দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ন্যায্য মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের কর্মবিরতির পর কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি প্রতি টনে ৮ টাকা বৃদ্ধি করায় কাজে ফিরেছেন শ্রমিকেরা। শনিবার বিকেলে বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের বৈঠক শেষে সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় শ্রমিকেরা কাজে ফেরেন।

শনিবার বেলা একটা থেকে হিলি স্থলবন্দরে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড চত্বরে কুলি শ্রমিক ঐক্য ৩০ গ্রুপ সমন্বয় পরিষদ কমিটির ব্যানারে শ্রমিকেরা এ কর্মবিরতি পালন করেন। এ সময় শ্রমিকেরা বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মজুরি বাবদ আদায় করা অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বন্দরের ৩০ জন কুলি সরদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি তোলেন। শ্রমিকদের এ কর্মবিরতির ফলে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ট্রাক থেকে কোনো পণ্য ওঠানামা করেননি শ্রমিকেরা। এ সময় স্থলবন্দরে ভারত থেকে ৫০টি পণ্যবোঝাই ট্রাক পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড চত্বরে প্রবেশ করেছিল।

বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বন্দরের কুলি শ্রমিক ঐক্য ৩০ গ্রুপ সমন্বয় পরিষদের সভাপতি হাবিবুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হিলি স্থলবন্দরে প্রতি টন পণ্য ওঠানামার জন্য আমদানিকারকেরা চালানের মাধ্যমে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডকে ৭৩ টাকা ১৭ পয়সা মজুরি পরিশোধ করে থাকে। মজুরির এ অর্থের মধ্যে বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ৫১ শতাংশ ও সরকার ৪৯ শতাংশ পেয়ে থাকে। বন্দরে পণ্য ওঠানামা বাবদ কুলি সরদারদের মাধ্যমে প্রতি টনে ১৩ টাকা মজুরি প্রদান করা হতো। ওই ১৩ টাকার মধ্যে কুলি সরদারেরা ৬ টাকা রেখে ৭ টাকা শ্রমিকদের মধ্যে বণ্টন করে দিতেন।

শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শ্রমিকেরা তাঁদের ন্যায্য মজুরির দাবিতে বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনন্ত কুমার চক্রবর্তী ও হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে বন্দরের শ্রমিকেরা আলোচনায় বসেন। পরে শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের পক্ষ থেকে পণ্য ওঠানামায় প্রতি টনে ২১ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ২১ টাকার মধ্যে এক টাকা কুলি সরদারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে শ্রমিকেরা ওই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সন্ধ্যায় কাজে ফেরেন।

এ বিষয়ে পানামার পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক অসিত কুমার সান্যাল প্রথম আলোকে বলেন, আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরদ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে কারাভোগ শেষে ফিরলেন ১৪ বাংলাদেশি

কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে আটক হওয়া ১৪ বাংলাদেশি কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তারা দেশে ফেরেন। দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের মধ্যে ছয়জন নারী ও একজন শিশু রয়েছে।

ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন, ইসমাইল, হারুন মজুমদার, পাপিয়া আক্তার, লিজা খানম, লিজা খাতুন, আশা মণি, মফিজুল ইসলাম, তাহিয়াতুন নেসা, আঁখি ইসলাম, সঞ্জয় সরকার, স্বপন সরকার, যিশু কান্তি দাস, বিপুল দাস ও সুশেন দাস। তাদের বাড়ি ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নড়াইল, চাঁদপুর, খুলনা, নেত্রকোণা ও সুনামগঞ্জ জেলায়।

আরো পড়ুন:

প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় যুবলীগ নেতা

চরমপন্থি নেতা নাসিমকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা

ভারতের আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের মধ্যস্ততায় দেশে ফেরেন তারা। পরে স্থলবন্দরে শূন্যরেখায় এসব বাংলাদেশিদের তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি এম রাশেদুল ইসলাম, বন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তারসহ বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘদিন পর স্বজনদের ফিরে পেয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্য রেখায় আবেগঘণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

ভারত ফেরত খুলনার মাহফজুল ইসলামের মা আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘‘আমার ছেলে, ছেলের বউ, নাতনি ১১ মাস আগে কাজের সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয় যায়। পরে খবর পাই ভারতে গিয়ে আটক হয়েছে। সরকারি প্রক্রিয়া শেষে আজকে ফিরে পেয়ে ভালো লাগছে।’’

ভারত ফেরত সুনামগঞ্জের স্বপন দাসের ভাই তপন দাস বলেন, ‘‘দালালের খপ্পড়ে পড়ে ভারতে ধান কাটতে গিয়েছিলেন তার ভাই। আজ আইনি প্রক্রিয়ার শেষে ভাইকে ফেরত পেয়ে ভালো লাগছে। পরে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে নগদ ৩ হাজার টাকা ও খাবার দেয়া হয়।’’

ব্র্যাকের মাইগ্রেশন বিভাগের ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন জানান, ফেরত আসা বাংলাদেশিদের আর্থিক প্রণোদনা ও জরুরি খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের পুনর্বাসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে মাইগ্রেশন বিভাগ।

আগরতলার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলার অ্যাসিস্টেন্ট ওমর শরীফ জানান, কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারত গিয়ে আটক হন ১৪ বাংলাদেশি। পরে আদালতের আদেশে কারাভোগ শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। আগরতলায় ক্ষণস্থায়ী কারাগারে আটক আরো ৩৩ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। 
 

ঢাকা/পলাশ/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাটগ্রামে পিকআপ ভ্যান-মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১
  • ভারতে কারাভোগ শেষে ফিরলেন ১৪ বাংলাদেশি