গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় বাস ও অটোরিকশার সংঘর্ষে মা-শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সদর ইউনিয়নের জামিরারচর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে দুই যুবক, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ট্রলিচাপায় এক যুবক ও পাবনার চাটমোহরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র প্রাণ হারিয়েছে।

কাপাসিয়ায় নিহতরা হলেন– কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার কমলবুক গ্রামের তানভীর আহমদের স্ত্রী রত্না আক্তার (২৪) ও তাঁর ছেলে চার বছরের শায়ান এবং একই উপজেলার কৃষ্টপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে তৌহিদুল (২৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তৌহিদুলের বাবা, মা ও বোন। হতাহতরা সবাই অটোরিকশার যাত্রী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল কিশোরগঞ্জ থেকে একটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা গাজীপুর চৌরাস্তার উদ্দেশে যাচ্ছিল। বিকেল ৩টার দিকে সেটি কাপাসিয়া সদরের জামিরারচর এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা ক্লাসিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তৌহিদুল, রত্না ও শায়ান প্রাণ হারান। আহত হন তিনজন। কাপাসিয়া থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মণ্ডল জানান, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

সড়কে ঝরল দুই বন্ধুর প্রাণ

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন দুই বন্ধু সাজু ইসলাম (৩৩) ও মোতালেব হোসেন (২৭)। তবে তারা আর ফিরতে পারেননি। পথে ট্রাকের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দু’জনই প্রাণ হারান। গতকাল মঙ্গলবার ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরার পথে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রাঙ্গামাটি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত সাজু কাহারোল উপজেলার জগন্নাথপুর রামপুর গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে এবং মোতালেব জয়রামপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। সাজু ঢাকায় বাইক রাইড করতেন এবং মোতালেব চাকরি করতেন পোশাক কারখানায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে গতকাল ভোরে মোটরসাইকেলে রওনা দেন সাজু ও মোতালেব। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফুলবাড়ীর রাঙ্গামাটি বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় প্লাস্টিকের ঝুড়িবোঝাই একটি ট্রাক দিনাজপুরে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারায়। সেখানে সাজুদের মোটরসাইকেলের সঙ্গে ট্রাকটির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় সাজু ও মোতোলেবকে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ট্রলির চাকায় পিষ্ট যুবক

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান বাজারে গতকাল ট্রলির চাপায় মনিরুজ্জামান মুন্না (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ বাংলাবাজার ঠাকুরদান গ্রামের মাহফুজার রহমানের ছেলে। মুন্না নাজিমখান বাজারে ভাড়া বাসায় থেকে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কিছুদিন আগে তাঁর কাবিন হয়েছিল। আগামী শুক্রবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ছিল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, সকালে ভাড়া বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন তিনি। এ সময় নাজিমখান বাজারের সাকিনা মজিদ মেমোরিয়াল হাসপাতালের সামনে একটি নছিমন গাড়ি আরেক সাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে মুন্নাকে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রলির চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র নিহত

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আরাফাত হোসেন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার জোনাইলের লেদ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরাফাত চাটমোহরের ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের খৈরাশ গ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ডিকে উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

এদিকে গাইবান্ধায় ট্রেনে কাটা পড়ে নাহিদ (২৩) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার নশরৎপুর এলাকায় করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন তিনি। নাহিদ রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে। তিনি ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। 

(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত উপজ ল র দ র ঘটন স ঘর ষ এল ক য় গতক ল ঘটন য় করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্টে সারফেস ক্র্যাকিং হয় না

‘ঢালাইয়ে অর্ডিনারি পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট (ওপিসি) ব্যবহার হলে হিট এবং হাইড্রেশন তৈরি হয় বেশি। তবে র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্টে এর মাত্রা কম। ফলে এটি কংক্রিটকে অনেক বেশি সুরক্ষিত রাখে। এই সিমেন্ট ব্যবহারে সারফেস ক্র্যাকিং হয় না বললেই চলে।’

সমকালের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন বগুড়ার প্রকৌশলী মো. অলিউল ইসলাম দুর্লভ।

অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ওপিসি দিয়ে সিমেন্টের যাত্রা হলেও এখন প্রতিনিয়ত এটি আধুনিক হচ্ছে। সিমেন্টের পাশাপাশি রডও আধুনিক হচ্ছে। অর্থাৎ একদিকে আমরা নির্মাণ সরঞ্জাম আধুনিক করছি। অন্যদিকে নির্মাণ উপাদানগুলো আধুনিক হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট। বহির্বিশ্বে উঁচু ভবন নির্মাণে অনেক আগে থেকে এই সিমেন্ট ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে এটি নতুন।’

র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট এবং ওপিসি পুরোপুরি আলাদা উল্লেখ করে ঢাকার প্রজেক্ট বিল্ডার্স লিমিটেডের (পিবিএল) প্রকৌশলী অলিউল ইসলাম বলেন, ‘র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্টে ট্রাই ক্যালসিয়াম সিলিকেট ব্যবহার হয় বেশি। এতে ক্লিংকার ব্যবহার হয় সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ। আবার ক্যালসিয়াম সালফেট ব্যবহার হয় কম।’

বিভিন্ন প্রকল্পে ঢালাই স্পেশাল সিমেন্ট ব্যবহারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্ট ব্যবহারে বেশকিছু সুবিধা পাচ্ছি। এই সিমেন্ট দিয়ে ছাদ ঢালাইয়ে সময় লাগে কম, দ্রুত কাজ শেষ করা যায়। ফলে নির্মাণ ব্যয় অনেক কমে আসে।’

প্রকৌশলী অলিউল ইসলাম বলেন, ‘শুধু ভবন নির্মাণ নয়, অনেক সময় আমাদের রেট্রোফিটিং করতে হয়। এই কাজে দ্রুত সেটিং ও স্ট্যান্ডের প্রয়োজন পড়ে। এ ক্ষেত্রে র‍্যাপিড হার্ডেনিং সিমেন্টের বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্প রোধ করা সম্ভব নয়, তবে ক্ষতি কমানো সম্ভব। ঢাকা শহরে অল্প মাত্রার ভূমিকম্পে বড় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এ কারণে ভবন নির্মাণে সিমেন্ট, রডসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহারে আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ