Samakal:
2025-11-02@01:09:10 GMT

বিয়ের আগে থাকুন চাপমুক্ত

Published: 17th, June 2025 GMT

বিয়ের আগে থাকুন চাপমুক্ত

বিয়ে মানেই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা। বিয়ের পর শুধু জীবনের পরিবর্তন হয় না, সঙ্গে যোগ হয় নানারকম দায়িত্ব। বিয়ের দিনটা নিয়েই সবার মাতামাতি থাকে। তার পরের জীবনে মানিয়ে নিতে হয় পাত্র-পাত্রীকেই। এ কারণে বিয়ের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত পাত্র এবং পাত্রী উভয়েরই বিয়ে মানে নতুন জীবন নিয়ে থাকে চাপা উত্তেজনা। তাদের কাছে শুধু বিয়ের দিনটাই নয়, তার পরের জীবনটা নিয়েও থাকে অনেক ধরনের চিন্তা, উদ্বেগ। বারবার মনে হতে থাকে বিয়ে নিয়ে তারা যে স্বপ্ন দেখছেন তা বাস্তবায়িত হবে কিনা। উভয়ের ক্ষেত্রে নতুন পরিবার এবং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া নিয়েও থাকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। বিয়ের আগে থেকে যদি নিজেকে উপযুক্তভাবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে টেনশন অনেকটা কমে যাবে। 
যারা বিয়ে নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করছেন তারা নিজেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে প্রাক্‌-বিবাহ কাউন্সেলিং করতে পারেন। চাইলে কিছু ঘরোয়া উপায়ও বেছে নিতে পারেন নিজেকে চাপমুক্ত রাখতে। 
শারীরিক সুস্থতার চাবিকাঠি হলো মানসিক প্রফুল্লতা। তাই সবসময় মন ভালো রাখার চেষ্টা করতে হবে। মুখে হাসি, পর্যাপ্ত ঘুম আর অযথা নেতিবাচক চিন্তা না করা– এ তিনটিই আপনাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত রাখবে। 
মন ভালো রাখতে যা করবেন
সংগীত: সংগীত হলো সবচেয়ে ভালো ওষুধ। যখনই আপনি অতিরিক্ত মানসিক চাপ বোধ করবেন, তখন হালকা কোনো সংগীত বা গান শোনার চেষ্টা করুন। রাতে ঘুমানোর আগে কিংবা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসার পথে হালকা গান শুনতে পারেন। মনে রাখবেন, ধীর মধুর সংগীত মনের চঞ্চলতা কমিয়ে তাকে শান্ত করে। শরীরের মধ্যে জমে থাকা টেনশন কম করে। 
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম: যে কোনো পরিস্থিতিতে টেনশন কমাতে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম সবসময় কার্যকর। শরীরের পেশিগুলোকে উত্তেজনামুক্ত করতে সারাদিনে যে কোনো সময়েই এ ব্যায়াম করা যায়। 
মেডিটেশন: মনের মধ্যে আসতে থাকা সব ধরনের বাজে চিন্তাধারাকে নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি হচ্ছে মেডিটেশন করা। এ কৌশল মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। সারাদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট মেডিটেশন করতে পারলে উপকার পাবেন। 
শরীরচর্চা: শারীরিক শ্রম মানসিক চাপ কমাতে অনেক সাহায্য করে। শ্রমের কারণে শরীরে এনডরফিনের মাত্রা বেড়ে যায়, যেটি শরীরকে রিলাক্স রাখতে সাহায্য করে।
জীবন উপভোগ করুন: বর্তমানকে উপভোগ করার নামই রিলাক্স করা। ভবিষ্যতে কী হবে এবং অতীতে কী হয়ে গেছে, সেসব চিন্তা করে বর্তমানের মুহূর্তকে নষ্ট করবেন না। যাদের সঙ্গে বেড়ে ওঠা, যাদের ঘিরে জীবনের এতদিনের স্মৃতি তাদের সঙ্গে সময় কাটান। পরিবারের সবাই মিলে বাইরে খেতে যান, বসার ঘরে একসঙ্গে চায়ের আড্ডা দিন। একসঙ্গে বসে বিয়ের পরিকল্পনা করুন, দায়িত্ব ভাগ করে নিন সবাই মিলে। দেখবেন দুশ্চিন্তা অনেকটা কমে যাবে। 
নিজের জন্য সময়: পরিবারে কিংবা কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় কাজের চাপ বাড়ে। তাই বলে নিজের জন্য সময় বের করতে ভুলবেন না। নিজের শখের কোনো কাজ যেমন– বই পড়া, লেখালেখি, ছবি আঁকা ইত্যাদি করতে পারেন। মানসিক চাপমুক্ত থাকতে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটান। 
মেলামেশা বাড়ান: অফিসে হোক বা অফিসের বাইরে কাজের ফাঁকে একটু-আধটু আড্ডা দিন, গল্প করুন। এটি মুড বুস্টার হিসেবে দারুণ কার্যকর। এর বাইরেও সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রটা বাড়ান। 
ইতিবাচক মনোভাব জরুরি
আপনার চিন্তাভাবনার মধ্যে নেতিবাচক মানসিকতাকে স্থান দেবেন না। ইতিবাচক মনোভাব রাখুন। চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। শুরুতে নেতিবাচক ভাবনা এলেও, মনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনুন। দেখবেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
ক্লান্তি কাটাতে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। এতে শরীর-মন দুই ভালো থাকবে। বেশি রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাটিং করা বা উত্তেজনাপূর্ণ কোনো ভিডিও দেখে ঘুম নষ্ট করবেন না। বিয়ের পর জীবনসঙ্গীর সঙ্গে স্বপ্ন সফল করতে হলে বিয়ের আগে পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে নিজেকে স্ট্রেস-ফ্রি রাখুন। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর য প ত করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই আমাকে ভার্সেটাইল অভিনেতা বলেন, কিন্তু কাজ দেয় না: রুদ্রনীল

ভারতীয় বাংলা সিনেমার দাপুটে অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। রুপালি পর্দার অনেক কাজ দিয়ে নিজেকে বহুবার প্রমাণ করেছেন। ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণে টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এর আগে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কাজও চেয়েছিলেন এই অভিনেতা।

কয়েক দিন আগে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এ আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে ‘ভার্সেটাইল’ অভিনেতা বলা হয়। তবু অনেক অভিনেতা আরো বেশি জনপ্রিয়তা উপভোগ করেন। কেবল তাই নয় অনেক বেশি কাজও পান। ৫২ বছর বয়সে, এটা কি আপনাকে হতাশ করে, নাকি ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা আপনাকে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নিতে শিখিয়েছে?

আরো পড়ুন:

আমার যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে, প্রশ্ন শ্রীলেখার

শাকিবের নায়িকা হতে ইধিকার ৩৮ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দাবি?

এ প্রশ্নের জবাবে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “একসময় আমার ঈর্ষা হতো এবং নিজের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করতাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে উপলদ্ধি করেছি, জনপ্রিয়তা সবসময় পারফরম্যান্সের প্রতিফলন নয়। কাউকে যদি ‘সুপার’ অভিনেতা বলা হয়, কিন্তু তিনি দর্শক টানতে না পারেন, তাহলে সেটাই সব বলে দেয়। আগে খারাপ লাগত, যখন মিডিয়া এমন অভিনেতাদের পেছনে ছুটত এবং আমাদের মতো মানুষদের উপেক্ষা করত। কিন্তু এখন আর সেটা ভাবি না। অনেকে আছেন যারা প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে কথা বলেন না। কিন্তু পরে ফোন করে নিজেদের গল্প শোনান। জীবন, তথাকথিত বন্ধুত্ব এই ইন্ডাস্ট্রিতে এমনই।”

অভিনয়শিল্পীদের ‘মেগাস্টার’, ‘সুপারস্টার’, ‘টলি কুইন’ ইত্যাদি উপাধিতে ডাকা হয়, এ নিয়ে আপনার মতামত কী? জবাবে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “আমি শুধু এটুকুই বলব—দর্শক নির্বোধ নন। আসল বিষয় হলো—গল্প এবং অভিনয়। ট্যাগ বা তকমা দিয়ে তাদের চিরকাল বোকা বানানো যায় না। গুণগতমান সবসময় প্রচারের চেয়ে বেশি কথা বলে। ধরুন, শিশুদের জন্য একটি হেলথ ড্রিংক তৈরি করা হলো, যার নাম ‘অশিম’। বিক্রি না হওয়ায় সেটিকে হঠাৎ ‘মহা অশিম’ নামে বাজারে আনা হলো। কিন্তু সেই পানীয় কেবল তখনই টিকবে, যখন এটি সত্যিই শিশুদের উপকারে আসবে। এটাই আমি বোঝাতে চাচ্ছি।”

২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তারপর থেকে শোনা যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বলা হয়, কিছু পরিচালক আপনাকে কাস্ট করতে চান না। কারণ কাস্ট করলে তাদের সিনেমা নন্দন বা অনুরূপ স্থানে না দেখানোর ভয় রয়েছে। এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলেছেন? উত্তরে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে আমি বছরে মাত্র ১০–১৫ দিন কাজ করেছি। বেঁচে থাকার জন্য আমাকে নিজের গাড়ি ও বাড়ি বিক্রি করতে হয়েছে। বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও আমাকে কাজ দিতে পারেননি।”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “পাঁচ বছর ধরে, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে, স্নান করে, বাড়িতেই বসে থাকতে হয়। অথচ অভিনয়ই ছিল আমার জীবন, আর হঠাৎ সেটা থেমে গেল। কিন্তু আমি টিকে আছি; বাঁচার প্রবৃত্তিই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে আমার কোনো অনুতাপ নেই। কিন্তু যারা বন্ধুত্বকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের নিয়ে দুঃখ আছে।”

“অভিনয় আমার ভালোবাসা আর রাজনীতি দায়িত্ব—দুটোই সমাজ পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে। আমি ছাত্র রাজনীতির অংশ হয়ে বড় হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি কোনো কলঙ্ক নয়, বরং এক ধরনের কর্তব্য।” বলেন রুদ্রনীল।

শোনা যাচ্ছে, আপনি সৃজিত মুখার্জির পরের সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন? এ বিষয়ে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “আশার কথা, আমি সৃজিতের পরবর্তী সিনেমার অংশ। মজার একটি চরিত্রের জন্য সে আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি এটা করিনি। কারণ আমার আগের কিছু কমিটমেন্ট ছিল। সৃজিত একমাত্র ব্যক্তি যার সিনেমার অংশ হলেও কে কী বলল তা সে তোয়াক্কা করে না।”    

পরিচালক রাজ চক্রবর্তী প্রসঙ্গে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “রাজ কেন আমাকে ‘কাঠমান্ডু’ (২০১৫) সিনেমার পর আর কাস্ট করেননি, সেটা একমাত্র রাজই বলতে পারবে। আমরা তো একসময় স্ট্রাগল করেছি, সেই সময়ে রুমমেট ছিলাম, একই প্লেটে খেতাম, কারণ দুই প্লেট ভাত কেনার টাকাও ছিল না। আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো, আমার সেই বন্ধুরা, যারা একসময় আমাকে ভালোবাসত, তারাই এখন আমাকে কাজ দিতে পারে না।”

এর আগেও রুদ্রনীল ঘোষ টলিউডে ‘একঘরে’ হয়ে থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন, এমনকী তাকে কাজ দিচ্ছেন না প্রযোজকরা—এমন অভিযোগও করেছিলেন। তবে বারবার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল। বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বহু কলাকুশলী টলিউডে কাজ করছেন, সেখানে রাজনৈতিক দল বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি বলে দাবি তৃণমূলের।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সবাই আমাকে ভার্সেটাইল অভিনেতা বলেন, কিন্তু কাজ দেয় না: রুদ্রনীল