর প্রমুখ।
ছায়েদুল হক বলেন, ‘এই গণরায় শুধু বরিশাল নয়, দেশের সব গণতন্ত্রকামী শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংস্কার করে দ্রুত ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের নির্বাচনের রূপরেখা দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের এই গণরায়কে কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে গণতন্ত্রের চর্চা, বিকাশ ও সুস্থ-সবল নেতৃত্বের বিকাশের আঁতুড়ঘর।’
ছায়েদুল হক আরও বলেন, ছাত্র সংসদ না থাকলে ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তায়ন ও গোপন রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ে। গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব ছাড়া শিক্ষার্থীদের মতামত কোনো সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয় না। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সমস্যা। এসব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের ভূমিকাকে অগ্রাহ্য করলে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন অসম্ভব।
সভাপতির বক্তব্যে ভূমিকা সরকার বলেন, ‘এই গণভোট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা, এখনই সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করার। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ১৪ বছর পার হয়েছে। কিন্তু এখনো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো–সংকট প্রকট। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের কক্ষ নেই, আবাসন নেই, পরিবহনসংকটও প্রকট। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণগ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই, গবেষণা নেই। তাই পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া গণতন্ত্র বিকাশের জন্য ছাত্রদের সুস্থ রাজনীতির বিকাশের জন্য ছাত্র সংসদের বিকল্প নেই। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাতে চাই, অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংস্কার করে এখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হোক।’