মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় প্রতিপক্ষের গুলিতে ‘শুটার’ মান্নান নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে নৌ পুলিশ।

নিহতের পরিবারের দাবি, লালু-জুয়েল গ্রুপের লোকজন মান্ননকে হত্যা করেছে। 

নিহত মান্নান গজারিয়া উপজেলার ইমামুপর ইউনিয়নের জৈষ্ঠিতলা নূর মোহাম্মদের ছেলে। তার নামে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে।

আরো পড়ুন:

দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে অপর ট্রাকের ধাক্কা, চালক নিহত

মেঘনায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে জেলের মৃত্যু, নিখোঁজ ১

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় একটি স্পিডবোটকে দেখতে পান তারা। স্পিডবোটে ৭ জন যুবক সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনার কিছু সময় পর ‘শুটার’ মান্নান, হৃদয় ও বাঘসহ সাতজন ইঞ্জিন চালিত একটি ট্রলার নিয়ে নদীতে নামেন। এসময় অন্য একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে থাকা ১৫-১৬ জন পেছন থেকে তাদের ধাওয়া দেন। তাদের সবার হাতে অস্ত্র, মাথায় হেলমেট, গায়ে জ্যাকেট ছিল। 

কিছু সময় পরে তারা কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পান। এসময় মান্নানের ট্রলারে থাকা ব্যক্তিরা নদীতে ঝাপ দেন। পরে হামলাকারীরা ট্রলার ও স্পিডবোট নিয়ে চাঁদপুরের দিকে চলে যায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ বলেন, “কে কাকে গুলি করছে জানি না, তবে আমরা অনেকগুলো গুলির শব্দ পেয়েছি। পরবর্তীতে শুনতে পাই, একজনকে গুলি করে হত্যা করে তার লাশ ট্রলারের উপর রেখে গেছে হামলাকারীরা।”

নিহত মান্নানের স্ত্রী সুমি বেগম বলেন, “কয়েকদিন আগে মান্নান আমাকে বলেছিল, হোগলাকান্দির গ্রামের লালু, জুয়েল তাকে মেরে ফেলতে চায়। তারা তাকে হত্যা করতে পেশাদার অস্ত্রবাজ ভাড়া করেছে। আজ সকালে আমরা খবর পেলাম, মান্নানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “আমি জানি লালু, জুয়েল এবং তাদের ভাড়াটে খুনিরা তাকে (মান্নান) হত্যা করেছে। আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করব। আমি এর বিচার চাই।”

ঘটনাস্থলে গজারিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নিহতের বুকে দুইটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা আসছেন।”

গজারিয়া থানার ওসি মো.

আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “নিহত মান্নান গজারিয়া উপজেলার একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। অস্ত্র চালনায় বিশেষ পারদর্শী হওয়ার কারণে তিনি স্থানীয়দের কাছে শুটার মান্নান নামে পরিচিত। তার নামে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে।”

ঢাকা/রতন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ

বর্ণাঢ্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকেই কলেজ প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন আর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে। আনন্দ, উচ্ছ্বাস,ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে দিনব্যাপী এই আয়োজনে নবাগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়। 

কলেজ প্রাঙ্গণজুড়ে ছিল বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রধান ফটক থেকে শুরু করে একাডেমিক ভবন সব জায়গায় করা হয়েছে রঙিন সাজসজ্জা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই পার করেছে এক আনন্দমুখর সময়। 

অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ করা হয়।

আলোচনা পর্বের বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলো আজ। নিয়মিত অধ্যয়ন, নৈতিকতা ও মানবিক গুণাবলির সমন্বয়ে তোমরাই আগামী দিনের আলোকবর্তিকা।

নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ শুধু শিক্ষার নয়, শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। নবীনদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন শুধু ভালো ফলই না করে, বরং সৎ, ন্যায়ের পক্ষে ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”

দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুগ্ধতা ছড়ায় শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, আবৃত্তি, রম্য বিতর্ক ও ফ্যাশন শো যা অনুষ্ঠানকে আরও প্রানবন্ত করে তোলে।  দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্রি আবৃত্তি করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় কবিতা ‘বোঝাপড়া’।

একাদশ শ্রেণির ঊর্মি ও মাহী পরিবেশন করে দ্বৈত নৃত্য, যা উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে মুখরিত করে তোলে সমগ্র অনুষ্ঠানস্থল।

ডিবেটিং ক্লাবের সদস্যরা পরিবেশন করেন রম্য বিতর্ক “আমার দেশে আমিই সেরা” যেখানে রসিকতা ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপে হাস্যরসের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ঊর্মি ও তিশার দ্বৈত নৃত্য অনুষ্ঠানে বিশেষ নজর কাড়ে। 

অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ফ্যাশন শো। এ বছরের থিম ছিল— “সমাজে প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অবস্থান”। শিক্ষার্থীরা পোশাক ও উপস্থাপনার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন সমাজের প্রান্তিক নারীদের সংগ্রাম, আত্মমর্যাদা ও জীবনের বাস্তব চিত্র।

পোশাকের নকশা, রঙ ও ভাবনায় ফুটে ওঠে নারীর শক্তি, সাহস ও সমতার বার্তা। দর্শক ও অতিথিরা প্রশংসা করেন শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সচেতন চিন্তাধারা।

নবীন শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। একাদশ শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম মালিহা বলেন, “আজকের দিনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় দিন। কলেজের পরিবেশ, শিক্ষকদের আন্তরিকতা এবং সিনিয়রদের ভালোবাসা আমাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। মনে হচ্ছে আমি সত্যিই নতুন জীবনের এক সুন্দর অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি।”

আরেক নবীন শিক্ষার্থী তাবাসসুম তিথি বলেন, “আজ আমাদের কলেজে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো। নতুন বন্ধুদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং এত সুন্দর আয়োজনের অংশ হতে পারা সত্যিই আনন্দের।”

পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের সাংস্কৃতিক দলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে সহযোগিতা করে বিএনসিসি ও গার্ল গাইডের সদস্যরা।

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবেরা তাহমিনা, অতিথি হিসেবে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফজলুল হক রুমন রেজা, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও মানবাধিকার বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর ড. সেলিনা আক্তার, একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমানসহ মহিলা কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর জানাযায় মতি, কান্নাজড়িত কণ্ঠে চাইলেন ক্ষমা
  • সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
  • কষ্টি পাথরের শিবলিঙ্গসহ গ্রেপ্তার ৩
  • ১২ ও ১৩ নং ওয়ার্ডের পোলিং এজেন্টদের নিয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত 
  • রূপগঞ্জে ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষে লিফলেট বিতরণ 
  • উৎসবমুখর পরিবেশে নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে নবীন বরণ
  • নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে নবীন বরণ