হবিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আরও ২২ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 30th, May 2025 GMT
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার রেমা-কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে আরও ২২ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে আজ শুক্রবার ভোর পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। পরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
এর আগে গত সোমবার একইভাবে রেমা কালেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে ঠেলে পাঠায় বিএসএফ। এ নিয়ে হবিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে ৪১ জনকে পাঠাল ভারত।
বিজিবির হবিগঞ্জ-৫৫ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির সুযোগে বিএসএফ তাঁদের নিজ সীমান্তে একত্র করে কাঁটাতারের গেট খুলে ২২ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এ সময় দুজন আহত হন।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩ শিশু, ১০ নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের সবার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটক ব্যক্তিদের স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, আটক ব্যক্তিদের কেউ কেউ ১৮ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। তাঁদের একজন বলেন, ‘আমরা হরিয়ানায় দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটায় কাজ করতাম। দুই দিন আগে সিআইডি পুলিশ আমাদের ধরে নিয়ে গিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়।’
চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, আজ ভোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় সীমান্তের রেমা-কালেঙ্গা বনের ভেতর দিয়ে বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখে বিজিবিকে খবর দেন। পরে বিজিবি গিয়ে তাঁদের আটক করে।
বিজিবির কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে আটক ব্যক্তিদের সীমান্তের একটি আদিবাসী বাড়িতে রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে তাঁদের বিজিবি ক্যাম্পে নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১২ হাজার তরুণ–তরণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পিকেএসএফ
পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে দেশের ১২ হাজার তরুণ-তরুণীকে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ দেবে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। কারিগরি ও পেশাগত শিক্ষানির্ভর তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রিজ কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রামের (এসআইসিআইপি) আওতায়। এ প্রকল্পে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
আজ সোমবার রাজধানীর পিকেএসএফ ভবনে এসআইসিআইপি ও পিকেএসএফের প্রকল্পের উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণার্থী তরুণেরা ১২টি খাতের প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে থাকা-খাওয়ার সব খরচ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ৭০ শতাংশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন নিম্ন আয়ের ও প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণেরা। প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর অংশগ্রহণকারীদের আত্মকর্মসংস্থান বা মজুরিভিত্তিক চাকরির ক্ষেত্রেও সহায়তা করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, দেশে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে পিকেএসএফ ও এর সহযোগী সংস্থাগুলো সেই চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখতে পারবে।
পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের বলেন, ‘প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। এটি একই সঙ্গে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা। প্রকল্পের আওতায় জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত কোর্স অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁরা সহজেই কর্মসংস্থানে যুক্ত হতে পারেন।’
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জসীম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ১২ হাজার ছাড়াও আরও ৮ হাজার ৫০০ তরুণকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তৃতীয় লিঙ্গের তরুণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। পাশাপাশি ২ হাজার এতিম ও দুস্থ তরুণকেও প্রশিক্ষণের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ওয়ালিদ হোসেন ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বক্তব্য দেন।