গ্রীষ্মের এই শেষভাগে এসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। বেলা গড়ানোর পর থেকেই রোদের প্রচণ্ড তাপে বাড়ছে গরমের অনুভূতি। এর ফলে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন বাইরে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে ঈদ শেষে ঢাকায় ফেরা মানুষ বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গরমের আঁচ বুধবার থেকে কমে আসতে পারে। 

অবশ্য তাপমাত্রা কমলেও ভ্যাপসা গরমের জন্য অস্বস্তি থেকে রেহাই নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মো.

ওমর ফারুক। এর মধ্যে থেমে থেমে বৃষ্টিও ঝরবে বলে জানিয়েছেন এই আবহাওয়াবিদ। 

তিনি বলেন, মঙ্গলবার দেশের চারটি বিভাগ এবং ৬টি জেলায় মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। বুধবার থেকে তাপপ্রবাহের বিস্তার কমে আসবে৷ তবে, গরমের তেজ কমে ৩৬ ডিগ্রির নিচে নামলেও অস্বস্তিকর অবস্থাটা থাকবে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে আবহাওয়াবিদ ফারুক বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি আছে, যে কারণে এই অস্বস্তিকর গরমটা থাকবে। চলতি মাসের ১৬-১৭ তারিখের দিকে এই অবস্থাটা কাটতে পারে৷

বৃষ্টিপাত কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুধবার থেকে বৃষ্টিপাত একটু বাড়বে। তবে, সেটাও অল্প। হয়ত দিনের একটা সময় বৃষ্টি হবে। এরপর থেমে গিয়ে অস্বস্তিকর অবস্থাটা থাকবে। একনাগাড়ে হবে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। যে কারণে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কম। ফরিদপুর, মাদারীপুর, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ফেনী ও পটুয়াখালী জেলাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। 

মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় নীলফামারীতে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় ঢাকায় ছিল ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা গেছে রাঙামাটিতে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়ায়; ২৪ মিলিমিটার। এছাড়া, চট্টগ্রামে ১৮ মিলিমিটার, শ্রীমঙ্গলে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ঈদের পর থেকেই সারা দেশে বেড়েছে গরম। সাথে বাড়তি আর্দ্রতা আর লোডশেডিং, বাড়িয়েছে ভোগান্তি। সব মিলিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। গরমে সবচেয়ে বেশি বিপাকে শ্রমজীবী মানুষ। রোদ উপেক্ষা করেই অনেকে নেমে পড়েন কাজে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের‌ রিকশাচালক আব্দুর রহমান বলেন, ‘গরম লাগে, অসুস্থ লাগে, ক্লান্ত লাগে, যাত্রীও কম। রোদে অনেক কষ্ট করছি আমরা। আয় রোজগারও কমে গেছে।’
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গরম গরম র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ