সরকারি চাল নিজের গুদামে অবৈধভাবে মজুদ রাখায় নেত্রকোনার কেন্দুয়া পৌর বিএনপির সভাপতি মো. খোকন আহমেদের (৫০) বিরুদ্ধে মামলা আছে। পুলিশের খাতায় তিনি পলাতক আসামি। অথচ, ৫ আগস্টের বিজয় র‍্যালিতে তাকে দেখা গেছে। এ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

খোকন আহমেদ কেন্দুয়া পৌরসভা ছাড়াও আঠারো বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকায় মেসার্স নাহার ট্রেডার্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে তার।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সরকারি মামলার আসামি হলেও খোকন আহমেদ বিএনপি নেতা হওয়ায় পুলিশ তাকে ধরছে না। তিনি অবাধে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছেন। পুলিশ দেখেও না দেখার ভান করছে। 

আরো পড়ুন:

মসজিদের টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ, বিএনপি নেতাকে শোকজ

ঐক্যবদ্ধ থাকুন, মুখ দেখাদেখি যেন বন্ধ না হয়: তারেক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে খোকন আহমেদকে গতকাল ৫ আগস্টের বিজয় র‍্যালিতে সামনের সারিতে ব্যানার হাতে দেখা গেছে। ওই মিছিলে তার কাছাকাছি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ড.

রফিকুল ইসলাম হিলালী।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খোকন আহমেদ বলেছেন, “গতকাল বিজয় র‍্যালিতে ছিলাম। আজও জেলায় আছি।”  

আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে কিছুটা নিরব থেকে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে পরে জানাব।”

কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেছেন, “খোকন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা আছে।  তিনি জামিন নেননি, পলাতক আছেন। তিনি গতকালের র‍্যালিতে ছিলেন, এটা আমাদের চোখে পড়েনি।” 

গত ২০ জুন রাত ৮টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কেন্দুয়া পৌর শহরের আঠারো বাড়ি এলাকায় খোকনের মালিকানাধীন মেসার্স নাহার ট্রেডার্সে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। এ সময় ওই গুদামে অবৈধভাবে মজুদ করা ৩০৪ বস্তা আতপ চাল জব্দ করা হয়, যার ওজন প্রায় ১৩ হাজার ৮৫৪ কেজি। এসব চালের বাজারমূল্য আনুমানিক ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৬০ টাকা। অভিযানের সময় খোকন আহমেদকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করে ডাকা হলেও তিনি উপস্থিত হননি। একপর্যায়ে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। 

এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ১ জুলাই খোকনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা হয়। তারপর থেকে তিনি এলাকায় ঘোরাঘুরি করলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেনি। 

ঢাকা/ইবাদ/রফিক 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আস ম এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের খায়রুল বাশার আবার তিন দিন রিমান্ডে

প্রতারণার আরেকটি মামলায় ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’–এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের আবার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার বিকেলে খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে গুলশান থানা-পুলিশ। আবেদনে বলা হয়, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাঠানোর নামে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত রয়েছেন, তা জানার জন্য বাশারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত খায়রুল বাশারকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

গত ১৫ জুলাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় খায়রুল বাশারকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগের দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে বাশারকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ মে গুলশান থানায় সিআইডি মামলাটি করে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বাশারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, সংস্থাটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।

সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তার খায়রুল বাশার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন এবং সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন করে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা ও অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ