নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আবারও এক তরুণের পা উড়ে গেছে
Published: 25th, June 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবারও স্থলমাইন বিস্ফোরণে ওমর মিয়া (২৫) নামের এক তরুণের পা উড়ে গেছে। মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় আধা কিলোমিটার ভেতরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা–পুলিশ জানিয়েছে।
এর আগে গত রোববার জারুলিয়াছড়ির পাশের জামছড়ি সীমান্তে এক কিশোরের পা উড়ে যায়। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত ছয় মাসে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের চাকঢালা, আশারতলী, ফুলতলী ও জামছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আট সীমান্তবাসী পা হারালেন। মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) পেতে রাখা মাইনের বিস্ফোরণে এসব ঘটনা ঘটছে বলে পুলিশ ও সীমান্তবাসী বারবার বলে আসছেন।
জারুলিয়াছড়ি সীমান্তের লোকজন জানিয়েছেন, সীমান্তের ৪৬ ও ৪৭ পিলারের মধ্যবর্তী স্থানের শূন্যরেখা পার হয়ে প্রায় ৪০০ মিটার মিয়ানমারের ভেতরে যাওয়ার পর স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ফয়েজ আহমেদ জানিয়েছেন, মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় রামু কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মৌলভিকাটা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবদুল হাফেজের ছেলে ওমর মিয়ার ডান পা উড়ে গেছে। তাঁকে সেখান থেকে দ্রুত উদ্ধার করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক জানিয়েছেন, মাইন বিস্ফোরণে আহত ওমর মিয়া সীমান্তে চোরাচালানির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। মিয়ানমারের প্রায় ৪০০ মিটার অভ্যন্তরে তিনি মাইন বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন। সীমান্তের ওই এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির ক্যাম্প রয়েছে। তারাই সীমান্তের কাছাকাছি মাইন স্থাপন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর থেকে আরাকান আর্মি তাদের দেশের সীমান্ত এলাকা দখলে নিয়ে রেখেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আবারো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে ফিলিপাইন
সুপার টাইফুন ‘কালমেগির’ আঘাতে বিপর্যস্ত ফিলিপাইনে ফের আঘাত হানতে যাচ্ছে আরেকটি সুপার টাইফুন ‘ফাং-ওয়ং’। আজ রবিবার দিন শেষে এটি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির পূর্ব ও উত্তরাঞ্চল থেকে ইতিমধ্যে ১ লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফিলিপাইনের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারো ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে লুজন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত ৫ জারি করা হয়েছে। রাজধানী ম্যানিলা ও আশপাশের অঞ্চলগুলোতে ৩ নম্বর সংকেত বহাল রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১১৪, জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা
ঘূর্ণিঝড় মন্থা, বন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
সুপার টাইফুন ফাং-ওয়ং বর্তমানে ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (স্থিতিশীল বাতাস) এবং ২৩১ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো বাতাস নিয়ে এগোচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার রাতেই এটি মধ্য লুজনের অরোরা প্রদেশে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
ফিলিপাইন সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ৩০০ এর বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, লুজনের উপকূলের কাছে অবস্থিত ক্যাটানডুয়ানেস দ্বীপ রবিববার সকাল থেকেই ঝড়ের কবলে পড়েছে।
টাইফুন ফাং-ওয়ং, কালমেগি নামে একটি পূর্ববর্তী ঝড়ের কয়েকদিন পরেই দেশটিতে আঘাত হানতে যাচ্ছে। কালমেগির আঘাতে ফিলিপাইনে প্রায় ২০০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
পাগাসার একজন কর্মকর্তা স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ফিলিপাইনের পূর্বাঞ্চলে ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে শুরু করেছে।
যদিও দেশের বেশিরভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে কাতানডুয়ানেসসহ সরাসরি আঘাত হানতে পারে এমন এলাকাগুলো নিয়ে বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে।
ফিলিপাইন সরকার এই বছরের অন্যতম শক্তিশালী টাইফুন কালমেগির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।
গত সপ্তাহে টাইফুন কালমেগির আঘাতে ফিলিপাইনে কমপক্ষে ২০৪ জন মারা গেছে এবং ১০০ জনেরও বেশি এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
টাইফুন কালমেগির পর এবং আসন্ন ঝড়ের প্রস্তুতি হিসেবে ফিলিপাইন সরকার দেশজুড়ে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করেছে।
ফিলিপাইন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি, কারণ এটি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত, যেখানে এই ধরনের আবহাওয়া ব্যবস্থা তৈরি হয়।
প্রতি বছর এই অঞ্চলে প্রায় ২০টি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, যার অর্ধেক সরাসরি দেশটিকে প্রভাবিত করে থাকে।
ঢাকা/ফিরোজ