ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার সাম্প্রতিক হুমকির তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে কঠোর জবাব দেওয়া হবে। শুরুটা হবে ভারতের একদম গভীরে হামলার মধ্য দিয়ে।

যুক্তরাজ্যের সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ হঁশিয়ারি দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে’ এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন করা হয়। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন আইএসপিআরের পরিচালক।

ভারত আবার হামলা করলে পাকিস্তান কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে—এমন প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতের বোঝা উচিত, পাকিস্তান তাদের যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে সক্ষম।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ভারতের আরও গভীরে হামলা করতে পারে পাকিস্তান। তিনি বলেন, ‘এবার আমরা ভারতের পূর্ব দিক থেকে হামলা শুরু করব। তাদের (ভারতকে) এটা বুঝতে হবে, তাদের যেকোনো স্থানে হামলা হতে পারে।’

সম্প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে যেভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য ও অভিযোগ আনা হচ্ছে, সেই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই  হুঁশিয়ারি এল। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এটিকে সবচেয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত এপ্রিলে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত ২৬ নিহত হন। ওই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। তবে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এর জেরে মে মাসের শুরুতে পাকিস্তানে হামলা করে বসে ভারত। এরপর দুই দেশ চার দিনব্যাপী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
প্রথমে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। পাকিস্তানও জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ভারতে। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন বুনইয়ান–উন–মারসুস’। অভিযানে ভারতের একাধিক অঞ্চলে বিভিন্ন সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। ৮৭ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শেষ হয়।

পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চার দিনের সফরে মালয়েশিয়া গেলেন সেনাপ্রধান

১৪তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মি চিফস্ কনফারেন্সে যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়ায় গেলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এশিয়ার দেশটির উদ্দেশে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আরো পড়ুন:

রাষ্ট্রদূত হলেন দুই সেনা কর্মকর্তা

খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের স‌ঙ্গে সেনাবা‌হিনীর গুলি বিনিময়, অস্ত্র উদ্ধার

আইএসপিআর জানায়, সোমবার ‘১৪তম ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মি চিফস্ কনফারেন্স (IPACC)-২০২৫’ এ যোগ দিতে চার দিনের সরকারি সফরে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন সেনাপ্রধান। মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ড ও মালয়েশিয়ান ডিফেন্স ফোর্সের যৌথ আয়োজনে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থলবাহিনীর সেনাপ্রধানরা উপস্থিত থেকে মৈত্রী ও সহযোগিতা জোরদার, অভিন্ন চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলায় মতবিনিময় এবং আঞ্চলিক সংকটে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করবেন।

সেনাপ্রধানের এই সফরের মধ্যদিয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশসমূহ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হওয়ার পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সফর শেষে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর সেনাপ্রধানের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চার দিনের সফরে মালয়েশিয়ায় গেলেন সেনাপ্রধান
  • চার দিনের সফরে মালয়েশিয়া গেলেন সেনাপ্রধান