ইরানে পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হয়নি বলে গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

মার্কিন বিমান হামলার কার্যকারিতা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক সাইটেই নিখুঁতভাবে হামলা চালানো হয়েছে এবং সেগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে।

এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প এমন মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, মার্কিন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে যেসব প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো হামলা পরিচালনাকারী সেনাবাহিনীর প্রতি ‘অত্যন্ত অসম্মানজনক’।

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি মার্কিন গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করে বলেন, তারা ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক অভিযানের মর্যাদা খাটো করার চেষ্টা করছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি একটি গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন ফাঁস হয়ে যায়। যেখানে বলা হয়, মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। এ নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরও বলেন, যেসব মিডিয়া এ দাবি করছে তারা মিথ্যা ছড়াচ্ছে এবং বাস্তবতা আড়াল করার চেষ্টা করছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, ইরানে মার্কিন হামলার ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ শামিল।

তিনি ফক্স নিউজকে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো এবং এটি অবশ্যই তদন্ত হওয়া উচিত। যারাই এর জন্য দায়ী, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’

তিনি আরও জানান, তিনি সব ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন প্রতিবেদন পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র যেসব তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, সেগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

ট্রাম্প নিজেও উইটকফের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ট্রুথ সোশালে ফক্স নিউজ সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করেন।

সেখানে উইটকফকে উদ্ধৃত করে লেখা ছিল- ‘আমরা ফোরদোতে ১২টি বাংকার বাস্টার বোমা ফেলেছি। কোনো সন্দেহ নেই, তা ছাদ ভেদ করেছে। কোনো সন্দেহ নেই, এটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। সুতরাং যেসব প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি, তা একেবারেই হাস্যকর!’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র ক ন য ক তর ষ ট র ধ ব স হয়

এছাড়াও পড়ুন:

শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে খুব শিগগির দেখা করতে পারেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই সে কথা বলেছেন।

এদিনই মস্কোয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। তাঁদের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প।

কিয়েভের একটি জ্যেষ্ঠ সূত্র বলেছে, পুতিন-উইটকফের বৈঠকের পর ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে এক ফোনালাপ হয়েছে। সেখানে ট্রাম্প-পুতিন সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠক নিয়ে কথা হয়। ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের নেতারাও একই ফোনালাপে অংশ নেন।

পরে হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, তিনি কবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগির একটি বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’

যদি ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়, তবে সেটা হবে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া প্রথম শীর্ষ বৈঠক। ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পুতিনের বৈঠক হয়েছিল।

তবে পুতিনের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক কোথায় হতে পারে, সে বিষয়ে ট্রাম্প কিছু বলেননি।

ট্রাম্প-পুতিনের মধ্যে ওই বৈঠক হলে তবে সেটা হবে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া প্রথম শীর্ষ বৈঠক। ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পুতিনের বৈঠক হয়েছিল।

আরও পড়ুনউত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়া যাচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত০৪ আগস্ট ২০২৫

ট্রাম্প-পুতিন সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন ব্যক্তিদের বরাতে নিউইয়র্ক টাইমস ও সিএনএনের খবরে বলা হয়, ট্রাম্প আগামী সপ্তাহেই পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন। এরপর তিনি পুতিন ও জেলেনস্কিকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজন করতে চান।

ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির ফোনালাপের আগে দিনের শুরুতে মস্কোয় রুশ নেতার সঙ্গে বৈঠক করেন স্টিভ উইটকফ। ক্রেমলিন ওই আলোচনা ‘ফলপ্রসূ’ বলে বর্ণনা করেছে।

এ যুদ্ধের অবসান করতেই হবে, সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছে। আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করব।ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট

এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপে ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময়সীমাও শেষ হয়ে আসছে।

আরও পড়ুনপুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের দূত উইটকফের বৈঠকের পর কি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ হচ্ছে১৯ ঘণ্টা আগে

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘বিশাল অগ্রগতি হয়েছে!’

পুতিন-উইটকফ বৈঠকের পর ট্রাম্প ইউরোপের কয়েকজন মিত্রকে এ অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করেছেন বলেও জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, উইটকফ মস্কো থেকে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে ফিরে এসেছেন। এ প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন এবং ওয়াশিংটন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

ট্রাম্প লেখেন, ‘এ যুদ্ধের অবসান করতেই হবে, সবাই এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করব।’

যদিও এর কয়েক মিনিট পরই একজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, দুই দিনের মধ্যে (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) দ্বিতীয় পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, উইটকফ মস্কো থেকে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে ফিরে এসেছেন। ওই প্রস্তাব নিয়ে ইউক্রেন এবং ওয়াশিংটন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা: বিশ্ব কি পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে০২ আগস্ট ২০২৫

তবে রুবিও কথা বলার সময় ট্রাম্প-পুতিন সম্ভাব্য বৈঠকের সময় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘অগণিত কাজ বাকি রয়েছে। এ জন্য কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।’

অগণিত কাজ বাকি রয়েছে। এ জন্য কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।মার্কো রুবিও, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারের সময় বলেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারবেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হলেও এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি খবর নেই।

এ অবস্থায় সম্প্রতি রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে সময় বেঁধে দিয়েছেন ট্রাম্প। না হলে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে রেখেছেন। আগামীকাল শুক্রবার ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হবে।

আরও পড়ুনরাশিয়ার কাছে ট্রাম্পের পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের ঝুঁকি আসলে কতটা০২ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন ট্রাম্প