বিশ্বকাপে জায়গা করে গাড়ি উপহার পেলেন উজবেকিস্তানের ফুটবলাররা
Published: 12th, June 2025 GMT
ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো ফিফা বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে উজবেকিস্তান। এমন ঐতিহাসিক অর্জনের পর দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। বিশেষ করে কাতারের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় নিশ্চিত করার পর তাশখন্দের মিল্লি স্টেডিয়ামে দেখা যায় ব্যতিক্রমী এক উদযাপন।
ম্যাচ শেষে মাঠে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করানো হয় বিলাসবহুল বিওয়াইডি ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক গাড়ি। সেখানেই জাতীয় দলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের হাতে তুলে দেওয়া হয় গাড়িগুলোর চাবি। এই ব্যতিক্রমী সম্মাননা প্রদান করেন উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিয়োয়েভ। আগেই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলে জাতীয় দলের সদস্যদের দেওয়া হবে বিশেষ পুরস্কার। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৩০ থেকে ৪০টি নতুন গাড়ি তুলে দেওয়া হয় খেলোয়াড়দের হাতে।
পুরো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি ও গণমাধ্যম। স্টেডিয়ামের ভেতর গাড়িগুলোর সারি ও চাবি তুলে দেওয়ার দৃশ্য ছিল উজবেকিস্তান ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত। অনেকে একে আখ্যা দিয়েছেন 'স্বপ্নপূরণের ক্ষণ' হিসেবে।
The president of Uzbekistan, Shavkat Mirziyoyev honored his national football team players with a brand new BYD electric car after the team secured their first-ever qualification for the FIFA World Cup with a 0–0 draw against the UAE in Abu Dhabi.
Wow! ???????? pic.twitter.com/lC2L5oOnSJ — Dagashotz (@DagaShotz) June 11, 2025
শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট মিরজিয়োয়েভ জাতীয় দলের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় পদক, সনদ ও সম্মানসূচক উপাধিতে ভূষিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। দলের কোচ তিমুর কাপাদজে বলেন, 'এই অর্জন শুধুমাত্র আমাদের না, পুরো জাতির। এই জয় আমরা দেশের জনগণ ও প্রেসিডেন্টকে উৎসর্গ করছি।'
প্রসঙ্গত, ২০২৬ সালের ফিফা বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করবে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। প্রথমবারের মতো ৪৮টি দেশ অংশ নেবে এই আসরে, যা নতুন দলগুলোর জন্য দিয়েছে বড় সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে উজবেকিস্তান তাদের ফুটবল ইতিহাসে যোগ করেছে এক গৌরবময় অধ্যায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উজব ক স ত ন ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান জৌপারী
২০১০ সালে ঢাকায় এসেছেন বান্দরবানের মেয়ে জৌপারী লুসাই। পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন, ঘুণাক্ষরেও অভিনয়ে আসার কথা ভাবেননি। ২০১২ সালে এনটিভির টেলিফিল্ম শেষ বলে কিছু নেই দিয়ে প্রথমবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান জৌপারী। তখন বিএএফ শাহীন কলেজে পড়তেন। এক বন্ধুর কাছে শুনলেন টেলিফিল্মে এক কিশোরী চরিত্রের জন্য শিল্পী খুঁজছেন নির্মাতা মেজবাউর রহমান। পরে অডিশন দিয়ে টিকে যান।
নিজেকে প্রথমবার ছোট পর্দায় দেখে রীতিমতো আপ্লুত হয়েছিলেন। সেই সময়ের অনুভূতিকে অনেকটা ‘প্রথম প্রেমে পড়ার’ মতো বললেন এই তরুণ অভিনেত্রী। টেলিফিল্মটি প্রচারের পর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছিলেন, যেটি তাঁকে অভিনয়ে অনুপ্রাণিত করেছে।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’ থেকে ‘আমি বীরাঙ্গনা বলছি’
আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের আলোচিত সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এ মিমি চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন জৌপারী। এটি ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খেলনাছবির বিজ্ঞাপন করেছিলাম, সেখানে নির্মাতা সাদ ভাইও ছিলেন।’ খেলনাছবির সূত্র ধরেই সিনেমাটিতে কাজের সুযোগ পান তিনি। ২০১৭ সালে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন, ২০১৮ সালে শুটিং করেন।
জৌপারী লুসাই বলেন, ‘সিনেমাটি করার আগে অভিনয় নিয়ে খুব একটা বুঝতাম না। সিনেমাটি করার পর অভিনয়কে সিরিয়াসলি নিই। তখন মনে হয়েছিল অভিনয় চালিয়ে যাব। সঙ্গে অভিনয় শিখবও।’
বঙ্গ অরিজিনাল সিরিজ বিএনজি-তে অভিনয় করে তরুণ দর্শকের কাছে পৌঁছেছেন জৌপারী। আরেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সারভাইভ-এও মূল চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। তিনি বলেন, ‘বিএনজি ও সারভাইভ দুটি কাজের জন্যই খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। দুটি কাজ দেখে অনেকে আমাকে চিনেছেন।’
প্রায় এক যুগের ক্যারিয়ারে কোন কাজটিকে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ বলবেন? জৌপারী বলেন, ‘আসলে এটা আমার পক্ষে বলা কঠিন। প্রতিটা কাজই মন থেকেই করি। আমি কাজ করে যেতে চাই, কাজটাকে ভালোবাসি।’
এর মাঝে অভিনয়ে নিজেকে শাণিত করতে নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদের কর্মশালায় অংশ নেন জৌপারী। জামিল আহমেদ নির্দেশিত আমি বীরাঙ্গনা বলছি-এ একজন নির্যাতিতা পাহাড়ি নারীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।
‘পারফেক্ট ওয়াইফ’ ইরা
২২ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া চরকির ফ্ল্যাশ ফিকশন পারফেক্ট ওয়াইফ-এ একজন জাপানি তরুণী ইরার চরিত্রে অভিনয় করেছেন জৌপারী। ফিকশনটি পরিচালনা করেছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম। ফিকশনটি মুক্তির পর ভালো সাড়া পাচ্ছেন জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমার পরিচিতদের মধ্যে যাঁরা কাজটা দেখেছেন, তাঁরা সবাই চরিত্রটা পছন্দ করেছেন। অনেকে বলেছেন, তুমি রোবট না মানুষ।’
সেলিমের পরিচালনায় এবারই প্রথম কাজ করেছেন তিনি। কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো। কারণ, উনি আসলে অ্যাক্টিংটাকে দারুণভাবে ডিল করেন। খুবই আরাম করে আমি কাজ করেছি। অভিনয়ের ক্ষেত্রে পরিচালক অনেক ম্যাটার করে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ যে রকম আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে ইচ্ছা তুমি করো, ঠিক একইভাবে আমি বলব যে এই চরিত্রটা (ইরা) করতে গিয়ে আমি আমার মনে হয়েছে যে আমি আরও বেশি এনজয় করেছি।’
সব মাধ্যমে কাজ করতে চান
ওটিটি, প্রেক্ষাগৃহের সিনেমা থেকে টিভি নাটক—সব মাধ্যমেই কাজ করেছেন জৌপারী। তিনি বলেন, ‘টিভি হোক, ওটিটি হোক কিংবা সিনেমা—সব মাধ্যমেই অভিনয় করতে চাই।’
ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা রেহানা মরিয়ম নূর-এর পর আর কোনো সিনেমা মুক্তি পায়নি। মাঝে এনামুল করিম নির্ঝরের একটি সিনেমার কাজ শেষ করেছেন, তবে সিনেমাটি এখনো মুক্তি পায়নি।
অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে চান জানিয়ে জৌপারী বলেন, ‘আমি অভিনয়ের কোন স্টেজে আছি, জানি না। তবে অভিনয়টা আমার প্রফেশন। আমার প্যাশনের জায়গাও। আমি এটা সারা জীবন করে যেতে চাই।’
সামনে কী করছেন? তিনি বলেন, এখনো কোনো কাজ চূড়ান্ত হয়নি, তবে কিছু কাজের কথাবার্তা চলছে। যদি সবকিছু কনফার্ম হয়, তাহলে তো সামনের বছর দেখা যেতে পারে।
জৌপারী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিডিয়া স্টাডিজ ও জার্নালিজমে পড়াশোনা করেছেন।