পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধের ২০০ মিটারের মতো অংশ পদ্মায় ধসে পড়েছে। আজ শনিবার সকালে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় ওই ভাঙন হয়। এমন পরিস্থিতিতে বাঁধের আশপাশ থেকে দুটি দোকান ও তিনটি বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর প্রকল্প এলাকা নদীভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে সেতু থেকে ভাটির দিকে (পূর্ব দিকে) ২ কিলোমিটার এলাকায় ১১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ওই বাঁধের সঙ্গে পরে নদীশাসনের বাঁধ সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। গত বছর নভেম্বর মাসে নাওডোবার জিরো পয়েন্ট এলাকায় ওই বাঁধের ১০০ মিটার অংশ নদীতে ধসে যায়। এরপর মাঝিরঘাট এলাকায় আরও ১০০ মিটার অংশে বাঁধের নিচ থেকে মাটি সরে যায়।

পাউবো সূত্র জানায়, গত বছর নভেম্বরে বাঁধ ভাঙনের পর সমীক্ষা চালায় পাউবো ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)। এতে দেখা যায় এক কিলোমিটার অংশে বাঁধের কাছে নদী গভীর। সেখানে তলদেশ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। আর বাকি এক কিলোমিটার অংশের বাঁধের কাছে নদী চলে এসেছে। সেখানেও মাটি ভেঙে নদীতে পড়ছে। তখন পাউবো বাঁধের ভেঙে পড়া অংশে সংস্কারের কাজ শুরু করে। গত মে মাসে জিরো পয়েন্ট এলাকার ১০০ মিটার অংশে বালুভর্তি ৩৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়।

আজ শনিবার ওই স্থানের কাছে নতুন করে ভাঙন দেখা দেয়। সকালে ২০০ মিটারের মতো অংশ নদীতে ধসে পড়ে। ভাঙনের কারণে বাঁধের পাশের দেলোয়ার হোসেন মাদবর, হাদি শেখ ও রুবেল খানের বসতবাড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুটি দোকানও সরিয়ে নেওয়া হয়।

হাদিস শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁধটির কারণে আমরা নিরাপদে ছিলাম। নিশ্চিন্তে নদীর তীরে বসবাস করেছি। গত বছর যখন বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়,  তখন থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। আজ বসতঘর সরিয়ে নিতে হয়েছে। আশপাশে জায়গা না পাওয়ায় পাশের ফরাজী কান্দি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছি।’

পাউবোর শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধটির কিছু অংশ ভাঙনকবলিত হওয়ায় আমরা সংস্কারের কাজ শুরু করেছিলাম। এর পাশে উজানের দিকে বাঁধের কিছু অংশ আজ হঠাৎ করে ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। বাঁধটি রক্ষার জন্য দু-এক দিনের মধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক য় ট এল ক

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুরে হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার: পুলিশ

রংপুরের গঙ্গাচড়ার আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামে ধর্ম অবমাননাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

আজ বুধবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা জানানো হয়।

আরও পড়ুনরংপুরে হামলার দুই দিন পরও মামলা হয়নি, প্রশাসনের উদ্যোগে বসতবাড়ি মেরামত২২ ঘণ্টা আগে

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় গঙ্গাচড়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে যৌথ অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আলদাদপুর গ্রামটি হিন্দু অধ্যুষিত। এটি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের সীমানা লাগোয়া। গঙ্গাচড়া থানা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার গ্রামটির এক কিশোর ফেসবুকে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর লেখা ও ছবি পোস্ট করেছে, এমন অভিযোগ পায় পুলিশ। পরে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আটক করে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে থানায় আনা হয়। সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করে পরদিন রোববার দুপুরে ওই কিশোরকে আদালতের মাধ্যমে সম্মিলিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুনগঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা মানবাধিকারের লঙ্ঘন, বিচার দাবি১৪ ঘণ্টা আগে

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরকে থানায় নেওয়ার পর তার বিচারের দাবিতে মিছিলসহ উত্তেজিত লোকজন শনিবার তার বাড়ির সামনে যায়। রাত ১০টার দিকে দ্বিতীয়বার আরেকটি মিছিল এসে কিশোরের এক স্বজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করে। পরে রাতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন২২টির মধ্যে ১৯টি পরিবার বর্তমানে নিজেদের বাড়িতে আছে: জেলা প্রশাসক২৯ জুলাই ২০২৫

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উত্তেজিত জনতা আবারও বাড়িঘরে হামলা শুরু করলে পুলিশ তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। এতে পুলিশের একজন কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের হিসাবে, এ ঘটনায় ১৫টি বসতঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।

আরও পড়ুনরংপুরে হামলার শিকার পরিবারগুলো আতঙ্কে, বাড়ির মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে২৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রংপুরে হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার: পুলিশ
  • রংপুরে হামলার দুই দিন পরও মামলা হয়নি, প্রশাসনের উদ্যোগে বসতবাড়ি মেরামত