সাড়ে ৪ কোটি টাকার ভবন আছে, জনবলসংকটে সেবা মেলে নামমাত্র
Published: 28th, June 2025 GMT
প্রধান ফটকের পকেট দরজা খোলা। কিছুক্ষণ পরপর সেখান দিয়ে একজন-দুজন করে নারী ও শিশুরা আসছেন। কেউ আসছেন চিকিৎসকের খোঁজে, কেউ ওষুধ নিতে। আবার কেউ আসছেন শুধু পরামর্শ নিতে। কিন্তু হাসপাতাল ভবনে ঢুকে তাঁরা দেখছেন সব কক্ষই তালাবদ্ধ, চিকিৎসক ও ওষুধ কোনোটিই নেই। সেবা না পেয়ে হতাশ হয়ে আবার ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খড়রিয়ায় অবস্থিত পেড়লি ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে গত সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান করে এ চিত্র দেখা যায়। রোগীরা এসে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অফিস সহায়ক রফিকুল ইসলাম জানান, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা কর্মরত আছেন। আর একজন চিকিৎসক (সংযুক্তিতে) আছেন। এই তিনজন সপ্তাহে দুই দিন করে রোগী দেখেন। আজ যে চিকিৎসকের আসার কথা ছিল তিনি ছুটিতে আছেন, ফলে রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন।
পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে সেবা নিতে আসা কলেজশিক্ষার্থী মনোয়ারা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি খুলনাতে পড়াশোনা করি। ছুটিতে গ্রামে এসেছি। জরুরি প্রয়োজনে এই হাসপাতালে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখলাম চিকিৎসক নেই, ওষুধ নেই। দুঃখের বিষয় যে কষ্ট করে এসে আবার ফিরে যেতে হচ্ছে।’
খড়রিয়া এলাকার নাজমা বেগম নামের আরেক সেবাপ্রত্যাশী বলেন, ‘ডাক্তার দেহাতি আইছিলাম, রুম সব তালা মারা। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। মাঝেমধ্যি আইসে হাসপাতাল খোলা পাই, আবার মাঝেমধ্যি বন্ধও পাই। ওষুধেরও একই অবস্থা। তবু আসি। কারণ, এ জায়গায় বিনা টাকায় ডাক্তার দেহানো যায়, টুকটাক ওষুধ পাওয়া যায়। এতে আমাগের মতো গরিব মানুষির একটু উপকার হয়।’
পেড়লি ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রে সেবা নিতে এসে প্রায়ই ফিরে যান রোগীরা।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে