Samakal:
2025-11-03@05:59:53 GMT

যমুনায় বিলীন বিদ্যালয়

Published: 10th, June 2025 GMT

যমুনায় বিলীন বিদ্যালয়

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে একটি বিদ্যালয় যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন এ ঘটনার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতিকে দায়ী করছেন। 
গত শনিবার ঈদের দিন দুপুরে উপজেলার বাঁচামারা ইউনিয়নের ভাড়াঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনসহ একটি ওয়াশব্লক যমুনায় বিলীন হয়ে যায়। ২০২২ সাল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি নদীভাঙনের মুখে পড়লেও ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১ কোটি ৮ লাখ টাকার। 
বাঁচামারা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ওয়াজেদ আলী জানান, গত কয়েক বছর ধরেই বিদ্যালয়টি যমুনার ভাঙনের কবলে পড়ে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নামমাত্র বালুর বস্তা ফেলেছে। ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যেই স্থানীয়দের বাধার মুখে ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ে একটি ওয়াশব্লক নির্মাণ করা হয়। পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসন সঠিক সময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদ্যালয়টি রক্ষা করা যায়নি। 
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামাল পাশা জানান, তিন বছর ধরে বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল। শুক্রবার বিদ্যালয়ের একটি অংশ নদীতে ধসে পড়ে যায়। ঈদের দিন দুপুরে পুরো ভবনটি নদীতে চলে যায়। বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হওয়ার আগেই বেঞ্চ, টেবিল ও আসবাবপত্র রক্ষা করা গেছে। ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে থাকার কারণে বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ২ জন শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষার্থী নেই। বিদ্যালয়ে মাত্র ৩ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিআরডি) দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী খন্দকার এনামুল সালেহীনের ভাষ্য, বিদ্যালয়টি যখন নির্মাণ করা হয়েছিল তখন যমুনা নদী অনেক দূরে ছিল। কিন্তু বিদ্যালয় নির্মাণ শেষ হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে বিদ্যালয়ের কাছে চলে আসে। পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে প্রতিবছর ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ফেলা হয়। এবার দ্রুত ভাঙনের কারণে বিদ্যালয় ভবনটির নিলাম ডাকার আগেই নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
নদীতে বিলীন হওয়ার আগে বিদ্যালয়টি নিলামে বিক্রি করা হলে সরকারি কোষাগারে কিছু টাকা জমা হতো। কেন বিলীনের আগেই বিদ্যালয়টির নিলাম করা হলো না– এমন প্রশ্নের জবাবে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান নুরেন বলেন, দুই-তিন মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। কিন্তু দ্রুত ভাঙনের  িকারণে নিলাম হওয়ার আগেই বিদ্যালয়টি নদীতে ভেসে যায়। 
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, ১৯৯৬ সালে যমুনা নদীর পাড়ে চর জেগে ওঠে। চরের দুই পাড়েই যমুনা নদী। ১৯৯৮ সালের দিকে ওই চরে জনবসতি গড়ে ওঠে। এ ধরনের চরে কোনো স্থাপনা করতে হলে কারিগরি সমীক্ষার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অন্তর্ভুক্ত করে মতামত নেওয়া উচিত। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। ২০২২ সাল থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষায় প্রতিবছর বালুর বস্তা ডাম্পিং করা হয়। বিদ্যালয়ের পাশে নদীতে পর্যাপ্ত বালুর বস্তা ছিল। কিন্তু এবার ভাঙন শুরু হয় অন্য দিক দিয়ে। এতে বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে সুড়ঙ্গ হয়ে মাঝখানে বালু সরে গিয়ে এক দিনের মধ্যেই বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ই ব দ য লয়ট ব ল র বস ত ব ল ন হয় র আগ ই হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।

নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।

ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।

ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।

মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড়ে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালু করতে তহবিল গঠন, ১০ লাখ টাকা দিল জামায়াত
  • কুয়ালালামপুরে পেট্রোনাস টাওয়ার ৩–এ আগুন
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত