প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াউটার ভ্যান ওয়ার্শ।

মঙ্গলবার লন্ডনের একটি হোটেলে এ সাক্ষাৎ হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এরআগে চার দিনের সরকারি সফরে সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সিনেমায় ফারিণ-সাবিলার শুভ সূচনা 

বছরের পর বছর ধরে ছোট পর্দায় তাদের সরব উপস্থিতি, নাটক আর ওটিটি কনটেন্টে অভিনয়ের মুনশিয়ানা, নতুন প্রজন্মের চোখে ভরসার নাম হয়ে উঠেছেন তাসনিয়া ফারিণ ও সাবিলা নূর। তবে এবারের ঈদুল আজহা যেন তাদের জন্য ছিল এক বিশেষ মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। পুরোপুরি বাণিজ্যিক সিনেমার নায়িকা হিসেবে পরিচিত হলেন তারা। 

ঈদুল আজহায় বড় পর্দায় একেবারে বাণিজ্যিক ঘরানার চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হলেন তাসনিয়া ফারিণ ও সাবিলা নূর। একদিকে সাবিলা অভিষেক করলেন রায়হান রাফীর আলোচিত ছবি ‘তাণ্ডব’-এ, যেখানে তাঁর বিপরীতে আছেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান। অন্যদিকে ফারিণ, যিনি প্রথমবারের মতো পুরোপুরি কমার্শিয়াল সিনেমায় এলেন সঞ্জয় সমদ্দার পরিচালিত ‘ইনসাফ’-এ। যেখানে তাঁর সহশিল্পী শরিফুল রাজ। রূপালি জগতে এই দুইয়ের অভিষেক যেন সমসাময়িক ঢাকাই সিনেমায় দুই ভিন্ন স্বাদের সংযোজনই ঘটল। 

সাবিলা হয়ে উঠলেন পুরোদস্তুর নায়িকা

তাণ্ডব সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে সাবিলা নূর থাকছেন কি থাকছেন না, তা নিয়ে চর্চা ছিল অনেক। গণমাধ্যমে নিউজও হয়েছে। কিন্তু সাবিলা ছিলেন নিশ্চুপ। মূলত প্রযোজনা সংস্থার নিষেধাজ্ঞা থাকাতেই মুখ খোলা হয়নি তাঁর। এ ছাড়া সাবিলা নিজের কাছেও বিষয়টি এক প্রকার ঘোরের মতোই মনে হয়েছে। বহু নাটকের এই অভিনেত্রীর বড় পর্দায় এভাবে, দেশসেরা নায়কের বিপরীতে সিনেমায় অভিষেক, এত বড় আয়োজনে শুটিংয়ে অংশ নেওয়া, সব যেন পরিকল্পনার বাইরেই ছিল। কিন্তু জীবনের সবকিছু তো আর পরিকল্পনামাফিক হয় না। সাবিলার বেলায়ও হয়নি। তাই অপরিকল্পিতভাবেই হয়ে উঠলেন এবারের ঈদুল আজহার অন্যতম চর্চিত নায়িকা। সিনেমা মুক্তির আগেই ‘লিচুর বাগানে’ গান দিয়ে আলোচনায় এলেন তিনি। সাবিলাকে কেন্দ্র করে এই গানের ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। হাস্যোজ্জ্বল, প্রাণবন্ত সাবিলা যেন গানটির প্রতিটি বিটে দর্শকের হৃদয় ছুঁয়েছেন। দর্শকের মুখে মুখে ফিরছে গানটির কথা। 

সাবিলা নূর বললেন, ‘তাণ্ডব সিনেমা দিয়ে প্রথমবার শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করা। প্রথমবার রায়হান রাফীর পরিচালনায় অভিনয় করলাম। প্রথমবার সিনেমার জন্য এভাবে নাচ করেছি। আমি মনে করি, আমি খুবই লাকি। আমার আসলে খুব বেশি মানসিক চাপ নিতে হয়নি। কারণ, আমি এত সুন্দর একটা টিম পেয়েছি। বিশেষ করে আমার নির্মাতা রায়হান রাফী শুরুতেই সহায়তা করেছিলেন আমার চরিত্র নিয়ে ভাবার।’

ঈদের সকালে সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকেরা অবাক হয়েছেন তার উপস্থিতি দেখে। সাবিলা বরাবরই ক্যামেরার সামনে সাবলীল, কিন্তু এই সিনেমায় এসে যেন নিজের গণ্ডি ভেঙে নতুন এক সাবিলাকে তুলে ধরেছেন। চরিত্রে তাঁর আত্মবিশ্বাস, পর্দায় তাঁর সৌন্দর্য– সব মিলিয়ে সাবিলা হয়ে উঠেছেন বাণিজ্যিক সিনেমার পুরোদস্তুর নায়িকা।

ইনসাফের অনবদ্য ফারিণ

ইনসাফ সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে একেবারেই আলাদা এক ঢঙে উপস্থাপন করেছেন তাসনিয়া ফারিণ। টেলিভিশনের নাটকে সংবেদনশীল ও জটিল চরিত্রে বারবার নিজের সক্ষমতা প্রমাণ করেছেন তিনি। সেই ফারিণ এবার নাচলেন আইটেম গানে, নাচালেন অন্যদেরও। আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটাইরে... মিলার কণ্ঠের  এই আইটেম গানে ফারিণকে একবারের জন্যও মনে হয়নি প্রথমবার এমন গানে পারফর্ম করলেন।  শুধুই কি গানে! ফারিণের চরিত্র নিয়ে তৃপ্ত দর্শকরাও। সিনেমায় ফারিণকে দেখে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন দর্শক। সিনেমাটিতে ফারিণ যেন কোনো ভান ছাড়াই চরিত্রে প্রাণ দিয়েছেন। এই সিনেমা প্রমাণ করেছে, তিনি শুধু ওটিটি বা নাটকের শিল্পী নন; বরং বড় পর্দায়ও তাঁর জায়গা অনেক প্রশস্ত।

এর আগে কলকাতায় ‘আরও এক পৃথিবী’ এবং বাংলাদেশে ‘ফাতিমা’ নামে দুটি ভিন্ন ধারার গল্পের ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তাসনিয়া ফারিণ। কিন্তু ইনসাফ পুরোপুরি বাণিজ্যিক ধারার সিনেমা। তবে এ ধরনের সিনেমা এটাই শেষ নয় ফারিণের। বললেন, ইচ্ছে আছে এবার অনেক সিনেমা করব, ইনসাফ করে থেমে যাব না।  থেমে যাওয়ার কথাও না। হল থেকে বের হয়ে যেভাবে দর্শকরা ফারিণের চরিত্র ও তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করছেন তাতে থেমে যাওয়ার কারণও নেই। 

ফারিণ আরও বলেন, ‘আমি নিজেকে সব সময় ভিন্ন জায়গায় নিতে চেয়েছি। এখন আমার ধ্যান-জ্ঞান সিনেমা। সেই জায়গা থেকে মনে হয়েছে ‘ইনসাফ’ আমাকে ভিন্ন একটি জায়গা তৈরি করে দিতে সহায়তা করবে। তাই এই সিনেমায় যুক্ত হয়েছিলাম। এখন দর্শকদের ভালোবাসায় মনে হয়েছে আমি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি।’

দুই অভিনয়শিল্পীর অভিষেকেই একটা বিষয় স্পষ্ট– তারা কেউই হঠাৎ করে এ আসরে নামেননি। নাটক, ওটিটি কিংবা স্বল্পদৈর্ঘ্য কনটেন্ট– সব জায়গায় নিজেদের প্রস্তুত করেছেন, নিজেকে গড়েছেন ধৈর্য্য ও নিষ্ঠায়। ফলে বড় পর্দার ভাষা, কাঠামো কিংবা গ্ল্যামারের জগতে এসে তারা আলাদা করে নিজেকে প্রমাণের চেষ্টা করছেন না; বরং স্বাভাবিক গতিতেই হয়ে উঠছেন গ্রহণযোগ্য। তাই তাদের জন্য এই ঈদ শুধু উৎসব নয়, দুই প্রতিভাবান অভিনেত্রীর বড় স্বপ্নের প্রথম সিঁড়ি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ