মৌসুমীকে বিয়ে করা কি ভুল ছিল ওমর সানীর
Published: 26th, June 2025 GMT
নব্বই দশকের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী। ভালোবেসে বিয়ে করেছেন জনপ্রিয় নায়িকা মৌসুমীকে। শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের মধ্যে বিয়ের হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকলেও, বিয়ে টিকে থাকার প্রবণতা কম। সেক্ষেত্রে এই জুটি ব্যতিক্রম। তিন দশকের বেশি সময়ের সংসার এই তারকার জুটির।
আলোচিত উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি শোতে উপস্থিত ছিলেন ওমর সানী। উপস্থাপকের প্রশ্ন ছিলো, অনেকে বলেন আপনি মৌসুমীকে বিয়ে করে ভুল করেছেন? আসলেই কি তাই? উত্তরে ওমর সানী বলেন, ‘‘ওরা বোকা। দিন শেষে তিরিশ বছর পরে একটা পুরুষ আর একটা মেয়ের কাছে এর চেয়ে বড় প্রাপ্য তো আর কিছু থাকে না। তথাকথিত মানুষেরা বলে যে, আমাদের বিয়ে টেকে না। বিশেষ করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মানুষ যারা আছে, টেলিভিশনের মানুষ যারা আছে এবং যারা শোবিজের সঙ্গে রিলেটেড তাদের বিয়ে একদমই টেকে না। কিন্তু সেদিক দিয়ে তো আমরা সফল। একটি কথাই শুধু বলবো আলহামদুলিল্লাহ।’’
ওমর সানী আরও বলেন,‘‘যখন আমার ছেলের দিকে তাকাই, মেয়ের দিকে তাকাই তখন আমার মনে হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কাজটিই আমি করেছি।’’
আরো পড়ুন:
তারকাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ
চাবুক খেতে খেতেই মৌসুমীর সঙ্গে প্রেম: ওমর সানী
উল্লেখ্য, ঢালিউডে ওমর সানীর অভিষেক ঘটে ‘চাঁদের আলো’ সিনেমার মাধ্যমে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রবাসে বাংলাদেশিদের মধ্যে বাড়ছে আত্মহনন প্রবণতা
দেশের বাজারে চাকরির সংকট কিংবা কম বেতন অথবা কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকাসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে দেশের মানুষ প্রতিনিয়ত প্রবাসী হচ্ছে। মূলত অর্থনৈতিক সচ্ছলতা এবং জীবনমান উন্নয়নের আশায় পাড়ি জমায় দূর প্রবাসে।
২০২৪–এর একটি পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশের প্রবাসীর সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখের বেশি, এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবেই আছে ৩০ লাখের বেশি প্রবাসী। বিশাল এ জনগোষ্ঠীর পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভর করে চলছে দেশের অর্থনীতি। তবে দুঃখের বিষয় বিশাল এই জনগোষ্ঠীর দুঃখের বাস্তব চিত্র কোথাও তুলে ধরা হয় না।
একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ কখনোই অকারণে আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেয় না, দেশের কেউ আত্মহত্যা করলে সেটার কারণ হয়তো পরিবার কিংবা আশপাশের মানুষ কিছুটা আন্দাজ করতে পারে। তবে প্রবাসে এই চিত্র ভিন্ন, এখানে নিজের খবর নিজেরই রাখার সময় হয় না। ফলে দেখা যায়, একই রুমে থেকেও রুমমেট কী কারণে আত্মহত্যা করছে, সেটি টেরও পাওয়া যায় না।
আমি নিজে একজন প্রবাসী হিসেবে প্রবাসে আত্মহত্যার কারণ হিসেবে কয়েকটি প্রধান সমস্যা চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি।
বৈবাহিক জীবনে অশান্তিপ্রবাসে যেসব পুরুষ আত্মহত্যা করেন তাঁদের বেশির ভাগ বিবাহিত। স্ত্রীকে দেশে রেখে অনেক প্রবাসী শ্রমিক বছরের পর বছর প্রবাসে থেকে যান। অনেক সময় ভিসা, আকামা না থাকায় কয়েক বছরেও যাওয়া হয় না দেশে, যার প্রভাব গিয়ে পড়ে বৈবাহিক জীবনে। ফলে সম্পর্কে দেখা দেয় ভাঙন। এখানে পারিবারিক অশান্তি, পরকিয়াসহ বিবিধ কারণ যুক্ত। এসব কারণে অনেক প্রবাসী আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নেন।
ঋণ শোধ করার চাপঅনেক প্রবাসী চক্রবৃদ্ধি সুদে অথবা উচ্চ সুদে লোন করে এখানে আসেন, তিনি সেই লোনের টাকা শোধ করতে পারেন না, পাওনাদার পরিবারকে নানা রকম চাপ দেয়। এরপর সেই চাপটা আবার ওই প্রবাসীর ওপরই ফিরে আসছে। এ চাপটা নিতে না পেরেই অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছেন।
নারী কর্মীদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকাদেশে থাকা দালাল নানা রকম চটকদার কথা বললেও বাস্তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নারী শ্রমিকদের জীবন এক বিভীষিকাময় জেল বললেই চলে। বিশেষত যাঁরা বাসাবাড়িতে কাজের ভিসায় আসেন, তাঁদের বেশির ভাগই নানা রকম সমস্যার মধ্যে পড়েন। কাজের কোনো নির্ধারিত সময় কিংবা ধরন কোনো কিছুরই ঠিক থাকে না। এরপরও অনেকের বেতন দেয় না ঠিকমতো। আবার নারী কর্মীদের কুকাজের প্রস্তাব করেন এমন সংখ্যাও কম না। এ ছাড়া শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের স্বীকারও হতে হয় অনেককে। এর বাইরেও দালালেরা নানা কাজের কথা বলে এখানে এনে দেহ ব্যবসার মতো কাজেও নারীদের কাজ করতে বাধ্য করে। এসব চতুর্মুখী সমস্যা মোকাবিলা করে বেঁচে থাকাটাই কষ্টের হয়ে যায়, ফলে অনেকে নিয়ে নেন আত্মহননের সিদ্ধান্ত।
প্রবাসে আত্মহনন বন্ধে সরকারকে হতে হবে প্রবাসীবান্ধব। সরকার চাইলে চালু করতে পারে প্রবাসী সহায়তা অ্যাপস, যেখানে প্রবাসীরা যেকোনো সমস্যা হলে সেটি মোবাইলের মাধ্যমে জানাতে পারেন এবং বাংলাদেশ দূতাবাস সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে যাঁরা অভিবাসনপ্রত্যাশী তাঁদের যেকোনো একটি কাজে দক্ষ করে সেই কাজের ভিসায় অনুমতি দেওয়া এবং প্রবাসযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনা। প্রবাসীর পরিবারের সদস্যদেরও খেয়াল রাখতে হবে প্রবাসীর মানসিক ব্যাপারে।
প্রবাসে আত্মহত্যা করা অনেক প্রবাসীর পরিবার মনে করে তাদের স্বজন হত্যার শিকার হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তারা লাশের শরীরে বিভিন্ন রকম জখমের দাগকে উদাহরণ হিসেবে দেখায়। আত্মহত্যাকে হত্যা দাবি করা লাশের অধিকাংশই থাকেন প্রবাসে গৃহপরিচারিকার কাজে। এসব ক্ষেত্রে উচিত দেশে লাশ এলে সেটি আবার পোস্টমর্টেম করা। প্রবাসী বাঁচলে বাড়বে রেমিট্যান্স, রেমিট্যান্স বাড়লে এগোবে দেশ।
মিনহাজ বিন মাহবুব
কাতারের দোহায় কর্মরত চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা
ই–মেইল: [email protected]