এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ দুরভিসন্ধিমূলক: এমরান সালেহ প্রিন্স
Published: 9th, June 2025 GMT
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেছেন, বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল প্রধান উপদেষ্টার সামনেই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করেছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিলের প্রথমার্ধ্বে নির্বাচনের যে সময়সীমা উল্লেখ করেছেন, তা জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। জনগণ তথা রাজনৈতিক দলের মতামতকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করে এপ্রিলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ দূরভিসন্ধিমূলক ও স্বৈরাচারী মনোবৃত্তির পরিচয় বহন করে। কেন প্রধান উপদেষ্টা বা অন্তর্বর্তী সরকার এপ্রিলে নির্বাচন দিতে চায় তা উল্লেখ করেন নাই। তিনি বলেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে এক মাসের মধ্যে সংস্কার করে অবলীলায় ডিসেম্বরের আগেই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব। রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপিও যেনতেন নির্বাচন চায় না। বিএনপি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সমর্থন যাচাই করতে চায়। জনগণের আস্থা ও রায় নিয়ে জনগণের সেবা করতে চায়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তিন মাসের মধ্যেই অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেখানে গ্রহণযোগ্য নিরপেক্ষ নির্বাচন অয়োজন করেছে, সেখানে তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পার করেও ড.
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, সরকারের ভেতর ও বাইরে কয়েকটি স্বার্থান্বেষী মহল ড. ইউনূসকে ব্যবহার করে নির্বাচন অনিশ্চিত করতে যড়যন্ত্র করছে। তিনিও তাদের প্ররোচণায় সম্প্রতি কয়েকটি বিতর্কিত পদক্ষেপ নিয়ে নিজেও বিতর্কিত হচ্ছেন, যা বিএনপিসহ রাজনৈতিক দল ও জনগণর কাছে বিস্ময়কর। বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো তাঁর ওপর আস্থা রেখে তাঁর নেতৃত্বেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়েছে। কিন্তু তিনি বা তাঁর অন্তর্বর্তী সরকার কেন রাজনৈতিক দলকে অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করছে তা জাতি জানতে চায়।
ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক এনায়েত উল্লাহ কালাম, হালুয়াঘাট উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মোয়াজ্জেম হোসেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্য সচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হানিফ মোহাম্মদ শাকের উল্লাহ, সদস্য সচিব আবদুল আজিজ খান, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যন শাহ আফাজ উদ্দিন, ট্র্যাইবল ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি বিপুল হাজং, হালুয়াঘাট শাখার চেয়ারম্যন সুব্রত রেমা, প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র জন ত ক ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিসেম্বরে না হয়ে এপ্রিলে কেন নির্বাচন, বোধগম্য নয় বাম জোটের
জাতির উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণে সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি বলে মনে করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা বলেছে, ডিসেম্বরে না হয়ে এপ্রিলে কেন নির্বাচন, তা বোধগম্য নয়। ভাষণে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অভিলাষ ফুটে উঠেছে।
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে। জোটের নেতারা বলেন, রাখাইনকে করিডর, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টিনেন্টাল টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে এবং এ নিয়ে বিরোধিতাকারীদের নিয়ে ভাষণে যা বলা হয়েছে এবং যে সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন ঘোষণা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও জনস্বার্থে বিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানোর জন্য সব বাম-প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তির প্রতি আহ্বান জানায় বাম জোট। জোটের নেতারা বলেন, অধিকাংশ দল ও জনগণের মতকে উপেক্ষা করে বিশেষ দল-গোষ্ঠীর স্বার্থে এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার বিষয়ে যেসব কথার অবতারণা করেছেন, তা কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ গ্রহণ করতে পারে না উল্লেখ করে উদ্বেগ জানান বাম জোটের নেতারা। তাঁদের ভাষ্য, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণকারী আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা প্রকারান্তরে ‘মব সন্ত্রাস’কেই উসকে দিচ্ছে। সরকারের দায়িত্বপূর্ণ কোনো পদে থেকে এ ধরনের উসকানি জনগণ গ্রহণ করবে না; বরং প্রত্যাখ্যান করবে।
বাম জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক। এই বন্দর বিদেশিদের কাছে লিজ দেওয়ার অর্থ দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার ওপর আঘাত হানার পথ পরিষ্কার করা। ইতিমধ্যে দেশের বামপন্থী গণতান্ত্রিক দল ও দেশপ্রেমিক দলসমূহ সরকারের এই পদক্ষেপ রুখে দাঁড়াতে ২৭ ও ২৮ জুন ঢাকা-চট্টগ্রাম ‘রোড মার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। জোটের নেতা বলেন, এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কোনো হুমকিধমকি দিয়ে এই কর্মসূচি থেকে দেশপ্রেমিক জনগণকে পিছু হটানো যাবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঈদের আগে শ্রমজীবী মানুষ শ্রমিক-কর্মচারীরা অনেকে বেতন–ভাতা পাননি। ভাষণে বকেয়া বেতন-বোনাসের কোনো কথা নেই। এমনকি গত রোজার ঈদের সময় সরকার ও মালিকপক্ষ যে ওয়াদা করেছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সিপিবির সভাপতি মো. শাহ আলম, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।