গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নিহত
Published: 28th, July 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ।
নিহতের পরিবারের দাবি, লালু-জুয়েল গ্রুপের লোকজন মান্ননকে হত্যা করেছে।
নিহত মান্নান গজারিয়া উপজেলার ইমামুপর ইউনিয়নের জৈষ্ঠিতলা নূর মোহাম্মদের ছেলে। তার নামে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে অপর ট্রাকের ধাক্কা, চালক নিহত
মেঘনায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে জেলের মৃত্যু, নিখোঁজ ১
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় একটি স্পিডবোটকে দেখতে পান তারা। স্পিডবোটে ৭ জন যুবক সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনার কিছু সময় পর ‘শুটার’ মান্নান, হৃদয় ও বাঘসহ সাতজন ইঞ্জিন চালিত একটি ট্রলার নিয়ে নদীতে নামেন। এসময় অন্য একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে থাকা ১৫-১৬ জন পেছন থেকে তাদের ধাওয়া দেন। তাদের সবার হাতে অস্ত্র, মাথায় হেলমেট, গায়ে জ্যাকেট ছিল।
কিছু সময় পরে তারা কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। এসময় মান্নানের ট্রলারে থাকা ব্যক্তিরা নদীতে ঝাপ দেন। পরে হামলাকারীরা ট্রলার ও স্পিডবোট নিয়ে চাঁদপুরের দিকে চলে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ বলেন, “কে কাকে গুলি করছে জানি না, তবে আমরা অনেকগুলো গুলির শব্দ পেয়েছি। পরবর্তীতে শুনতে পাই, একজনকে গুলি করে হত্যা করে তার লাশ ট্রলারের উপর রেখে গেছে হামলাকারীরা।”
নিহত মান্নানের স্ত্রী সুমি বেগম বলেন, “কয়েকদিন আগে মান্নান আমাকে বলেছিল, হোগলাকান্দির গ্রামের লালু, জুয়েল তাকে মেরে ফেলতে চায়। তারা তাকে হত্যা করতে পেশাদার অস্ত্রবাজ ভাড়া করেছে। আজ সকালে আমরা খবর পেলাম, মান্নানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি জানি লালু, জুয়েল এবং তাদের ভাড়াটে খুনিরা তাকে (মান্নান) হত্যা করেছে। আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করব। আমি এর বিচার চাই।”
ঘটনাস্থলে গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নিহতের বুকে দুইটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসছেন।”
গজারিয়া থানার ওসি মো.
ঢাকা/রতন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস