সিদ্ধিরগঞ্জে ৪০ দিন ব্যাপী কোরআন তিলাওয়াতের আয়োজন
Published: 3rd, June 2025 GMT
মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক প্রকৌশলী সামসুল আলমের উদ্যোগে ৪০ দিন ব্যাপী খতমে কোরআন তিলওয়াতের আয়োজন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুর থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের দারুল কলাম মাদ্রাসায় এ কোরআন তিলাওয়াত শুরু হয়। যা ৪০ দিন ব্যাপী চলবে।
এ মহতি উদ্যোগ সম্পর্কে প্রকৌশলী সামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশের মানচিত্রের উপর বহুদলীয় গনতান্ত্রিক রাজনীতির জনক ছিলেন জিয়াউর রহমান। বাল্যকালে বাবার মুখে যখন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দেশ প্রেমের গল্প শোনতাম তখন থেকেই শহীদ জিয়ার আদর্শে অনুপ্রানিত হই এবং বিএনপির রাজনীতির যুক্ত হয়ে জনসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশটাকে নিজের সংসারের মত গড়েছিলেন। দেশের প্রত্যেক নাগরিককে তিনি পরিবারের সদস্যদের মতই ভালবাসতেন। এ দেশকে শিল্প-বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিক্ষা ও সভ্যতায় সমৃদ্ধর অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন এবং সেই পরিকল্পনায় তিনি কাজ করতেন। যার কারণে তাকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সামগ্রিক অগ্রগতি বন্ধ করে দেশকে নেতৃত্ব শুন্য করে রাষ্ট্রটাকে স্বৈরাচারের কারাগারে রূপান্তর করা হয়।
এসময় তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নির্ভীক, নির্মোহ ও দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রূহের মাগফেরাত কামনায় ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায় ৪০ দিন ব্যাপী পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করেছি।
আমি দেশবাসীর কাছে বিনীত অনুরোধ করব, সকল মুসলিম ভাই-বোনেরা প্রতিদিন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করবেন। হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মের ভাই-বোনেরা নিজেদের মত করে প্রার্থনা করবেন।
কারণ তারেক রহমান কর্তৃক উপস্থাপিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা এবং তার বক্তৃতায় কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর থেকে শুরু করে সামগ্রিক ভাবে ১৮ কোটি বাঙালীর মনের কথাগুলো প্রতিধ্বনিত হয়। তার রাজনৈতিক দর্শন, প্রজ্ঞা, চিন্তা, চেতনায়, মনে-প্রানে ও অস্থিমজ্জায় নেলসন মেন্ডেলা, মাহাথির মোহাম্মদ এবং মার্টিন লুথার এর মত বিশ^সেরা রাষ্ট্রনায়কদের প্রতিবিম্ব দেখতে পাই।
এসময় তিনি আরো বলেন, বর্তমান বাংলাদেশের একমাত্র কান্ডারী তারেক রহমান যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্বৈরাচারের কারাগার থেকে বাঙালি জাতি মুক্তি পেয়েছে এবং তার নেতৃত্বেই এদেশে প্রকৃত গনতন্ত্র ও জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। যাদের রক্তের স্রোতের বিনিময়ে স্বাধীনতার পুন:জন্ম হয়েছে ২৪এর গনঅভ্যুত্থানের সেসকল শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ জ য় উর রহম ন ৪০ দ ন ব য প স দ ধ রগঞ জ ত র ক রহম ন র ষ ট রপত রহম ন র ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ
বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।
আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।
একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।
ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।
পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।
নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”
আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”
পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।