জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন, ক্যাফেটেরিয়ার মানোন্নয়ন ও ফুড কার্ড চালুর দাবি জানিয়েছে শাখা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

রবিবার (২৯ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে আয়োজিত এক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সংগঠনের জবি শাখার নেতাকর্মীরা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ চেয়ে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন। 

বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়নে অনেকটা এগিয়ে গেছে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জকসু নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ বা কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। এতে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থী একটি গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে, যা অগণতান্ত্রিক ও হতাশাজনক।

আরো পড়ুন:

মহানবী (সা.

)-কে নিয়ে জাবি শিক্ষার্থীর কটুক্তি, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

ঢাবিতে নবীনদের আবাসন সংকট নিরসনে ছাত্র শিবিরের ৪ দাবি

ছাত্র অধিকার পরিষদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— দ্রুত সময়সীমা নির্ধারণ করে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়ার পরিবেশ ও সেবার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ফুড কার্ড চালু এবং এর কার্যকর বাস্তবায়নে প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রায়হান রাব্বি বলেন, “জকসু নির্বাচন শুধু একটি দাবি নয়, এটি শিক্ষার্থীদের সাংবিধানিক অধিকার। প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ না থাকলে প্রশাসনের জবাবদিহিতা থাকে না। একইসঙ্গে খাদ্য সংকট ও অবকাঠামোগত দৈন্যচিত্রেও প্রশাসনের নির্লিপ্ততা প্রকট। আমরা আশা করি, শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক দাবির প্রতি প্রশাসন এখনই গুরুত্ব দেবে।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক কাজী আহাদ বলেন, “আমাদের দাবি অমূলক নয়, বরং দীর্ঘদিনের যৌক্তিক দাবি। এগুলোর বাস্তবায়ন না হলে আমরা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব এবং তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে প্রশাসনকেই নিতে হবে।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ