নিজের দুর্নীতির বিচার বন্ধে গাজা যুদ্ধকে কাজে লাগাচ্ছেন নেতানিয়াহু: ইসরায়েলি আইনপ্রণেতাদের অভিযোগ
Published: 30th, June 2025 GMT
ইসরায়েলের আইনসভা নেসেটের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি তাঁর দুর্নীতির মামলার অবসান ঘটাতে গাজা যুদ্ধকে ব্যবহার করছেন। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির নেসেট সদস্য নামা লাজিমি গতকাল রোববার টাইমস অব ইসরায়েলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘(নেতানিয়াহু) ইসরায়েল এবং আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎকে তাঁর মামলার সঙ্গে শর্তাধীন করে তুলেছেন।’
নামা লাজিমি বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে তিনি ‘তাঁর বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের বিনিময়ে একটি রাজনৈতিক মীমাংসা এবং যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে’ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার অযোগ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার আবারও নেতানিয়াহুকে দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইসরায়েলকে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর যে বিপুল অর্থ ব্যয় করে, তা তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এটি সহ্য করব না এবং কর্তৃপক্ষকে বলেন, নেতানিয়াহুকে ছেড়ে দিন।’
ডেমোক্রেটিক দলের আইনপ্রণেতা গিলাদ কারিভ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের পেছনে রয়েছে নেতানিয়াহু এবং তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত চক্র। তিনি এর নিন্দা জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আদালতের দণ্ড থেকে রক্ষা পেতে তিনি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জাতীয় নিরাপত্তা ও জিম্মিদের নিয়ে খেলছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস একাধিকবার বলেছে, চলমান যুদ্ধের অবসান, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে তারা গাজায় থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
তবে নেতানিয়াহু এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং গাজা উপত্যকায় তাঁর গণহত্যামূলক যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছেন। সেখানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
দুর্নীতি মামলা
ইয়েশ আতিদ পার্টির নেসেট সদস্য কারিন এলহারার সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহু ‘ইসরায়েলি জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’ কারণ, তিনি তাঁর আইনি ভাগ্যকে জিম্মি মুক্তি ও আঞ্চলিক স্বীকৃতি চুক্তির সঙ্গে জুড়ে নিয়েছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে স্বাধীন দেশের আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির আইনপ্রণেতা এবং নেসেটের সংবিধান, আইন ও বিচার কমিটির চেয়ারম্যান সিমচা রথম্যান বলেন, নেতানিয়াহুর মামলার অবসান চেয়ে ট্রাম্পের আহ্বান ‘অনুপযুক্ত।’
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতার মতো অভিযোগে মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নেতানিয়াহু মামলার ১০০০, ২০০০ এবং ৪০০০ নম্বর কেস–সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিচ্ছেন। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে অ্যাটর্নি জেনারেল এসব মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।
নেতানিয়াহুর বিচার শুরু হয় ২০২০ সালের ২৪ মে। তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম একজন দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রী, যিনি ফৌজদারি মামলায় আসামির আসনে বসেছেন।
নেতানিয়াহু যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধেও অভিযুক্ত। গাজায় বর্বরতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নিজের দুর্নীতির বিচার বন্ধে গাজা যুদ্ধকে কাজে লাগাচ্ছেন নেতানিয়াহু: ইসরায়েলি আইনপ্রণেতাদের অভিযোগ
ইসরায়েলের আইনসভা নেসেটের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি তাঁর দুর্নীতির মামলার অবসান ঘটাতে গাজা যুদ্ধকে ব্যবহার করছেন। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ডেমোক্রেটিক পার্টির নেসেট সদস্য নামা লাজিমি গতকাল রোববার টাইমস অব ইসরায়েলে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘(নেতানিয়াহু) ইসরায়েল এবং আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎকে তাঁর মামলার সঙ্গে শর্তাধীন করে তুলেছেন।’
নামা লাজিমি বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে তিনি ‘তাঁর বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগের বিনিময়ে একটি রাজনৈতিক মীমাংসা এবং যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে’ প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার অযোগ্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবার আবারও নেতানিয়াহুকে দুর্নীতি মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইসরায়েলকে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর যে বিপুল অর্থ ব্যয় করে, তা তুলে ধরে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এটি সহ্য করব না এবং কর্তৃপক্ষকে বলেন, নেতানিয়াহুকে ছেড়ে দিন।’
ডেমোক্রেটিক দলের আইনপ্রণেতা গিলাদ কারিভ বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের পেছনে রয়েছে নেতানিয়াহু এবং তাঁর দুর্নীতিগ্রস্ত চক্র। তিনি এর নিন্দা জানিয়ে বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আদালতের দণ্ড থেকে রক্ষা পেতে তিনি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা জাতীয় নিরাপত্তা ও জিম্মিদের নিয়ে খেলছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস একাধিকবার বলেছে, চলমান যুদ্ধের অবসান, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে তারা গাজায় থাকা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত।
তবে নেতানিয়াহু এসব শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং গাজা উপত্যকায় তাঁর গণহত্যামূলক যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছেন। সেখানে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
দুর্নীতি মামলা
ইয়েশ আতিদ পার্টির নেসেট সদস্য কারিন এলহারার সতর্ক করে বলেন, নেতানিয়াহু ‘ইসরায়েলি জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’ কারণ, তিনি তাঁর আইনি ভাগ্যকে জিম্মি মুক্তি ও আঞ্চলিক স্বীকৃতি চুক্তির সঙ্গে জুড়ে নিয়েছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ মার্কিন প্রেসিডেন্টকে স্বাধীন দেশের আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির আইনপ্রণেতা এবং নেসেটের সংবিধান, আইন ও বিচার কমিটির চেয়ারম্যান সিমচা রথম্যান বলেন, নেতানিয়াহুর মামলার অবসান চেয়ে ট্রাম্পের আহ্বান ‘অনুপযুক্ত।’
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ঘুষ, প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতার মতো অভিযোগে মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হতে পারে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নেতানিয়াহু মামলার ১০০০, ২০০০ এবং ৪০০০ নম্বর কেস–সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নিচ্ছেন। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে অ্যাটর্নি জেনারেল এসব মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।
নেতানিয়াহুর বিচার শুরু হয় ২০২০ সালের ২৪ মে। তিনি ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথম একজন দায়িত্বরত প্রধানমন্ত্রী, যিনি ফৌজদারি মামলায় আসামির আসনে বসেছেন।
নেতানিয়াহু যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধেও অভিযুক্ত। গাজায় বর্বরতার কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।