চলতি বোরো ধানের ভরা মৌসুমেও দিনাজপুরে চালের দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রকার ভেদে ৬ থেকে ১০ টাকা করে। এদিকে হিলি বন্দরে ভারত থেকে আমদানিকৃত হাজার হাজার বস্তা চাল মজুত রয়েছে বিভিন্ন গুদামে। 

খুচরা চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের দাম বৃদ্ধি ছাড়া আর কোন করণে চালের দাম বেড়েছে তা তাদের জানা নেই। আমদানিকারকদের ভাষ্য, চাল বেশি দামে আমদানি করা ছিলো। বর্তমান দাম বেশি পাচ্ছেন তাই বিক্রি করছেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বলছেন, যদি কারও লাইসেন্স থাকে তবে সে ৩০ দিনের বেশি গুদামজাত করতে পারবেন না। সব মিলিয়ে উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে মূলত লোকসান গুনতে হচ্ছে সাধারণ ভোক্তাদের।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে হিলি স্থলবন্দরের কিশোর রায়, বেলাল হোসেন, রফিকুল্লাহ, কমল কুমার খইটাল, শরিফুল ইসলাম বাবু ও নবীবুল ইসলাম সহ বিভিন্ন আমদানি কারকদের গুদাম ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গুদামে পর্যাপ্ত ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল মজুত রয়েছে। এসব চাল গত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আমদানিকৃত। অতিরিক্ত দাম পাবার আশায় এসব চাল তারা গুদামজাত করে রেখেছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। বর্তমান ভাল দাম পাওয়ায় চালগুলো বিক্রি করছেন আমদানি কারকরা। প্রায় আড়াই মাস এসব চাল তারা মজুত করে রেখেছে।

এদিকে হিলি খুচরা চাল বাজারে গিয়ে জানা যায়, গত কোরবানি ঈদে পর থেকে হু হু করে বেড়ে গেছে সব ধরনের চালের দাম। ভারত থেকে আমদানিকৃত যে সম্পাকাটারি চাল বিক্রি হয়েছিলো ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা কেজি, বর্তমান তা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা কেজি দরে। দেশি সম্পাকাটারি চালের কেজি ছিলো ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বর্তমান তা বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকা কেজি হিসেবে। 

ভারত থেকে আমদানিকৃত যে স্বর্ণা-৫ চাল বিক্রি হয়েছিলো ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি, আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে। মিনিকেট চালের কেজি ছিলো ৬৪ টাকা বর্তমান তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা।

হিলি বাজারে খুচরা চাল ব্যবসায়ী স্বপন শাহ বলেন, “গত ঈদের আগেও চালের বাজার অনেকটা কম ছিলো। ঈদের পর থেকেই সব ধরনের চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যতদূর জানি হঠাৎ ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মিল মালিকরা বেশি দামে চাল বিক্রি করছে।”

খুচরা চাল ব্যবসায়ী অভি বসাক বলেন, “আমরা ছোট ব্যবসায়ী। কী কারণে চালের দাম বাড়লো তা জানি না। হয়তো ধানের দাম বৃদ্ধি- আবার আমদানিকারকরা চাল মজুত করার কারণেও হতে পারে।”

হিলি বন্দরের চাল আমদানিকারক নবীবুল ইসলাম চাল মজুদের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “চালের দাম কম ছিল, তাই মজুত করে রেখেছি। এখন দাম বেড়েছে তাই বিক্রি করছি। আমদানি করার সময় বাজার ছিলো ৪৭ টাকা, আমার পরতা পড়েছিলো ৫২ টাকা। লস দিয়ে কী করে বিক্রি করি?”

‘গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুত রেখেছেন কেন’ জানতে চাইলে চাল আমদানিকারক শরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, “আমার গুদামে শুধু লম্বা চাল রয়েছে। এই চাল কেউ নিতে চায় না, তাই বিক্রি হচ্ছে না। অন্য চাল থাকলে বিক্রি হতো।”

হিলি বন্দরে চাল আমদানিকারক বেলাল হোসেনের ম্যানেজার মানিক মিয়া বলেন, “ভারত থেকে আমদানিকৃত চালে বাজার তখন ভাল ছিলো না এবং চাহিদাও কম ছিলো। যার কারণে বিক্রি কম। এখন দাম বেড়েছে এবং চাহিদাও বেড়েছে।”

হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা সোহেল আহমেদ বলেন, “যদি কারো লাইসেন্স থাকে তবে সে ৩০ দিন পর্যন্ত চাল গুদামজাত করতে পারবে। যেহেতু আমদানি কারকরা দীর্ঘদিন চাল গুদামজাত করে রেখেছে- আমরা ট্রান্সপোর্ট গঠন করে ঐসব গুদামে অভিযান পরিচালনা করব।”

এ বিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিত রায় বলেন, “বিষয়টি অবগত হলাম। অবশ্যই হিলি বন্দরের চাল আমদানি কারকদের গুদামসহ চাল বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।”

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল আমদ ন আমদ ন ক ত ল ইসল ম ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ল ১১টি দোকান ও একটি কারখানা

নোয়াখালীর সেনবাগে একটি কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, গোডাউনসহ অন্তত ১১টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ১টার দিকে উপজেলার সেবারহাট বাজারে ঘটনাটি ঘটে। 

ফায়ার সার্ভিসের সেনবাগ, চৌমুহনী ও মাইজদীর পাঁচটি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার রাত ১টার দিকে সেবারহাটে একটি আসবাবপত্র তৈরির কারখানা থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এরপর আগুন আশপাশের ১১টি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

আরো পড়ুন:

নেত্রকোণার ধলাই নদীতে বাল্কহেড ডুবে ২ শ্রমিক নিখোঁজ

মানিকগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানার আগুন, ৬০ কোটি টাকার ক্ষতি

আগুনে আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, মেশিনারিজ সামগ্রী, থাই অ্যালুমিনিয়াম পণ্য বিক্রির দোকানসহ অন্তত ১১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুনে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের ৩৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।  

সেনবাগ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার ফাইটার মো.সাব্বির হোসেন বলেন, ‍“পাঁচটি ইউনিট প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ক্ষয়ক্ষতি ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত শেষে বলা যাবে।” 

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ