চুয়াডাঙ্গার বর্ষিয়ান নেতা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন (৭৯) মারা গেছেন।

শুক্রবার (১৩ জুন) সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে  তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না-লিল্লাহ রাজিউন। 

আজ শনিবার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় তার নিজের হাতে গড়া স্বপ্নের ফার্স্ট ক্যাপিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা নামাজ শেষে রেল স্টেশন রোডে জান্নাতুল মওলা কবর স্থানে তার দাফনকাজ সম্পন্ন হবে।  

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৫ মার্চ পৈতৃক নিবাস চুয়াডাঙ্গা জেলার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা শহরের আরাম পাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম মরহুম সিরাজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার এবং মাতা মরহুমা আছিয়া খাতুন। তিনি চুয়াডাঙ্গা ভি.

জে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে মেট্রিক পাস করে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে উচ্চতর শ্রেণিতে পড়াশোনা করেন।

পেশায় ব্যবসায়ী সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ছাত্রজীবন হতেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। যুবলীগ প্রতিষ্ঠার পর তিনি চুয়াডাঙ্গা মহকুমার সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৭৩ সালে চুয়াডাঙ্গা যুবলীগের সভাপতি, ৭৯ সালে আওয়ামী লীগের জেলা সেক্রেটারি ছিলেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি যুদ্ধকালীন সময়ে বীরত্বের পরিচয় দেন।

তিনি চুয়াডাঙ্গা রাইফেল ক্লাব, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, জেলা ক্রীড়া সংস্থার দীর্ঘ সময়ের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে দামুড়হুদার নাটুদহে তার ৮ সহযোদ্ধা যারা সম্মুখ সমরে শহীদ হন, তাদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ এবং স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করেন। এছাড়াও তিনি আলমডাঙ্গার লাল ব্রিজের কাছে বধ্যভূমিতে আরো একটা স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন। 

অপরদিকে চুয়াডাঙ্গায় জেলায় নানামুখী উন্নয়নসহ এতদাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষার দ্বার খুলে দিতে  চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সড়কে কয়েক একর জমির উপর প্রতিষ্ঠা করেন বেসরকারি ফার্স্ট ক্যাপিটাল বিশ্ববিদ্যালয়। 

তিনি দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় পর্যন্ত তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন।

৫ আগস্ট ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারত চলে গেলে ঐদিন বিকালে তার বাড়িতে হামলা অগ্নিসংযোগ হলে তিনি চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙ্গে দিলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।

বর্ষিয়ান এই নেতা পারিবারিক জীবনে আক্তারি জোয়ার্দ্দার মালাকে বিয়ে করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা তাবশিনা জান্নাত প্রথমা এবং বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।

ঢাকা/মামুন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কামরাঙ্গীরচরে বাবার ছুরিকাঘাতে ছেলে খুন

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে রাহাবুল ইসলাম (২৫) নামের এক হোটেল কর্মচারি খুন হয়েছেন। শনিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

কামরাঙ্গীরচর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ লুৎফর রহমান বলেন, কামরাঙ্গীরচর থানাধীন ঝাউচর এলাকায় হোটেল কর্মচারি রাহাবুল খুন হয়েছেন। পারিবারিক বিরোধের জেরে রাহাবুলকে তার বাবা জুয়েল রানা খুন করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। 

এ দিকে নিহত রাহাবুলের মামা হুমায়ুন বলেন, তার বোন শাহানাজ কাজের সূত্রে জর্ডানে থাকেন। তার ভাগনে রাহাবুল এবং বোনের স্বামী জুয়েল রানা কামরাঙ্গীরচরের যাউচর এলাকায় একটি হোটেলে কাজ করতেন। শনিবার রাতে পারিবারিক বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাত করে রাহাবুলকে হত্যা করেন বোনের স্বামী। 

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কি কারণে ছেলেকে বাবা হত্যা করেছেন সেটিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ