জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই বলে আসছে আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরেই স্থানীয় নির্বাচন হতে পারে। এরপর যে কয়েক মাস সময় থাকবে, সে সময়ের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
শুক্রবার দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ হলরুমে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত নির্বাচনী দায়িত্বশীল সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে ডা.
তিনি জানান, বর্তমানে প্রেসিডেন্ট সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন। এতে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়, প্রেসিডেন্ট সেই দলের হয়ে কাজ করেন। এজন্য তারা প্রস্তাব দিয়েছেন সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ সদস্য, পৌর মেয়র, কাউন্সিলর ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি ইলেকটোরাল কলেজ গঠন করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হোক। এতে একজন যোগ্য, সম্মানিত, নিরপেক্ষ ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী পদে দুই মেয়াদের সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি কোনো ব্যক্তি যেন টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন। এ বিষয়ে বিএনপি ছাড়া প্রায় সব দল একমত হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রোববার (আগামীকাল) থেকে এ প্রস্তাব নিয়েই আবার আলোচনা শুরু হবে।’
ডা. তাহের জানান, তারা প্রস্তাব দিয়েছেন সংবিধান সংশোধন, অনাস্থা প্রস্তাব ও বাজেট ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে যদি কোনো এমপি নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। এ বিষয়েও একমত হয়েছেন তারা। তিনি বলেন, ‘লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়েছে—এটি খুব স্বাভাবিক। প্রধান উপদেষ্টা সব দলের সঙ্গেই আলোচনা করেছেন। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত নির্বাচনের সময় চেয়েছিলেন তারা। এখন যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তাতেও আপত্তি নেই। কারণ এটি তাদের আগের সময়সীমার মধ্যেই পড়ে।
বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক প্রসঙ্গে ডা. তাহের বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো দূরত্ব তৈরি হয়নি। তারা তাদের দলীয় অবস্থান থেকে কথা বলছে, আমরাও আমাদের দলীয় অবস্থান থেকে বলছি। সকল দলের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম প রস ত ব ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়ার বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ গঠনের বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। পাশাপাশি কোনো ব্যক্তি যেন দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, সে বিষয়েও অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের আজকের আলোচনা শেষে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, বৃহস্পতিবার সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার কথা থাকলেও গতকাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অসমাপ্ত থাকায় এ বিষয়ে আবার আলোচনা হয়।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটার নির্ধারণের জন্য জাতীয় সংসদের ধরন নিয়ে প্রশ্ন থাকায় আজ এ বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, যেহেতু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সংসদের ধরন নির্ধারণ হওয়া জরুরি, তাই এ বিষয়ে আগে নির্ধারণ হতে হবে। এ প্রসঙ্গে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত যে সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হতে পারে।’
আলোচনা হলেও বৃহস্পতিবার কোনো বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করতে চাই, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের পক্ষে মত দিয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। কোনো ব্যক্তির দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারার বিধান রাখার কথা বলেছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। তবে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হলে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে। আগামী সপ্তাহে অসমাপ্ত বিষয়গুলো নিয়ে আবার আলোচনা হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, সেগুলো আমরা জাতীয় সনদে স্বচ্ছতার সঙ্গে উল্লেখ করব। আমরা জানি, সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। হলে ভালো হতো। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ঐকমত্য গঠনে সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে।’
রাজনৈতিক দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন মত দিলেও আলোচনা সৌহার্দ্যপূর্ণ হচ্ছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতে কেউ দ্বিধান্বিত নয়।