ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর গ্রেপ্তার
Published: 3rd, June 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রাম থেকে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর গোলাম হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। সোমবার রাত ২ টায় তার নিজ বাড়ি থেকে যৌথবাহিনীর অভিযানে তিন সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোলাম হায়দার নিজেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যরা হলেন ফরহাদ হোসেনসহ আরও দুইজন।
নগরকান্দা থানার ওসি আমিরুল ইসলাম জানান, মেজর হায়দার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হুমকি-ধমকি এবং সাধারণ মানুষকে হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সোমবার বিকালে কোদালিয়া শহীদনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো.
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন মালামালের ভাগ ও কাবিখা-কাবিটার টাকা দাবি করতেন মেজর হায়দার। রাজু মোল্লা আরও জানান, ২৯ মে গণকবরের পাশে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন মেজর হায়দার, পরে তার দোকানে মোটরসাইকেলে এসে লোকজন আবারও হুমকি দেয়।
গ্রেপ্তারের সময় ফরহাদ হোসেন ‘মেজরের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ বলে মসজিদের মাইক ব্যবহার করে গুজব ছড়ান, যা পরে পুলিশ মাইকিং করে মিথ্যা প্রমাণ করে।
এছাড়া, সম্প্রতি এক নারী নেত্রীর বোনকে ইভটিজিং নিয়ে উত্তেজনার সময় মেজর হায়দার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, মেজর হায়দার SS07 নামের একটি বাহিনী গঠন করে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে এলাকায় চলাফেরা করতেন এবং এনসিপির নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতেন। এমনকি এনসিপির ব্যানারে একাধিক জনসংযোগ কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করেন।
তবে এনসিপির ফরিদপুর জেলা সংগঠক মো. বায়োজিদ হোসেন জানান, “তিনি আমাদের দলের কেউ নন, শুধু প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।” একইভাবে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও তাকে তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন এবং তাকে “বাটপার প্রকৃতির” বলে অভিহিত করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জামিন পেলেন জবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আনোয়ারা বেগম
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আনোয়ারা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে কারাগারে পাঠান আদালত।
সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী। শুনানি শেষে সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তার জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের বয়স ৭০ বছর। তিনি ৩৫ বছর যাবৎ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক একজন নারী। তিনি অসুস্থ। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, তিনি জামিন পাওয়ার হকদার।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৫০০ টাকা মুচলেকায় অধ্যাপক আনোয়ারার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আনোয়ারা বেগমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বুধবার আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়।
সূত্রাপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটান।
এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় এই মামলা করেন।