দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহারের পরও ঘরে থাকা ওয়াই-ফাইয়ের ধীরগতির কারণে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। ফলে ভালোভাবে ভিডিও দেখতে না পারা, ভিডিও কলের সময় বাফারিং হওয়াসহ বিভিন্ন কাজ করতে সমস্যা হয়। বেশ কিছু কৌশল ব্যবহার করে চাইলেই ওয়াই-ফাইয়ের গতি বাড়ানো যায়। ওয়াই-ফাইয়ের গতি বাড়ানোর সাত উপায় জেনে নিন।

১. রাউটারের অবস্থান

রাউটার কোথায় রাখা হয়েছে, সেটির ওপরই নির্ভর করে ওয়াই-ফাইয়ের নেটওয়ার্ক কতটা শক্তিশালী হবে। অনেকেই রাউটার ঘরের এক কোণে, নিচু জায়গায় বা ভারী আসবাবের আড়ালে রাখেন। এতে নেটওয়ার্কের সংকেত বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাই রাউটার ঘরের মাঝামাঝি এবং কিছুটা উঁচু স্থানে রাখতে হবে।

২.

সংকেতে বাধা সৃষ্টি করা যন্ত্রপাতি এড়িয়ে চলা

ব্লুটুথ স্পিকার, ওয়্যারলেস ক্যামেরা বা রেডিও তরঙ্গনির্ভর অন্যান্য যন্ত্র রাউটারের সংকেতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে রাউটারকে এসব যন্ত্র থেকে দূরে রাখতে হবে। পাশাপাশি যদি আশপাশে একাধিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকে, তবে রাউটারের চ্যানেল ম্যানুয়ালি পরিবর্তন করে কম ফ্রিকোয়েন্সি নির্বাচন করতে হবে।

৩. নতুন প্রযুক্তি–সমর্থিত রাউটারের ব্যবহার

ডুয়াল ব্যান্ড বা ট্রাই ব্যান্ড–সমর্থিত নতুন প্রজন্মের ওয়াই-ফাই ৬ বা ওয়াই-ফাই ৬ই প্রযুক্তির রাউটারের মাধ্যমে দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। তাই ঘরে থাকা রাউটার এসব প্রযুক্তি সমর্থন না করলে সেটি পরিবর্তন করতে হবে।

৪. রাউটারের সফটওয়্যার হালনাগাদ

রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত হালনাগাদ না করলে নেটওয়ার্কের গতি কমে যায়। রাউটারের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য নিয়মিত সফটওয়্যার হালনাগাদ করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই নিয়মিত রাউটারের সফটওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে।

৫. রেঞ্জ এক্সটেন্ডার বা মেশ ব্যবস্থা ব্যবহার

বড় বাড়িতে একটি রাউটার দিয়ে সব স্থানে সমান গতির সিগন্যাল পাওয়া যায় না। এ ছাড়া একাধিক দেয়ালের কারণেও ওয়াই-ফাইয়ের গতি কমে যায়। এ সমস্যা সমাধানে রেঞ্জ এক্সটেন্ডার বা মেশ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হবে। এক্সটেন্ডারগুলো মূলত রাউটার থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করে আবার পাঠিয়ে থাকে। এরপরও সমস্যার সমাধান না হলে রাউটার হালনাগাদ বা পরিবর্তন করতে হবে।

৬. নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা পরীক্ষা

অনেক সময় অনুমতি ছাড়া অন্য কেউ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে ইন্টারনেট ধীরগতির হয়ে পড়ে। এ সমস্যা সমাধানে রাউটারে শক্তিশালী ও জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীর সংখ্যা জানার পাশাপাশি ডব্লিউপিএ-টু বা ডব্লিউপিএ-থ্রি এনক্রিপশন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

৭. বেশি ডেটা ব্যবহার করা যন্ত্রে তারযুক্ত সংযোগ ব্যবহার

অনেকেই স্মার্ট টেলিভিশনের বড় পর্দায় নিয়মিত ইউটিউব ভিডিও দেখেন। গেমিং কনসোলের মাধ্যমে অনলাইনে গেমও খেলেন অনেকে। এসব যন্ত্র বেশি ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার করে থাকে। ফলে ওয়াই-ফাইয়ের গতি কম হলে সমস্যায় পড়তে হয়। ডেস্কটপ কম্পিউটার, গেমিং কনসোল বা স্মার্ট টেলিভিশনের মতো যন্ত্রে ওয়াই-ফাইয়ের পরিবর্তে সরাসরি ইথারনেট তারের সংযোগ দিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। এতে রাউটারের ওপর চাপ কমে এবং অন্যান্য যন্ত্রেও দ্রুতগতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।

সূত্র: নিউজ১৮

আরও পড়ুনওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের সিগন্যাল কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে১৮ অক্টোবর ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন টওয় র ক র ব যবহ র কর র উট র র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

এআই টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করল গুগল

নিজেদের তৈরি ‘বিগ স্লিপ’ এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) টুল ব্যবহার করে প্রথমবারের মতো বিভিন্ন ওপেন সোর্স সফটওয়্যারে থাকা ২০টি নিরাপত্তা ত্রুটি সফলভাবে শনাক্ত করেছে গুগল। প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তাবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিদার অ্যাডকিনস জানিয়েছেন, গুগলের তৈরি বিগ স্লিপ এআই টুলটি মূলত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল (এলএলএম)–নির্ভর একটি স্বয়ংক্রিয় ত্রুটি শনাক্তকারী ব্যবস্থা। প্রথম দফায় টুলটির মাধ্যমে বিভিন্ন ওপেন সোর্স সফটওয়্যারে থাকা ত্রুটির খোঁজ পাওয়া গেছে। তবে এখনো ত্রুটিগুলোর সমাধান না হওয়ায় বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

গুগলের তথ্যমতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সফটওয়্যারে বাস্তব ত্রুটি শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি প্রযুক্তির অগ্রগতিতে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এ বিষয়ে গুগলের মুখপাত্র কিম্বারলি সামরা এক বিবৃতিতে জানান, প্রতিটি ত্রুটি মানুষের সহায়তা ছাড়াই এআই টুল নিজেই শনাক্ত করেছে। তবে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার আগে গুগলের এক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ত্রুটিগুলো যাচাই করে দেখেছেন, যাতে প্রতিবেদনটি যথার্থ হয়। গুগলের প্রকৌশল বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রয়্যাল হ্যানসেন এক্সে লিখেছেন, ‘এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করার এই চেষ্টা এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।’

গুগলের তৈরি বিগ স্লিপ ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি এআই টুল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যারের ত্রুটি শনাক্ত করতে পারে, যার মধ্যে রানসিবিল ও এক্সবা অন্যতম। তবে এসব টুল এখনো পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠেনি। এমনকি গুগলের বিগ স্লিপেও নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্তের পর তা যাচাইয়ের জন্য একজন বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে হয়।

এআই টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্তে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ডেভেলপার অভিযোগ করেছেন, অনেক সময় এআই টুলগুলো থেকে যেসব ত্রুটির কথা বলা হয়, সেগুলোর সব কটি সত্য নয়। এ বিষয়ে ডেভেলপার ভ্লাদ আয়োনেস্কু বলেন, ‘এটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক রিপোর্ট প্রথম দেখায় খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, কিন্তু বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেগুলোর পেছনে আসলে কোনো বাস্তব ত্রুটি নেই।’

সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এআই টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ত্রুটি শনাক্ত করল গুগল