কাঁঠালগাছে ঝুলছিল যুবকের মরদেহ, দুই পা ছিল বাঁধা
Published: 28th, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে কাঁঠালগাছের মগডালে গলায় গামছা ও প্লাস্টিকের রশি পেঁচানো অবস্থায় মোহন (১৮) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের সময় তার দুই পা বাঁধা অবস্থায় দেখা গেছে, যা এলাকাজুড়ে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ওই যুবকের মৃত্যুকে রহস্যজনক মনে করছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার (২৮ জুন) ভোরে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের উত্তরপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির পাশে ডেকো গার্মেন্টসের পাশে ওই মরদেহ পাওয়া যায়। মোহন ওই এলাকার মোস্তফা মিয়ার ছেলে।
মোহনের পরিবার জানিয়েছে, মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে মোহন কিছুদিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। শুক্রবার (২৭ জুন) রাত ৯টার দিকে রাতের খাবার শেষে তিনি বাইরে বের হয়ে যান। এরপর আর ঘরে ফেরেননি। সারা রাত খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ভোরে এক প্রতিবেশী নারী বাড়ির পাশে কাঁঠাল গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান।
মোহনের বড় ভাই কাজল বলেছেন, “ঈদের আগে জেল থেকে ফেরার পর থেকেই ওর আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। মাঝে-মধ্যেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া করত। গত রাতে বের হয়েছিল, আর আসেনি। সকালে ভাবি এসে খবর দেয়, মোহন গাছে ঝুলছে।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোহন আগে মির সিরামিক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। চলতি বছরের রোজার ঈদের পর একবার মাদক মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এর পর থেকে মানসিক চাপ ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল বারিক জানিয়েছেন, মোহনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
ঢাকা/রফিক সরকার/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে র্যাগিংয়ের নামে ‘অমানবিক’ নির্যাতনের অভিযোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং ও অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ২০২৩-২৪ সেশনের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীদের দাবি, নির্যাতনের পর ভয় দেখিয়ে ঘটনাটি গোপন রাখতে বাধ্য করা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের পিয়ুস সাহা, প্রকাশ বিশ্বাস, মো. সাজ্জাদ, রিফাত হোসাইন, মো. শিহাব, কাজি ফারজানা জারিন অদ্রি, পুষ্পিতা লোদ, অন্নপূর্ণা দত্ত, তানজিলা মিতু ও মো. ফাহাদ ইসলাম।
আরো পড়ুন:
ইবিতে নবীনবরণ, র্যাগিং বন্ধে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন
গকসুর তফসিল ঘোষণা, নির্বাচন ২৫ সেপ্টেম্বর
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ৩০ জুলাই জুলফা ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে প্রথম র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। তবে এটি একদিনের নয়, বরং ধারাবাহিকভাবে চলে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা একদিনে ৩-৪ বার ক্লাসে ঢুকে নবীনদের হয়রানি করতেন। কথা না শুনলে ব্যাচ বয়কটের হুমকি দিতেন। কখনো টানা ২০-৪০ মিনিট দাঁড় করিয়ে রাখা হত, কথামতো আচরণ না করলে চড়-থাপ্পড়ও মারার চেষ্টা করতেন।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, তারা নবীনদের ‘তুই-তুকারি’ সম্বোধন করতেন এবং জোরপূর্বক সিনিয়রদের নাম-পরিচয় বলতে বাধ্য করতেন। এসব ঘটনা বাইরে জানালে বা অভিযোগ দিলে বিভাগের সুনাম নষ্ট হবে বলে ভয় দেখানো হত।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, র্যাগিং ও মানসিক নির্যাতনের ফলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ফাতেমা আক্তার নিশা নামে এক নবীন শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অসুস্থ সহপাঠীর সঙ্গে দেখা করতেও দেওয়া হয়নি তাদের এবং কর্তৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পিয়ুস সাহাকে প্রশ্ন করলে তিনি ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে কল কেটে দেন। অপর অভিযুক্ত প্রকাশ বিশ্বাসও উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাংবাদিককে বলেন, “যা পারেন করেন।”
এমনকি শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহানকে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চান এবং অপর এক সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ তোলেন।
সার্বিক বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “র্যাগিংয়ের বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত আছি। তবে সাংবাদিকদের নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে, তা জানতাম না। দ্রুত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী