গুগল প্লে ও অ্যাপ স্টোর থেকে ডিপসিক অ্যাপ সরাতে জার্মানির আহ্বান
Published: 28th, June 2025 GMT
গত জানুয়ারিতে উন্মুক্ত করার পরপরই প্রযুক্তি–দুনিয়ায় হইচই ফেলে দিয়েছে চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ডিপসিক চ্যাটবট। অনেক বাজার বিশ্লেষকের ধারণা, ডিপসিক এআইয়ের কার্যক্ষমতা এরই মধ্যে চ্যাটজিপিটি, জেমিনি ও ক্লডের মতো বিভিন্ন এআই মডেলকে পেছনে ফেলেছে। তবে ডিপসিক অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি সেগুলো গোপনে চীনে পাঠাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জার্মানির ডেটা প্রটেকশন কমিশনার মাইক ক্যাম্প। শুধু তা–ই নয়, গুগল প্লে ও অ্যাপ স্টোর থেকে ডিপসিক অ্যাপ দ্রুত মুছে ফেলতে গুগল ও অ্যাপলকে অনুরোধও করেছেন তিনি।
মাইক ক্যাম্প জানিয়েছেন, জার্মানির ডিপসিক ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনে পাঠানো বেআইনি। চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন তথ্যের ওপর ব্যাপক হারে প্রবেশাধিকার পেয়ে থাকে। এ ধরনের পরিস্থিতি ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ও মৌলিক অধিকারকে হুমকির মুখে ফেলে।
আরও পড়ুনচীনের ডিপসিক এআই মডেল নিয়ে কেন এত আলোচনা২৮ জানুয়ারি ২০২৫বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জার্মানির এ অভিযোগ ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়েই ডিপসিকের ওপর নিষেধাজ্ঞার পথ তৈরি করতে পারে। তথ্য অধিকার ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বরাবরই কঠোর অবস্থান নিয়ে থাকে। আর তাই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশের জাতীয় পর্যায়ের সুরক্ষা সংস্থা যদি কোনো অ্যাপকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে, তবে সেটি অন্যান্য দেশেও নিষিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর তাই জার্মানির নতুন এ পদক্ষেপের কারণে ইউরোপে বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে ডিপসিক অ্যাপ।
প্রসঙ্গত, উন্মুক্তের পরপরই ডিপসিক অ্যাপের বিরুদ্ধে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপনে সংগ্রহ করার অভিযোগ করেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এনআইএস)। সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত তথ্যগুলোর মাধ্যমে ডিপসিক নিজস্ব এআই মডেলকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে বলেও জানিয়েছিল সংস্থাটি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)