কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিল্প খাতের অন্যতম সম্মাননা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ পেয়েছে রিমার্ক এইচবি লিমিটেড। দেশের একমাত্র সেরা কসমেটিকস, স্কিন কেয়ার ও হোম কেয়ার পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে হিসেবে এই বিশেষ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করলো রিমার্ক। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই অ্যাওয়ার্ড শিল্প খাতের জন্য বিশেষ স্বীকৃতি।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে রিমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া ও পরিচালক আলমগীর আলম সরকারের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

দেশের অন্যতম প্রধান কসমেটিকস, স্কিনকেয়ার ও হোমকেয়ার পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিমার্কের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা সম্পন্ন ফ্যাক্টরি বাংলাদেশের কসমেটিকস খাতের প্রথম এবং পাইওয়নিয়ার। শুধু তাই নয় প্রথমবারের মতো কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার উৎপাদক কোন প্রতিষ্ঠান এই অ্যাওয়ার্ড লাভ করলো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এম সাখাওয়াত হোসেন রিমার্কের ভূয়সি প্রশংসা করে বলেন, “কসমেটিকসের বাজারে বিশ্বস্ততা এনে দিয়েছে রিমার্ক। মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে তারা। বিদেশি ক্রেতাদের কাছেও এখন বাংলাদেশি কসমেটিকস সমাদৃত হচ্ছে।”

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আশা করে বলেন, “আজ রিমার্কসহ যেসব প্রতিষ্ঠান অ্যাওয়ার্ড পেল, তাদের দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হবে। দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থে পরিবেশবান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার বিকল্প নেই।”

অনুষ্ঠানে রিমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, “সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ রিমার্ক এইচবির উৎপাদন প্রক্রিয়া সিজিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস সার্টিফিকেট) এবং আইএসও স্বীকৃত যা নিশ্চিত করে যে সব পণ্য সর্বোচ্চ গুণগত ও নিরাপত্তা মানদণ্ড অনুসারে তৈরি করা হয়। এই উৎকর্ষতার প্রতিশ্রুতি রিমার্ক এইচবি লিমিটেডকে বাংলাদেশের কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার শিল্পে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পাশাপাশি দেশে হালাল কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য উৎপাদনে একটি মাইলফলক অর্জন করেছে।”

রিমার্ক এর আগে বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদিত গ্লোবাল ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্কিনকেয়ার প্রদর্শনী দুবাই ডার্মায় অংশ নেয়। সেখান থেকেও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে প্রায় ২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ পায়। আগামী ২৫ জুন থেকে অনুষ্ঠেয় এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্যের প্রদর্শনী কসমোপ্রফ (সিবিই আশিয়ান)-২০২৫এ অংশ নিচ্ছে রিমার্ক। এই প্রদর্শনীতেও বাংলাদেশে উৎপাদিত কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় ৫শতাধিক পণ্য প্রদর্শিত হবে। আশা করা হচ্ছে, থাইল্যান্ডের বাইরেও আশিয়ান দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ নতুন রপ্তানি আদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হবে।

অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি) জেনারেল সেক্রেটারী জামাল উদ্দীন বলেন, “রিমার্ক এইচবি লিমিটেড এর এই ফ্যাক্টরি বাংলাদেশে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য আমদানিনির্ভরতা কমিয়েছে। এতে যেমন উন্নত মানের পণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেছে, তেমনি বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করেছে। দেশে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি গড়তে বড় ভূমিকা রাখছে। আমরা যতটুকু দেখেছি, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়ে আমাদের দেশে রিমার্কের উৎপাদিত কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরী এবং অনেক উন্নত।” 

উদ্ভাবনী দক্ষতা, সাশ্রয়ী মূল্য ও গুণগত মানের উপর জোর দিয়ে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে রিমার্ক। নিবিড় গবেষণা ও অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে কার্যকরী ও নিরাপদ স্কিনকেয়ার সমাধান দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে একদিকে যেমন আমদানি নির্ভরতা কমছে অপরদিকে রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সমৃদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম র ক এইচব র ম র ক এই উপদ ষ ট প রদর শ অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ