সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪ হাজার শুন্য পদ পূরণে উদ্যোগ
Published: 29th, July 2025 GMT
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ২ হাজার ৩৮২টি পদে নিয়োগের লক্ষ্য সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ে (পিএসসি) চাহিদা প্রেরণ করেছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া মামলার কারণে আটকে থাকা ৩১ হাজার ৪৫৯টি পদ মামলা নিষ্পত্তি হওয়া মাত্র পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
আজ মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
দেশে শিক্ষার ভিত্তি বলে বিবেচিত প্রাথমিকে শিক্ষকের সংকট বেড়েই চলছে। প্রধান শিক্ষকের ৬৫ হাজারের বেশি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৩৪ হাজারের বেশি পদই শূন্য। অর্থাৎ প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। একই সঙ্গে সাড়ে ২৪ হাজারের মতো সহকারী শিক্ষকের পদও ফাঁকা। শিক্ষকের এই সংকটের প্রভাব পড়ছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রমেও। বিশেষ করে প্রান্তিক অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন যাবত পদ শুন্য থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এ সমস্যা নিরসনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বাড়ছে১৭ ঘণ্টা আগেমন্ত্রণালয় বলছে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন ৬৫ হাজার ৫৬৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে অনুমোদিত প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে ৬৫ হাজার ৫০২ টি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৩১ হাজার ৩৯৬ জন কর্মরত আছেন। শূন্য ৩৪ হাজার ১০৬ টি পদ। শুন্য পদগুলোর মধ্যে সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ ২ হাজার ৬৪৭ টি। সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদগুলোর ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করে বাকি ২ হাজার ৩৮২টি পদে সরাসরি নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরাসরি নিয়োগযোগ্য প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের জন্য শিগগির পিএসসি থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া জাতীয়করণ হওয়া শিক্ষকদের গ্রেডেশন সংক্রান্ত আপিল মামলা নিষ্পত্তি হওয়ামাত্র সহকারী শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি যোগ্য ৩১ হাজার ৪৫৯টি পদ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই নিয়োগ সম্পন্ন হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জনবলের ঘাটতি পূরণ হবে। পাশাপাশি, বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম আরও উন্নত ও গতিশীল হবে।
আরও পড়ুনদেশে ৫২ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক১৫ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ন য পদ য পদগ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫