বর্তমানে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাই চাকরি থেকে শুরু করে আর্থসামাজিক সব ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। বিভিন্ন দেশের বড় প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলো এআইভিত্তিক চ্যাটবট ব্যবহার করায় বিভিন্ন খাতের অনেক পেশাজীবী এরই মধ্যে চাকরি হারিয়েছেন। চাকরি হারানোর ঝুঁকিতেও রয়েছেন অনেকে। চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, এআইয়ের উন্নতির কারণে ভবিষ্যতে গ্রাহকসেবা খাতের চাকরি পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। সম্প্রতি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ফেডারেল রিজার্ভ সম্মেলনে দেওয়া এক বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সম্মেলনে অল্টম্যান জানান, বর্তমানে যেসব কাজে মানুষের সরাসরি অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করা হয়, তার অনেকগুলোই এখন এআইয়ের মাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা সম্ভব। বিশেষ করে গ্রাহকসেবা এমন একটি খাত, যেখানে এআই ইতিমধ্যে মানুষের জায়গা নিতে শুরু করেছে। প্রশ্নের উত্তর জানানো থেকে শুরু করে জটিল সমস্যার সমাধান—সব কাজই এখন দক্ষতার সঙ্গে করতে পারছে এআই, যা আগের তুলনায় অনেক দ্রুত ও নির্ভুল। এতে করে চাকরির কিছু ধারা অচিরেই প্রাসঙ্গিকতা হারাতে পারে।

আরও পড়ুনএআইয়ের দেওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা ঝুঁকিপূর্ণ, সতর্ক করলেন স্বয়ং স্যাম অল্টম্যান২৮ জুন ২০২৫

স্বাস্থ্যসেবা খাতে এআইয়ের ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে স্যাম অল্টম্যান জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চিকিৎসকের চেয়েও ভালো রোগ নির্ণয় করতে পারছে। তবে এআই বিপুলসংখ্যক তথ্য বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হলেও মানবিক বিচক্ষণতা, সহানুভূতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে মানুষের গুরুত্ব এখনো অপরিসীম। আর তাই চিকিৎসার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে এখনো পুরোপুরি এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে রাজি নন তিনি। এ বিষয়ে স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘আমি চাই না আমার চিকিৎসা পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর হোক। সেখানে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের উপস্থিতি অপরিহার্য। এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভয়েস ক্লোনিং প্রতারণা সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন স্যাম অল্টম্যান।’

আরও পড়ুনচ্যাটজিপিটি নিয়ে স্যাম অল্টম্যান নিজেই কেন বিব্রত০৬ মে ২০২৪

সাম্প্রতিক সময়ে এআই-সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণের প্রশ্নে ওপেনএআইয়ের অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। আগে ওপেনএআই এআই নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ির পক্ষে থাকলেও এখন ট্রাম্প প্রশাসনের ‘এআই অ্যাকশন প্ল্যান’-এর প্রেক্ষাপটে উন্নয়ন ও পরিকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এআইয় র

এছাড়াও পড়ুন:

এআইয়ের মাধ্যমে আয় করার কৌশল শেখাতে নতুন বই

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্রুত উন্নত হচ্ছে। আর তাই দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ সহজে করার পাশাপাশি এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে বৈধভাবে আয়ও করছেন অনেকে। বাংলাদেশেও এআই প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। আর তাই এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে অর্থ আয়ের পদ্ধতিগুলো তুলে ধরতে নতুন বই লিখেছেন লেখক ও সাংবাদিক মোজাহেদুল ইসলাম। ‘এআই শিখুন, টাকা গুনুন’ শিরোনামের বইটি প্রকাশ করেছে সিসটেক পাবলিকেশনস। বইটির মুদ্রিত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা।

তিন ভাগে বিভক্ত বইটির প্রথম অংশে এআইয়ের মাধ্যমে আয় করার দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই অংশে আধেয় (কনটেন্ট) তৈরির পদ্ধতিসহ এআই প্রম্পট ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কীভাবে আয় করা যায়, তা জানা যাবে। দ্বিতীয় অংশে সাংবাদিকদের জন্য এআই টুল ব্যবহার করে অনলাইনে তথ্য খোঁজা, সূত্র যাচাই ও সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ রয়েছে। আর তৃতীয় অংশে এআইয়ের ঝুঁকি, ডিপফেক বা ভুয়া খবর চেনার কৌশল তুলে ধরা হয়েছে।

মোজাহেদুল ইসলাম জানান, বইটিতে এআইয়ের মাধ্যমে আয় করার অনেকগুলো উপায় সম্পর্কে জানা যাবে। ফলে যে কেউ চাইলে এআইয়ের মাধ্যমে ব্র্যান্ড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনার কাজ করতে পারবেন। যাঁরা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) নিয়ে কাজ করেন, তাঁরাও এআই-চালিত এসইও সার্ভিস দিয়ে আয় করতে পারবেন। চাইলে নিজস্ব জিপিটি বানিয়ে সেটি বিক্রি করেও আয় করা যাবে। একইভাবে এআই-চালিত অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, পেইড অ্যাডভারটাইজিং ম্যানেজমেন্ট এবং অপটিমাইজেশনও করা যাবে।

বর্তমানে এআই হয়ে উঠছে মানুষের নতুন সহকারী। নতুন এই সহকারীর মাধ্যমে আয় করার পাশাপাশি ভুয়া ছবি বা তথ্য শনাক্তসহ সাইবার নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন পরামর্শ পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে বইটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআইয়ের মাধ্যমে আয় করার কৌশল শেখাতে নতুন বই