কুষ্টিয়া সীমান্ত দিয়ে ৯ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 31st, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভাগজোত সীমান্ত দিয়ে ৯ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। আজ শনিবার সকালে সীমান্তের ভাগজোত এলাকায় একটি নৌকা থেকে এই ৯ জনকে নামতে দেখা যায়। পরে তাঁদের ক্যাম্পে নিয়ে যান বিজিবি সদস্যরা। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়।
আজ বিকেলে ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। ঠেলে পাঠানো ৯ জনকে বিজিবির স্থানীয় ক্যাম্পে রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ১০টার দিকে সীমান্ত পিলার ১৫৪ থেকে আনুমানিক তিন কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভাগজোত ঘাট এলাকায় একটি নৌকা থেকে ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নামতে দেখা যায়। স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তাঁরা বিষয়টি বিজিবিকে জানান। বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, প্রায় চার বছর আগে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দেশটির দিল্লিতে ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁরা নিজেরাই স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার ইচ্ছার কথা জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শুক্রবার ওই ৯ জনকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলঙ্গি থানার নিকটবর্তী একটি বিএসএফ ক্যাম্পে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বিএসএফ কাঁটাতারবিহীন চরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়। বাংলাদেশে ঢোকার পর তাঁরা হেঁটে ও ভাড়া করা মোটরসাইকেলে করে ভাগজোত ঘাট এলাকায় পৌঁছান। বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ৯ জনের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ২ জন কিশোর ও ১টি শিশু।
বিজিবি জানায়, এ ব্যাপারে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্ত পিলার ৮৫/১০-এস এর কাছে বিজিবি চরচিলমারী কোম্পানি ও ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জলঙ্গি কোম্পানি কমান্ডারের মধ্যে পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠকে বিজিবি পুশ-ইনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানায়। তবে বিএসএফ তাদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। তবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে বলে উল্লেখ করেছে বিএসএফ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ