রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। এই ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ নিচ্ছেন অনেকে। তাদের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের আত্মীয়-স্বজন।

বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী এই চিকিৎসা ক্যাম্প আজ সোমবার শুরু হয়েছে। চলবে এক সপ্তাহ। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এখান থেকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রবেশমুখে অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্পের সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। লোকজন ভেতরে যাচ্ছেন। কেউ এসেছেন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে, কেউবা যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের জায়গাটি দেখতে এসেছেন।

ক্যাম্পাসের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনে চলছে চিকিৎসা ক্যাম্পের কার্যক্রম। ভবনটির বারান্দায় মানুষের ভিড়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের নাম বারান্দায় বসে নিবন্ধন করছেন বিমানবাহিনীর একজন সদস্য। নিবন্ধন শেষে লোকজন বারান্দায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। ভবনটির কয়েকটি কক্ষে বিমানবাহিনীর চিকিৎসকেরা সেবা নিতে যাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছেন, পরামর্শ দিচ্ছেন।

আরও পড়ুনস্কুলে বিমান দুর্ঘটনা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া দরকার২৭ জুলাই ২০২৫

নাম নিবন্ধন করে ১০৮ নম্বর কক্ষের সামনে অপেক্ষা করছিলেন মাইলস্টোন স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আহমেদ আল ফাতাহ। সে জানায়, যে ভবনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়, সেটির দোতলায় ছিল তার শ্রেণিকক্ষ। স্কুল ছুটি হওয়ায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কয়েক মিনিট আগে সে শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে ক্যানটিনে চলে গিয়েছিল। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় বন্ধু শামীমকে হারিয়েছে সে।

নানার সঙ্গে বিদ্যালয়ে আসা এই শিক্ষার্থী বলে, ‘রাতে ঘুমানোর সময় ভয় পাই। দুঃস্বপ্ন দেখি। বন্ধু শামীমকে স্বপ্নে দেখি।’

অভিভাবকের সঙ্গে চিকিৎসাসেবা নিতে এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুহান হোসেন। শিশুটির কানে ব্যথা। তার কান ফুলে আছে। হাত ও মুখে পোড়া দাগ।

ক্যাম্পে চিকিৎসকেরা নুহানকে দেখে কিছু পরামর্শ ও ওষুধপত্র দিয়েছেন। প্রয়োজনে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হবে বলে জানান তাঁরা।

আরও পড়ুনউত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ আরেক শিশুর মৃত্যু৪ ঘণ্টা আগে

চিকিৎসা ক্যাম্পে সেবা দিচ্ছেন বিমানবাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার চিকিৎসক শিহাব আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মাইলস্টোনের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আর শিক্ষার্থীদের মধ্যে যারা ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলেন, তাদের অনেকেই আসছেন। ঘটনার পর থেকে রাতে ঘুম হচ্ছে না—এমন লোকজন আসছেন। আগুনে সামান্য দগ্ধ হওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছে। অনেকে ড্রেসিং করাচ্ছেন, অনেকে ওষুধ নিচ্ছেন। এ ছাড়া যাদের অনেক বেশি মানসিক সমস্যা পাওয়া যাবে, তাদের সিএমএইচে পাঠানো হবে। তবে এ পর্যন্ত কাউকে পাঠানো হয়নি।

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের জায়গা দেখতে ভিড় করেছেন অনেকে। রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে। ২৮ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ম ন ব ধ বস ত র ব ম নব হ ন র ম ইলস ট ন চ ক ৎসক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম

ঝালকাঠির রাজপুর উপজেলার প্রধান ডাকঘরের ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মিত হলেও এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। ভবনের ছাদের অবস্থা এতটাই খারপা যে, প্লাস্টার খসে পড়ছে এবং বৃষ্টির পানি ভেতরে ঢুকছে। ছাদের বিমের রডও বেরিয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন কাজ করতে হচ্ছে ডাকঘরটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। 

ডাকঘরের পোস্টমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, “ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ থেকে পানি পড়ছে, দ্বিতীয় তলার অবস্থা আরো ভয়াবহ। ভবনটিকে গণপূর্ত বিভাগ ‘ব্যবহারের অনুপোযোগী’ ঘোষণা করলেও এখনও ঝুঁকি নিয়েই কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে।” 

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, ভবনটির চারপাশে কোনো প্রাচীর না থাকায় এটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। ভবনের ভেতরে ও বাইরে শেওলা পড়েছে। পুরো ভবনটি বর্ষাকালে ভুতুড়ে পরিবেশ ধারণ করে। কম্পিউটার, স্ক্যানার, ফ্র্যাঙ্কিং মেশিনসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পানিতে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পোস্ট অফিসটিতে বর্তমানে মাত্র চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে একজন পোস্টম্যান প্রেষণে অন্যত্র কর্মরত থাকায় কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পর্যাপ্ত আসবাবপত্র না থাকায় এবং জনবল সংকটের কারণে সেবার মানে অবনতি ঘটেছে।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা, পাহাড় ধসের শঙ্কা

বিপৎসীমার ওপরে পটুয়াখালীর নদ-নদীর পানি, ৬ গ্রাম প্লাবিত

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকঘরের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে তারা অনেকেই ভেতরে প্রবেশ করতে ভয় পান। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এটি ধ্বংসপ্রায় ভবনে পরিণত হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পোস্ট বক্সটিও। রাজাপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় প্রধান ডাকঘরটির এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেন না তারা। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটির সংস্কার ও জনবল নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে ঝালকাঠির পোস্ট অফিস পরিদর্শক আবুল ফয়েজ বলেন, “উপজেলার প্রধান ডাকঘরের দুরবস্থার বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জনবল সংকট ও অবকাঠামোগত সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য আমরা আবেদন করেছি।” 

বরিশাল অঞ্চলের ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মন্জুরুল আলম বলেন, “শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া এ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। ভবনের উন্নয়ন প্রসঙ্গে শিগগিরি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামের রেলওয়ের ‘হাতির বাংলো’ নিয়ে কেন এত মাতামাতি
  • ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম
  • ডেমরায় হেলে পড়েছে ৬ তলা ভবন
  • ডেমরায় ৬ তলা ভবন হেলে পড়েছে ৭ তলা ভবনে : আতঙ্ক