আমি বিস্মিত হই, যখন অ্যামনেস্টির লোকেরা বলে সাইবার নিরাপত্তা আইন খুব খারাপ নয়: আসিফ নজরুল
Published: 24th, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আমি খুব বিস্মিত হই, যখন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের লোকেরা আমাকে বলে যে সাইবার নিরাপত্তা আইন খুব খারাপ কোনো আইন নয়। অথচ আপনারা জানেন, বিগত সরকারের আমলে সাইবার নিরাপত্তা আইন ছিল দেশের সবচেয়ে সমালোচিত ও বিতর্কিত আইনগুলোর একটি।’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে কমনওয়েলথ চার্টার–বিষয়ক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। অন্তর্বর্তী সরকার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশও সংশোধন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত সরকারের আমলে এ আইনের মাধ্যমে মানুষ সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু আপনি যখন এমন লোকদের কাছ থেকে শোনেন যে এটি খুব খারাপ আইন নয়, তার মানে এটি একটি ভালো আইন।’
অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ায় আইনটি সংশোধনের কাজ প্রায় সম্পন্ন করেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘শিগগিরই অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে।’
কমনওয়েলথ সনদকে নৈতিক দিকনির্দেশক অভিহিত করেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, এই চার্টার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে সীমানা ছাড়িয়েও একত্র রাখে। বর্তমান সরকারের চলমান সংস্কার কার্যক্রমও কমনওয়েলথ চার্টারের মূল্যবোধগুলো ধারণ করে।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিচারব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনের স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিতে কাজ করছে বলে জানান আইন উপদেষ্টা। আগামী ছয় মাসে ডিজিটালাইজেশন কাজের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জুলাই-আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানকে নৈতিক আন্দোলন হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা শুধু আগামী দিনের নেতা নন, তাঁরাই হবেন আগামী দিনের পরিবর্তন সৃষ্টিকারী।
দেশের তরুণদের নৈতিক দৃঢ়তা, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিমূলক মনোভাবের প্রশংসা করেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তরুণদের সক্রিয়তা ইতিমধ্যেই সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারে ছাপ ফেলেছে। রাস্তা থেকে নীতিনির্ধারণের জায়গা পর্যন্ত তরুণেরা দেখিয়েছেন, তাঁদের ভূমিকা শুধু নিষ্ক্রিয় পর্যবেক্ষণের নয়।
কমনওয়েলথ চার্টার কর্মশালাটি বাংলাদেশের তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেশি। নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় তরুণদের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। লুইস ফ্রান্সেশি বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সম্পন্ন করার আগে আপনারা আত্মসমর্পণ করবেন না। সমান অধিকার ছাড়া ন্যায়বিচার অর্জন হয় না।’
সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘রাজার অতিথি’ হওয়ার সুযোগ কমনওয়েলথ স্কলারশিপে, আবেদন কীভাবে
অধ্যাপক মোহাম্মদ জহিরুল হক; শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বর্তমানে মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তিনি শাবিপ্রবিতে ‘চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল’ ও ‘ভাইস চ্যান্সেলর’ মেডেল পান। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মেরিট স্কলারশিপও পেয়েছেন। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ পেয়েছেন দুবার। ২০০৯ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপে ইংল্যান্ডের লিডস মেটের স্কুল অব অ্যাপ্লায়েড গ্লোবাল এথিকস থেকে পিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে মেরিটসহ মাস্টার্স এবং ২০১২ সালে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (সোয়াস) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। এ বছর ব্রিটিশ কাউন্সিলের দেওয়া সায়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ক্যাটাগরিতে ‘স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড’–এর ফাইনালিস্ট হন। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কমনওয়েলথ স্কলার অ্যান্ড ফেলোর আজীবন সদস্য।
২০২৬ সালের কমনওয়েলথ স্কলারশিপের জন্য ইউজিসি (https://ugc.gov.bd/) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করতে পারবেন যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। মোহাম্মদ জহিরুল হক প্রথম আলোর সঙ্গে কমনওয়েলথ স্কলারশিপে আবেদনের যোগ্যতা, ভর্তিপ্রক্রিয়া ও আবেদনসংশ্লিষ্ট বিষয়ে কথা বলেছেন।
প্রথম আলো :
কমনওয়েলথ স্কলারশিপ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের কিছু বলুন।
মোহাম্মদ জহিরুল হক: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ হচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বৃত্তিগুলোর একটি। যুক্তরাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের অংশ হিসেবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো থেকে অসামান্য প্রতিভাবান মেধাবী শিক্ষার্থীদের যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়াশোনা ও গবেষণার জন্য এ বৃত্তি দেওয়া হয়। ১৯৬০ সালে ১৭৫ জন শিক্ষার্থী ও গবেষককে এ বৃত্তি দেওয়ার মাধ্যমে ‘কমনওয়েলথ স্কলারশিপ’-এর যাত্রা শুরু হয়। গত বছর (২০২৪ সাল) পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ বৃত্তির আওতায় যুক্তরাজ্য থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন ও জ্ঞান–বিজ্ঞানের বিকাশে বিশেষ অবদান রাখছেন।
২০২৪ সাল পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এ বৃত্তির আওতায় যুক্তরাজ্য থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি নিয়ে বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন ও জ্ঞান–বিজ্ঞানের বিকাশে বিশেষ অবদান রাখছেন